Close Menu
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

What's Hot

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023
Facebook X (Twitter) Instagram
Saturday, October 18
Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest Vimeo
Subscribe Button Button
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us
iBankHubiBankHub
Home » যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা
Savings

যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা

iBankHub EditorBy iBankHub EditorDecember 10, 2022Updated:July 9, 20232 Comments12 Mins Read
Share Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Reddit Telegram Email
যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা ইসলামী অর্থনীতির Update
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

যাকাত

নিরাপত্তা মানবজীবনের জন্য অপরিহার্য। নিরাপত্তা না থাকলে কোনো সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে উঠতে ও বিকাশ লোভ করতে পারে না। ইসলাম তাই নিরাপত্তা চায়। ইসলামের অর্থই হচ্ছে শান্তি, অর্থাৎ ইসলাম এমন এক জীবন ব্যবস্থা যেখানে নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

ইসলাম নিরাপত্তা চায় বলেই সে যেসব উপাদান নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করতে পারে যেমন মদ, জুয়া, অশ্লীলতা ইত্যাদিকে হারাম করেছে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

এ জন্যই ইসলামী দন্ডবিধিতে পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির (ফাসাদ ফিল আরদ) জন্য প্রয়োজনে হত্যার বিধান রাখা হয়েছে ।

(সূরা মায়েদা: আয়াত ৩৩)

অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সামাজিক নিরাপত্তার একটি প্রধান অংশ। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। পরিভাষার দিক থেকে সামাজিক নিরাপত্তার অর্থ হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক প্রয়োজন পূরণের নিরাপত্তা দান।

তাই ইসলাম অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলাম এমন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজেই চেষ্টা-সাধনার মাধ্যমে তার জীবিকা অর্জন করতে পারে । আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেনঃ

তোমাদের জন্য ব্যবসাকে হালাল করা হয়েছে।

(সূরা বাকারা: আয়াত ২৭৫)

কুরআন ও হাদিসে বহু স্থানে মানুষকে কাজ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। যারা কোনো কারণে নিজেদের প্রয়োজনীয় জীবন ধারণের ব্যবস্থা করতে পারে না তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার দায়িত্ব প্রথমত, তাদের আত্মীয়-স্বজনের ও স্থানীয় সমাজের।

ইসলাম সমাজবদ্ধ জীবনে বিশ্বাস করে এবং সমাজের প্রত্যেকের একে-অপরের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদের ঘোষণাঃ

এবং নিকটাত্মীয়, মিসকীন ও নিঃস্ব পথিককে তার হক দাও।

(সূরা বনী ইসরাইল: আয়াত ২৬)

অতএব নিকটাত্মীয়কে এবং মিসকীন ও নিঃস্ব পথিককে তার হক দাও।

(সূরা আর রূম: আয়াত ৩৮)

পূর্ব ও পশ্চিমের দিক মুখ করে দাঁড়ানো কোনো প্রকৃত কল্যাণের কাজ নয়। বরং প্রকৃত কল্যাণের কাজ করল তারা যারা আল্লাহ, পরকাল, কিতাব, ফিরিশতা ও নবীদের প্রতি ঈমান আনল এবং ধনমাল আল্লাহর ভালোবাসায় নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকীন, নিঃস্ব পথিক, দরিদ্র, সাহায্যপ্রার্থী ও ক্রীতদাস মুক্তির জন্য দান করল এবং নামাজ কায়েম ও যাকাত প্রদান করল।

(সূরা বাকারা: আয়াত ১৭৭)

ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বা সামাজিক প্রচেষ্টা অপ্রতুলতার কারণে যারা অভাবগ্রস্ত থাকবে বা দূরবস্থার সম্মুখীন হবে তাদের অসুবিধা দূর করা এবং তাদের পুনর্বাসন করার দায়িত্ব ইসলামী রাষ্ট্রের সরকারের। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সমগ্র সৃষ্টিই আল্লাহর পরিবার (বুখারী)। এ পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব আল্লাহর পক্ষ থেকে খিলাফতের দায়িত্ব হিসেবে ইসলামী সরকারের। এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদের শিক্ষা নিম্নরূপঃ

পৃথিবীতে চলৎশক্তিসম্পন্ন এমন কোনো জীব নেই যার রিযিক দেয়ার দায়িত্ব আল্লাহর নয়।

(সূরা হুদ: আয়াত ৬)

তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রাসূলের প্রতি এবং ব্যয় কর সেই ধন-সম্পদ থেকে যাতে তিনি তোমাদের খলিফা নিযুক্ত করেছেন।

(সূরা আল হাদীদ: আয়াত ৭)

এ পর্যায়ে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা হচ্ছেঃ জেনে রাখো! তোমাদের সকলেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে (বুখারী ও মুসলিম)। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

যে লোক ধন-মাল রেখে মরে যাবে, তা তার উত্তরাধিকারীরা পাবে এবং যে লোক অসহায় সন্তানাদি ও পরিবার রেখে যাবে তার দায়িত্ব আমাদের উপর বর্তাবে (বুখারী ও মুসলিম)।

উপরের আলোচনা হতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, ইসলাম তিন পর্যায়ে সামাজিক বিশেষ করে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। প্রথমত, ব্যক্তির নিজস্ব প্রচেষ্টা; দ্বিতীয়ত, সামাজিক ব্যবস্থা এবং তৃতীয়ত, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ।

ইসলামের সামগ্রিক ব্যবস্থা (তার শিক্ষা ও আইন ব্যবস্থাসহ) কার্যকর করা সম্ভব হলে কোনো মুসলিম সমাজেই কোনো ধরনের নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিতে পারে না।

ইসলামী সমাজে সামাজিক নিরাপত্তা বলতে কি বোঝাবে? এ প্রসঙ্গে কুরআনের ঘোষণা :

আমরা বনী আদমকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছি।

(সূরা বনী ইসরাইল)

এ প্রসঙ্গে রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা হচ্ছেঃ তোমাদের জান, তোমাদের মাল ও তোমাদের সম্মান পবিত্র ও সম্মানার্হ (বিদায় হজ্জের ভাষণ: সিহাহ সিত্তাহ)। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

কাজেই ইসলামী সমাজে এমন এক নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকতে হবে যেখানে জান-মালই শুধু বিপদমুক্ত হবে না বরং প্রত্যেক মানুষ ইজ্জতের সঙ্গে বাস করতে পারবে। এ জন্য ইসলামের ফকীহগণ খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ও বিবাহের ব্যবস্থাকে মৌলিক প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ইবন হাজম লিখেছেনঃ প্রত্যেক এলাকার ধনবান লোকদের উপর সেখানকার দরিদ্র জনগণের প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

শাসক তাদেরকে এ কাজ করতে বাধ্য করবেন এবং যাকাত বাবদ প্রাপ্ত সম্পদ এ দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট না হলে ধনীদের নিকট হতে আরো সম্পদ সংগ্রহ করে তাদের অপরিহার্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, শীত-গ্রীষ্মের পোশাক, বৃষ্টি, রৌদ্র ও পথিকদের বৃষ্টি হতে রক্ষাকারী একটি ঘরের ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে (আল মিলাল ওয়ান নিহাল)।

জানের নিরাপত্তা ঘোষণার মধ্যেই চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আর শিক্ষা তো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই সবার উপর ফরজ করেছেন । ‘প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ ও নারীর উপর শিক্ষা ফরজ’ (আল হাদিস)।

এ আলোচনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিখ্যাত আলিম ও ফকীহ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম লিখেছেন, পুরুষ ও নারীর যথাসময়ে বিবাহ হওয়া এ পর্যায়েরই মৌলিক প্রয়োজন (ইসলামের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও বীমা, ১ম সংস্করণ, পৃ-৯৩)।

সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

এ পর্যায়ে ইসলামের সবচেয়ে প্রধান ও মশহুর ব্যবস্থা হচ্ছে যাকাত । যাকাত কোনো সাধারণ কর বা শুল্ক নয় । সব কাজে যাকাতকে ব্যবহার করা যায় না। যাকাত হচ্ছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার প্রধান ভিত্তি।

যাকাতের মাধ্যমে সমাজকে দারিদ্র্য থেকে ইসলাম উদ্ধার করতে চায় । যাকাতের হকদার হচ্ছে যারা কর্মক্ষমহীন এবং যারা কর্মক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও উপার্জনহীন অথবা পর্যাপ্ত পরিমাণ উপার্জন করতে পারছে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেছেনঃ

যাকাত পাবে ফকীর, মিসকীন, যাকাত আদায়কারী কর্মচারী, যাদের ইসলামের প্রতি আকর্ষণ করা দরকার, ক্রীতদাস, ঋণগ্রস্ত এবং নিঃস্ব পথিক। আল্লাহর পথে সাধারণ জনকল্যাণমূলক কাজেও এ অর্থ খরচ করা হবে।

(সূরা তওবা: আয়াত ৬০)

যাকাতের মাধ্যমে সব অভাবগ্রস্ত, দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের অভাব দূর করা ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করা সম্ভব। যাকাত অভাবগ্রস্তকে পর্যাপ্ত পরিমাণ দিতে হবে যাতে সে আর অভাবগ্রস্ত না থাকে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

এ পর্যায়ে কোনো কোনো ফকীহ মত প্রকাশ করেছেন যে, যাকাতের যে গ্রহীতা তাকে এক বছরের প্রয়োজন পূর্ণ করে দিতে হবে। কেউ কেউ সারা জীবনের প্রয়োজন পূর্ণ করে দেয়ার কথা বলেছেন। হযরত ওমর ফারুক (রা.)-এর মত হচ্ছে যখন দেবেই, তখন সচ্ছল বানিয়ে দাও।

যাকাতের মাধ্যমে দরিদ্র জনতার পুনর্বাসন সম্পূর্ণভাবে সম্ভব। সারা মুসলিম বিশ্বের দেশভিত্তিক বা সামগ্রিক আলোচনা এখানে সম্ভব নয়। সব তথ্যও আমাদের কাছে নেই। এখানে কেবল বাংলাদেশের আদায়যোগ্য যাকাতের একটি নিম্নতম হিসাব পেশ করা হচ্ছে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

বাংলাদেশে তিন কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়। এর অন্তত ১ কোটি টন সচ্ছল কৃষকগণ উৎপাদন করে থাকেন। যদি এই ১ কোটি টনের উপর অর্ধ ওশর (৫%) আদায় করা হয় তার পরিমাণ হবে ৫ লক্ষ টন খাদ্যশস্য। যার নীচের পক্ষে মূল্য হচ্ছে ২,৫০০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে পাট, চা, রবিশস্য, তামাক ও অন্যান্য ফসল যার যাকাতযোগ্য পরিমাণ পাঁচ হাজার কোটি টাকা হবে। এতে শতকরা ৫ ভাগ হারে ২৫০ কোটি টাকার যাকাত আদায় হতে পারে।এ হিসাবের জন্য আমরা ধরে নিচ্ছি যে, সব জমিতেই সেচ দেয়া হচ্ছে এবং এ জন্য জমির মালিকগণ শতকরা ১০ ভাগ ওশর না দিয়ে শতকরা ৫ ভাগ অর্ধ ওশর দিচ্ছে।

তেমনিভাবে যাকাতযোগ্য ব্যবসায়ী পণ্য, নগদ অর্থ এবং স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার হতে যথাক্রমে ১,০০০ কোটি, ১,০০০ কোটি ও ৫০০ কোটি টাকার যাকাত আদায় হতে পারে। এভাবে অন্যান্য বনজ সম্পদ, পশু সম্পদ এবং সমুদ্র হতে প্রাপ্ত মাছ ইত্যাদি বাদ দিলেও অন্তত ৫,২৫০ কোটি টাকা যাকাত আদায় হতে পারে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

নিম্নে এ সম্পর্কে একটি ছক দেয়া হলো:

যাকাতযোগ্য পণ্য, সম্পদ ও অর্থের হিসাব (২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী)

সম্পদযাকাতযোগ্য পরিমাণ/ মূল্য/ অর্থযাকাতের পরিমাণ ও মূল্য (টাকায়)মন্তব্য
১. খাদ্যশস্য

২. অন্যান্য শস্য
৩. ব্যবসায়ী/শিল্প পণ্য

৪. নগদ অর্থ (ব্যাংক সহ)
৫. স্বর্ণ/ স্বর্ণালঙ্কার
১ কোটি টন

৫,০০০ কোটি টাকা
৪০,০০০ কোটি টাকা

৪০,০০০ কোটি টাকা

১,০০০ কোটি টাকা
৫ লক্ষ টন (মূল্য ২,৫০০ কোটি টাকা)
২৫০ কোটি টাকা
১,০০০ কোটি টাকা

১,০০০ কোটি টাকা

৫০০ কোটি টাকা
শতকরা ৫ ভাগের মূল্য
ঐ
শতকরা ২.৫ ভাগ হারে
ঐ

ঐ

যাকাতের এ পরিমাণ অর্থ যদি প্রতি বছর কেবল দরিদ্র জনতাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষাদান, কর্মে নিয়োগ ও পুনর্বাসনে ব্যয় করা হয় তবে কয়েক বছরেই বাংলাদেশে ছিন্নমূল বলে কিছু থাকবে না। অবশ্য যাকাতের অর্থ উন্নয়ন ও সাধারণ প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করা যায় না। সে জন্য অন্য কর ও শুল্কও আদায় করতে হবে।

যাকাতের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সরকারের দায়িত্ব। এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদে রয়েছেঃ

যখন আমরা তাদেরকে ক্ষমতা দান করি, তখন তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত আদায করে, সৎকাজের আদেশ করে এবং মন্দ কাজ, হতে নিষেধ করে।

(সূরা হাজ্জ: আয়াত ৪১)

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ আদেশ করেছেনঃ

তাদের মাল থেকে যাকাত আদায় করুন।

(সূরা তওবা: আয়াত ১০৩)

যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা

যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা
যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা

আয়াতে ‘সাদাকাত’ শব্দের অর্থ ফকীহগণ যাকাত করেছেন, কেননা আয়াতে ‘খুজ’ ক্রিয়াটি আদেশবাচকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে যা কেবল বাধ্যতামূলক কাজের জন্য প্রযোজ্য। আর আমরা জানি যে, একমাত্র বাধ্যতামূলক সাদাকা হচ্ছে যাকাত (ইউসুফ আল কারযাভী, ইসলামের যাকাত বিধান, পৃ. ৩১-৩৭, ২য় খণ্ড)।

সামাজিক নিরাপত্তা বিধানের দ্বিতীয় প্রধান উপায় হবে ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুল মালের অন্যান্য সম্পদ – যদি যাকাত, স্থানীয় সমাজ ও আত্মীয়-স্বজনের সাহায্য সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে অপর্যাপ্ত হয়। বায়তুল মালের পরিচয় প্রসঙ্গে বলা হয়েছেঃ বায়তুল মালের সম্পদ সাধারণ মুসলমানের সম্পদ। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

বায়তুল মালের এ সম্পদ হতে কেবল মুসলমানই নয়, অমুসলিমদেরও সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। হয়রত ওমর ফারুকের খিলাফতকালে ইরাকের হিরাবাসী খৃস্টানদের সঙ্গে যে চুক্তি হয় তাতে লেখা ছিলঃ

যে বৃদ্ধ কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে কিংবা কোনো বিপদে পড়ে গেছে অথবা পুর্বে ধনী ছিল এবং স্বচ্ছল ছিল এখন দরিদ্র হয়ে পড়েছে আর সমাজের লোকেরা তাকে ভিক্ষা দিতে শুরু করেছে এরূপ ব্যক্তির উপর, সে যতদিন ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিক থাকবে ধার্য জিজিয়া প্রত্যাহৃত হবে এবং মুসলমানদের বায়তুল মাল থেকে তার ও তার পরিবার-পরিজনের জীবিকার ব্যবস্থা করা হবে (প্রাগুক্ত, পৃ. ৮৪, আবু ইউসুফের কিতাবুল খারাজ থেকে)।

হযরত ওমর ফারুক (রা.) অন্য এক সময় একজন অসমর্থ জিম্মী সম্পর্কে বায়তুল মালের দায়িত্বশীল কর্মচারীকে লিখে পাঠানঃ

এই লোকটি ও তার উপর ধার্য জিজিয়া ইত্যাদি করের বোঝা সম্পর্কে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা কর । আমরা লোকটির উপর কিছুমাত্র সুবিচার করিনি, তার যৌবনকালের উপার্জনে সকলে উপকৃত হয়েছি, আর এখন তার বার্ধক্যকালে লাঞ্ছিত হওয়ার জন্য তাকে ত্যাগ করেছি। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

অথচ আল্লাহ তো বলেছেন, সাদাকাসমূহ ফকীর ও মিসকীনদের জন্য। ফকীর বলতে মুসলমান দরিদ্র লোককে বোঝায়। আর এ লোকটি হচ্ছে আহলি কিতাব থেকে মিসকীন (প্রাগুক্ত, পৃ. ৮৬, আবু ইউসুফের কিতাবুল খারাজ থেকে)।

বর্তমান যুগে ইসলামী রাষ্ট্র ও সমাজে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যকর করার জন্য আরো অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থা কায়েম করা যেতে পারে, যাতে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো সংহত ও প্রসারিত হয়। এ প্রসঙ্গে বীমা ব্যবস্থার উল্লেখ করা যেতে পারে। জীবন বীমাকেও সুদমুক্ত ও জুয়ামুক্তভাবে সংগঠিত করা সম্ভব।

আধুনিক অনেক ফকীহই এই মত পোষণ করেন। (১. Nazatullah Siddiqui, Muslim Economic Thinking, A Survey of Contemporary Literature, Islamic Foundation, UK. ২. মুহাম্মাদ আবদুর রহীম, ইসলামী অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও বীমা)। প্রকৃতপক্ষে এর ফলে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ও যাকাত অর্থের উপর চাপ কমবে। ইতোমধ্যেই কয়েকটি ইসলামী বীমা কোম্পানি মধ্যপ্রাচ্যে কাজ শুরু করেছে।

বর্তমান যুগে ইসলামী ব্যাংকও সামাজিক নিরাপত্তা কায়েমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ইসলামী ব্যাংক অভাবগ্রস্ত কর্মক্ষম যুবক ও শ্রমিকদের মুদারাবার ভিত্তিতে অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

এ জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে খুব বেশি অর্থ দিতে হবে না। এ পদ্ধতিতে লক্ষ লক্ষ যুবক কর্মীকে বেকারত্ব থেকে মুক্ত করে উৎপাদনের কাজে নিয়োগ করা যেতে পারে। এটাও সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করবে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

এসব প্রতিষ্ঠান কায়েম করা প্রকৃত পক্ষে কুরআনের দৃষ্টিতে মারূফ কায়েম করা হিসেবেই গণ্য হবে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেনঃ

যাদেরকে আমরা পৃথিবীতে ক্ষমতা দিয়েছি তারা… সৎকাজের আদেশ করে ও মন্দ কাজ হতে নিষেধ করে।

(সূরা হাজ্জ: আয়াত ৪১)

বাস্তব সামাজিক নিরাপত্তা ও যাকাত ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে হলে রাষ্ট্রকে এর দায়িত্ব নিতে হবে। আগেই উল্লেখ করেছি যে, যাকাত প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। যতটুকু যাকাত রাষ্ট্র কর্তৃক আদায় করা অধিকাংশ ফকীহ ন্যায়সঙ্গত মনে করেন, ততটুকু যাকাত বাধ্যতামূলকভাবেই আদায় করতে হবে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

যাকাতের কিছু অংশ ফকীহদের কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে আদায় করার কথা বলেছেন (ইউসুফ আল কারযাভী, ইসলামের যাকাত বিধান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২য় খণ্ড)। এ জন্য সব মুসলিম দেশে প্রয়োজনীয় যাকাত আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করতে হবে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

যাকাত আদায়কে সহজ করার জন্য যাকাত সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় জ্ঞান জনগণকে দিতে হবে। তবেই সালাত আদায় করার মতো যাকাত আদায় করা জনগণের জন্য সহজ হবে। জনগণ এ ব্যাপারে অনেক কিছুই জানে না। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

এ সম্পর্কে ইউসুফ আল কারযাভী লিখেছেনঃ ‘(যাকাত সম্পর্কে) আরও কতকগুলো বিষয় জানার প্রয়োজন সম্পূর্ণ নতুনভাবে এ যুগে দেখা দিয়েছে। প্রাচীনকালীন ফিকাহবিদগণ এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনবহিত ছিলেন।’ যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

এ প্রসঙ্গে তিনি বড় বড় শিল্প কারখানার উৎপাদন, জাহাজ, ভাড়া বাড়ি, হোটেল- রেস্তোরাঁ, প্রেস ইত্যাদি নতুন ধরনের সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের ভূমি যে খারাজী ভূমি নয় বরং উশরী ভূমি, এ সম্পর্কেও জনগণের জ্ঞানের অভাব আছে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

জনগণকে জানানো দরকার যে, বাংলাদেশের মুসলিম জনগণের জমির ফসলের উপর ওশর দান ফরজ। (ক. ইউসুফ আল কারযাভী, ইসলামের যাকাত বিধান, খ. সাইয়েদ মোহাম্মদ আলী, ওশরের শরীয়তী বিধান, আধুনিক প্রকাশনী)।

তেমনিভাবে যাকাত প্রতিষ্ঠার জন্য যাকাত কি কি সম্পদে ফরজ, নিসাব কি, যাকাতের বছর কিভাবে গণনা করতে হয় – এ সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞান জনগণকে দিতে হবে (ইউসুফ আল কারযাভী, প্রাগুক্ত)। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

সুতরাং আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যাকাত সংক্রান্ত এ আইন-কানুনকে বিস্তারিতভাবে পড়বার ব্যবস্থা করতে হবে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

যাকাত ব্যবস্থা কার্যকরণে কেবল সরকারি কর্মচারীর উপর নির্ভর করা ঠিক হবে না; তাতে যাকাত বিভাগের প্রশাসনিক খরচ বেশি হবে। কাজেই যাকাত প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেক মুসলিম দেশকে বেসরকারি পর্যায়ে সর্বস্তরের জনগণের কমিটির ব্যবস্থা করতে হবে । সরকারি যাকাত কর্মচারীগণ তাদের কাজ তদারক করবেন।

যাকাত বিভাগে কর্মরতদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার হবে। এ প্রশিক্ষণের মধ্যে যাকাতের বিধি-বিধান, প্রসাশনিক আইন-কানুন হিসাবরক্ষণ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হবে। যাকাত বিভাগের কর্মচারীদের যথাযোগ্য বেতন দিতে হবে, যেন তারা অসততার পথে পা না বাড়ায়।

সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সুসংহত করার জন্য ইসলামী বীমা ব্যবস্থা ও ইসলামী ব্যাংকের ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে। এ কাজ বেসরকারি ও সরকারি দুই পর্যায়েই হতে হবে। যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা।

সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইসলামী সমাজ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ। এ ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য প্রত্যেক সরকার ও সমাজের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা কর্তব্য। একথা অস্বীকার করা যাবে না যে, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ইসলামী অর্থনীতি নানাবিধ দিক- নির্দেশনা দিয়েছে।

আরো পড়ুন: অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব

Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
Previous Articleঅর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
Next Article ওশরের বিধান
iBankHub Editor
  • Website

Related Posts

Savings

আমানতের খেয়ানত প্ৰসঙ্গে

October 13, 2023
Savings

ইসলামী ব্যাংকের জমা গ্রহণের নীতি ও পদ্ধতি

October 6, 2023
Savings

সুদভিত্তিক ব্যাংক বনাম ইসলামী ব্যাংক

October 5, 2023
View 2 Comments

2 Comments

  1. Pingback: এসএসসি পরীক্ষা ফরম ফিলাপ ২০২৩ বিজ্ঞপ্তি - iBankHub

  2. Pingback: ওয়াকফ: প্রয়োজন নতুন আন্দোলন - iBankHub

Leave A Reply Cancel Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Top Posts

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Categories
  • AB Bank Bangladesh (105)
  • Apps (11)
  • Banking Solution (12)
  • Education (28)
  • Palli Sanchay Bank (490)
  • Savings (9)
  • Update (16)
Stay In Touch
  • Facebook
  • YouTube
  • TikTok
  • WhatsApp
  • Twitter
  • Instagram
Most Popular

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Our Picks

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
© 2025 iBankHub. Designed by Creative IT.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.