Close Menu
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

What's Hot

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023
Facebook X (Twitter) Instagram
Saturday, September 13
Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest Vimeo
Subscribe Button Button
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us
iBankHubiBankHub
Home » ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক
Update

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

iBankHub EditorBy iBankHub EditorOctober 29, 2023Updated:November 12, 2023No Comments9 Mins Read
Share Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Reddit Telegram Email
ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক ইসলামী অর্থনীতির Update
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

একটি উন্নততর ও স্বতন্ত্র ব্যাংকিং ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামী ব্যাংকিং-এর সৌন্দর্য ও আবেদন বুঝতে হলে মূলত ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তা এবং এর লক্ষ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভ আবশ্যক।

একটি পূর্ণাঙ্গ ও গতিশীল জীবনব্যবস্থা হিসেবে ইসলামের ব্যাপ্তি জীবনের সকল দিক ও বিভাগকে স্পর্শ করে এবং জীবনের একটি ব্যাপক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে। এ অবস্থান থেকে ইসলামী ব্যাংকিং ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কাজ করে।

যেকোন জীবনদর্শনের একটি বড় আয়োজন হলো মানুষের অর্থনৈতিক প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে। এ লক্ষ্য অর্জনে মানুষের প্রয়োজন পূরণের নিমিত্তে গড়ে উঠেছে নানা অর্থনৈতিক মতবাদ।

অধিকাংশ মতবাদের মূল বক্তব্য প্রান্তিকতায় আচ্ছন্ন, একদেশদর্শী ও মানুষের প্রকৃত প্রয়োজনসীমার বাইরে অবস্থান করে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যের বিধিবিধান করতে সচেষ্ট। এজন্য ইউরোপীয় শিল্পবিপ্লবের পর থেকে নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বিকাশ ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

এ অর্থব্যবস্থায় মানুষের নৈতিক আবেদনের কোন গুরুত্ব নেই। খুব সহজভাবে বলা যায়, অর্থনৈতিক বিষয়াদি থেকে দয়া, ভালবাসা, সহমর্মিতা, পরোপকার ইত্যাদি মানবীয় ও নৈতিক বিষয়গুলো পরিত্যাগ করলেই তার ফলস্বরূপ পুঁজিতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা পাওয়া যায়।

এ অর্থব্যবস্থার নামকরণ করা হয়েছে তথাকথিত positive economics হিসেবে। এ অর্থব্যবস্থার বিকাশ ও পরিপুষ্টিতে প্রচলিত সুদভিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থা নিরন্তর শক্তি যুগিয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বাই-প্রোডাক্ট হলো সুদী ব্যাংক ব্যবস্থা।

অন্যদিকে, সমাজবাদী অর্থব্যবস্থা সুদভিত্তিক পুঁজিবাদী শোষণ থেকে মানবতাকে উদ্ধার করতে যেয়ে নিজেই পরবর্তীতে এক দানবাকৃতির পুঁজিবাদ কায়েম করে এবং নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আবার তথাকথিত নমনীয় পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সাথে মিশে গেছে।

এ দুই প্রান্তিক অর্থব্যবস্থার মাঝে ইসলামী অর্থনৈতিক দর্শন ব্যক্তি ও মানুষের কল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এক ব্যাপক, ভিন্নধর্মী ও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রস্তাবনা পেশ করে। ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

ইসলামী অর্থনৈতিক দর্শনের মূল কথা হলো মানুষ উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্ট কোন প্রাণীবিশেষ নয়, বরং বিশ্বজাহানের মহান মালিকের এক সম্মানিত প্রতিনিধি বা খলীফা।

এ খলীফা পৃথিবীতে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রেরিত। তার অর্থনৈতিক প্রয়োজন পূরণও এ উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক-এর সকল প্রচেষ্টা মূলত ইসলামী অর্থনীতির এ উদ্দেশ্য অর্জনে নিবেদিত। ইসলামী অর্থনীতির উদ্দেশ্যকে ডক্টর ওমর চাপরা সংজ্ঞায়িত করেছেন ‘মাক্কাসিদ আল শরী’আহ’ হিসেবে।

যা শরীয়তের সীমার মধ্য থেকে ‘ফালাহ’ বা কল্যাণ আহরণ এবং ‘হায়াতে তাইয়্যেবা’ বা পবিত্র জীবন বাস্তবায়নের জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন তার সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে।

ইমাম গায্যালীর মতে মাক্কাসিদ হচ্ছে ঈমান, জীবন, বুদ্ধিবৃত্তি, বংশধর ও সম্পদের সংরক্ষণ ও উন্নতি সাধনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবই।’

জীবনের মাক্বাসিদের মধ্যেই মূলত অর্থনৈতিক দর্শনসমূহের ভিত্তি প্রোথিত। পাশ্চাত্যের অর্থনৈতিক দর্শন মূলত মানুষের অভাব ও সম্পদের সীমাবদ্ধতার মধ্যে সামঞ্জস্যবিধান করতে সচেষ্ট।

অন্যদিকে ইসলামী অর্থ-দর্শনের প্রবক্তাদের বক্তব্য হলো, ঈমান হচ্ছে মানুষের সর্বপ্রধান মৌলিক প্রয়োজন। ফলে পাশ্চাত্যের ক্রমবিবর্তিত অর্থনৈতিক কর্মপরিকল্পনার সাথে ইসলামী অর্থনীতির পার্থক্যটি মৌলিক ও নীতিগত । ইসলামী অর্থনীতির বিশ্ব-দর্শন ও কর্মকৌশলের সাথে সম্পৃক্ত মৌলিক বিষয়গুলো নিম্নরূপ:

বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ব

মানবজাতির প্রত্যেক সদস্যই আল্লাহর প্রতিনিধি বা খলীফা হিসেবে বিশ্ব মানবমণ্ডলীর অবিচ্ছেদ্য অংশ। তার পরিচয় কোন দেশ, দল বা বিশেষ কোন জাতির সদস্য বা কোন বিশেষ সুবিধাভোগীশ্রেণীর সদস্য হিসেবে নয়।

প্রত্যেকেই আল্লাহ তা’আলার নির্ধারিত সীমার মধ্যে স্বাধীন | একের ওপর অন্যের মর্যাদার মানদণ্ড ধন-সম্পদ বা প্রাচুর্য নয়। রাসূলুল্লাহ (:) বলেছেন, ‘গোটা সৃষ্টিকুল আল্লাহর পরিবার। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবারের সাথে সদ্ব্যবহার করে সে আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় সৃষ্টি।”

ভ্রাতৃত্বের এ ধারণাগত কাঠামোর আওতায় অন্যান্য মানবসত্তার সাথে দরদী আচরণ ইসলামী অর্থনীতিতে সম্পদ আবর্তনের অন্যতম মাধ্যম ও অনুঘটক হিসেবে কাজ করে ৷ (ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

সম্পদ একটি আমানত

সম্পদের মালিকানা সংক্রান্ত ইসলামী ‘আকীদা অনুযায়ী সমস্ত সম্পদের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ তা’আলা । মানুষ এ সম্পদের আমানতদার মাত্র। এ আমানতদারীর অর্থ হলো মানুষ তার আওতাধীন সকল উপায়- উপকরণ আল্লাহর বিধিবদ্ধ নিয়মে ব্যয় ও ভোগের কাজে ব্যবহার করবে।

সম্পদ এমনভাবে কাজে লাগাতে হবে যেন তা মুষ্টিমেয় লোকের নয় বরং সকলের উপকারে আসে। অন্যদিকে যাবতীয় আয়-উপার্জনও হতে হবে বৈধ। বৈধভাবে উপার্জিত সম্পদও আমানতের শর্তের বাইরে ব্যয় বা ব্যবহার করা যাবে না।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

সরল ও বিনীত জীবনযাপন

সরল ও বিনীত জীবনাচরণ ইসলামী মাকাসিদের একটি অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য। মানুষকে পৃথিবীতে অবস্থান ও আচরণ করতে হবে বিনীতভাবে। কোন প্রকার ঔদ্ধত্য, জাঁকজমক, আড়ম্বর ও অনৈতিক চালচলন ইসলাম অনুমোদন করে না। এমন কোন জীবন-যাপন পদ্ধতি অনুসরণ করা যাবে না, যা অপচয় ও অপব্যয়কে উৎসাহিত করে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

ইমাম শাতিবী (র) মানুষের চাহিদা পূরণকে তিনটি অগ্রাধিকারের অধীনে ভাগ করেছেন :

ক. যরূরিয়াত

খ. হাজিয়াত

গ. তাহসিনিয়াত

পৃথিবীর সকল মানুষের জরুরি প্রয়োজন (যরূরিয়াত) পূরণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সকলের জরুরি প্রয়োজন পূরণ নিশ্চিত হবার পরই লোকেরা তাদের নিজেদের হাজিয়াত বা আরাম বর্ধনমূলক চাহিদা পূরণের কাজে অগ্রসর হবে। এর পরবর্তী পর্যায়ে তাহসিনিয়াত বা সৌন্দর্যবর্ধনমূলক চাহিদা পূরণ করা যাবে।

মানুষের স্বাধীনতা

মানুষের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ, একচ্ছত্র বা অবাধ নয়। শরীয়ার বিধিবদ্ধ নিয়মের মধ্যে থেকে একজন মানুষ তার অর্থনৈতিক প্রয়োজন মেটাতে যাবতীয় উপায়-উপকরণের সমাবেশ করবে।এ ক্ষেত্রে সে স্বাধীন | শরীয়ার লক্ষ্য হচ্ছে প্রত্যেককে সুশৃংখল জীবনের অধীন করে সকলের কল্যাণ নিশ্চিত করা ।

এভাবেই প্রত্যেকের মধ্যে জবাবদিহিতার অনুভূতি সৃষ্টি হতে পারে। ফলে প্রত্যেকেই তার যোগ্যতা অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রয়োজন পূরণে অবদান রাখতে সমর্থ হবে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

চাহিদা পূরণ

সম্পদ যাতে প্রত্যেকের চাহিদা পূরণে অবদান রাখতে পারে সে লক্ষ্যে সম্পদের বণ্টন ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। চাহিদা পূরণ অবশ্যই এমন হওয়া চাই যা সহজ, সরল ও বিনীত জীবন-যাপনে সাহায্য করে। এজন্য ইসলাম যেকোনো চাহিদাকে ‘চাহিদা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

সলামী শরীয়ায় মদের ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ। এ কারণে একজন বিশ্বাসী ব্যক্তির কাছে মদের কোন চাহিদাই সৃষ্টি হতে পারে না ।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

অর্থাৎ চাহিদা জাগ্রত হওয়ার আগেই ইসলাম একটি Moral filter বা নৈতিক ছাঁকুনিপদ্ধতি অবলম্বন করে, যাতে প্রত্যেকের চাহিদা প্ৰকৃত চাহিদা হিসেবে অর্থনৈতিক বিবেচনায় আসে।

সম্মানজনক উপার্জনের উৎস

প্রত্যেক ব্যক্তি তার যোগ্যতা অনুযায়ী চাহিদা পূরণে নিজের প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাবে। নিজের ও পরিবারের জন্য সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করা প্রত্যেক মানুষের জন্য ‘ফরযে আইন’।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

ইসলামী অর্থনীতির একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, যোগ্যতা ও উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রত্যেকের জন্য এ অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কর্মসংস্থান ও আত্ম- কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।

এতদসত্ত্বেও সমাজের কিছু লোক থাকেন যারা শারীরিক অক্ষমতার কারণে নিজস্ব উদ্যোগে আয় করতে পারেন না। এ জাতীয় লোক যাতে কোনরকম বঞ্চনার শিকার না হন এবং অর্থনৈতিক দীনতায় না ভোগেন, তা নিশ্চিত করা সকলের ইসলাম- নির্দেশিত সামাজিক দায়িত্ব।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

আয় ও সম্পদের সমতাভিত্তিক বণ্টন

মুসলিম সমাজে সম্পদের সমতাভিত্তিক বণ্টন অপরিহার্য। কুরআন মজীদে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সম্পদ যেন শুধুমাত্র তোমাদের ধনীদের মধ্যেই আবর্তিত না হয়।’ (সূরা হাশর : ৭) ‘

তোমাদের সম্পদে অধিকার রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতদের (সূরা যারিয়াত : ১৯)। হাদীসে উল্লেখ রয়েছে, ‘চাষবিহীন অবস্থায় কোন জমি অনধিক তিন বছর ফেলে রাখা যাবে না।’

যাকাত ও উশর আদায়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণসহ অসহায় দরিদ্র লোকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ইসলামী অর্থনীতির যেসব বিধান রয়েছে, দুনিয়ার অন্যকোন অর্থনৈতিক মতাদর্শে এর কোন উল্লেখ নেই। ফলে সেসব মতাদর্শে অনুরূপ বিধানের কথা চিন্তাই করা যায় না।

উল্লেখিত অর্থনৈতিক দর্শনের আলোকে সমাজের আর্থিক লেনদেন ঢেলে সাজাতে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এজন্য ইসলামী ব্যাংকসমূহের সকল কার্যক্রম ইসলামী অর্থনীতির উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সমন্বিত হতে হবে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম একটি অঙ্গ হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম শুধু বিত্তবানদের আয়-উন্নতির সাথে সম্পর্কিত নয় । সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সার্বিক উন্নয়ন ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্য। ইসলামী ব্যাংক সমাজের সকল মানুষের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে।

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাট-এর দশক পর্যন্ত অর্থনীতিবিদগণ উন্নয়ন বলতে ‘জাতীয় অর্থনীতির সামর্থ্য’কেই বুঝাতেন। আর এ সামর্থ্য বিবেচনা করা হতো জাতীয় মাথাপিছু গড় আয়ের নিরিখে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

অর্থাৎ সমাজের দশতলা আর গাছতলার লোকদের মাথাপিছু গড় আয়ের ভিত্তিতে উন্নয়নের একটা অবাস্তব ধারণা লাভ করা হতো। কিন্তু আধুনিক অর্থনীতিবিদগণ সেই ধারণা থেকে সরে এসে বলছেন:

“সম্পদ কতটুকু উৎপাদিত হলো সেটাই শেষ কথা নয়। সেই সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন হলেই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে । ”

দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষের কারণ ব্যাখ্যা করে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন :

“দুর্ভিক্ষের জন্য সম্পদের সীমাবদ্ধতা দায়ী নয়। সম্পদের উপর মানুষের অধিকারহীনতাই দুর্ভিক্ষের কারণ।”(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

সুদভিত্তিক ব্যাংকগুলো সম্পদ বণ্টনের প্রক্রিয়াকে শুধু ব্যাহত করছে না, সম্পদকে মুষ্টিমেয় সংখ্যক লোকের হাতে পুঞ্জীভূত করার এক সর্বাত্মক সাঁড়াশি-যন্ত্ররূপে ভূমিকা পালন করেছে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

বিশিষ্ট অর্থনৈতিক গবেষক অ্যান্ড্রু হেকার দেখিয়েছেন, পৃথিবীর মাত্র কয়েকশ’ বৃহদায়তন কর্পোরেশন এখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান ও বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের সিংহভাগ সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৮০% আর্থিক কাজ-কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে সেদেশের মাত্র ১০ ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আয় ও সম্পদ বণ্টনের এ আকাশ-পাতাল পার্থক্যের কারণে পৃথিবীর বিরাট সংখ্যক মানুষ এখন প্রকট দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে।

সিংহভাগ মানুষকে দারিদ্র্যের মধ্যে রেখে মুষ্টিমেয় লোকের হাতে ধন-সম্পদ পুঞ্জীভূত করার এ পরিস্থিতি সম্পর্কে একজন দার্শনিক বলেছেন:

“বেসরকারী পুঁজিপতিদের ঋণদানের ক্ষমতা তাদের হাতে এত বেশি সম্পদ ও ক্ষমতা তুলে দেয় যে, তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অবশিষ্ট জনগণের স্বাধীনতা মূল্যহীন হয়ে পড়ে।”(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

মুষ্টিমেয় লোকের হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে সুদভিত্তিক ব্যাংক-ব্যবস্থা। একচেটিয়া পুঁজির সৃষ্টি হচ্ছে সুদভিত্তিক ব্যাংকিংকে অবলম্বন করে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

পৃথিবীর বড় বড় ব্যাংকিং গ্রুপ বা ব্যাংক-ব্যবসায়ীরা একচেটিয়া পুঁজির মালিক হয়ে জনগণের প্রকৃত স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের দেশে জগৎশেঠ-উর্মিচাঁদরা অতীতে যেভাবে পুঁজির মালিক হয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের নিয়ামক শক্তিরূপে ভূমিকা পালন করেছে, এখনকার প্রাতিষ্ঠানিক সুদী কারবারীরা তার থেকে অনেক বেশি সংগঠিত।

সুদ ব্যক্তি-ব্যবসায়ীদের হাতেই হোক বা সরকারী মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমেই হোক, জনগণের জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। বাংলাদেশে সুদভিত্তিক ব্যাংকের ‘ডাল-পালা’ যত বিস্তৃত হয়েছে দেশের দারিদ্র্যের রূপ ততই প্রকট হয়েছে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান দারিদ্র্য পরিস্থিতিকে একধরনের দোযখরূপে অভিহিত করেছেন অর্থনীতিবিদ ডেনিশ গলেট। তাঁর মতে, এই দোযখ থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্য অবলম্বন করতে হবে একটি ‘বহুমুখী প্রক্রিয়া’,

যা বিদ্যমান সামাজিক কাঠামোর খোল-নলচে পাল্টে দেবে, জনগণের দৃষ্টিভঙ্গিতে আমূল পরিবর্তন আনবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে বড় রকমের পরিবর্তন নিশ্চিত করবে।

ইসলামের অর্থনীতিই ডেনিশ গলেটের এ ‘বিপ্লবী প্রত্যাশা’ পূরণ করতে পারে । ইসলামী অর্থনীতির নৈতিক শৃংখলা বা ‘ফিল্টার মেকানিজম’-এর বিধান সম্পদে হালাল-হারামের সীমা নির্ধারণ এবং অপচয় ও অপব্যয় রোধের মাধ্যমে মানুষের ‘অসীম চাহিদা’র ধারণাকে পাল্টে দেয়।

ইসলাম একচেটিয়া কৰ্তৃত্ব এবং সম্পদ জমা করে রাখার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং সম্পদ বণ্টন ও বিকেন্দ্রীকরণকে যাকাত, উশর, সাদাকা, কাফফারা ও ওয়াকফসহ বিভিন্ন ট্রান্সফার পেমেন্ট’ ও অন্যান্য আর্থিক কার্যক্রমের মাধ্যমে নিশ্চিত করে।

পরার্থে আত্মদানের জন্য ইসলামের যে মোটিভেশন, তা মানুষকে গোপনে ও প্রকাশ্যে নিজের সম্পদ অন্যের প্রয়োজনে বিলিয়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করে।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

অর্থনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে মানুষের জীবনকে বোঝা-বন্ধন থেকে মুক্ত করা ইসলামী অর্থনীতির একটি লক্ষ্য। এজন্য সামাজিক কাঠামোর পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে ইসলাম সুদ নিষিদ্ধ করেছে।

ইসলাম সুদের কোন আর্থিক ভূমিকা স্বীকারই করে না। ‘রিবা’ বা সুদের বিলোপ আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাসের শুধু ইঙ্গিতই করে না, বরং মৌলিকভাবে সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ইসলামী আদর্শের ছাঁচে পুনর্গঠন বুঝায়।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

সুদের বিলোপ সাধনের পাশাপাশি ইসলাম যাকাত ও অন্যান্য ট্রান্সফার পেমেন্টের মাধ্যমে সম্পদ জনগণের মাঝে সঞ্চালিত ও প্রবাহিত করার যে ব্যবস্থা করেছে, তার মুকাবিলায় এমন আরেকটি ব্যবস্থা পৃথিবীর অন্যকোন মতবাদ, চিন্তা বা দর্শনে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ইসলামী ব্যাংক-ব্যবস্থা সুদের বিলোপ সাধন, যাকাতব্যবস্থার মডেল স্থাপন এবং সম্পদ বণ্টনের এমন একটি প্রক্রিয়া, যা বিশ্ববাসীর সামনে এক অসামান্য সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করেছে। ইসলামী ব্যাংকিং হলো বিশ্ববাসীর জন্য ইসলামের কল্যাণের মাঝে প্রবেশ করার একটি সদর দরোজা।

ইসলামী ব্যাংক বিশ্ববাসীর জন্য এবং বিশ্বের অর্থনৈতিক চিন্তাবিদদের জন্য এমন একটি মঞ্চ, যেখানে দাঁড়িয়ে তারা বিশ্ববাসীকে ‘দারিদ্র্য সংস্কৃতি’ ও ‘দারিদ্র্যের দোযখ’ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে নিশ্চিত আশ্বাস ও আশার বাণী শোনাতে পারেন।(ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক)

(ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শক্তি)

Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
Previous Articleএকাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে
Next Article ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন
iBankHub Editor
  • Website

Related Posts

Update

মুসলিম সভ্যতার পতন ও সুদভিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থার উত্থান

October 12, 2023
Update

ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শক্তি

October 5, 2023
Update

ইসলামী ব্যাংকের পরিচয়

October 5, 2023
Add A Comment
Leave A Reply Cancel Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Top Posts

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Categories
  • AB Bank Bangladesh (105)
  • Apps (11)
  • Banking Solution (12)
  • Education (28)
  • Palli Sanchay Bank (490)
  • Savings (9)
  • Update (16)
Stay In Touch
  • Facebook
  • YouTube
  • TikTok
  • WhatsApp
  • Twitter
  • Instagram
Most Popular

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Our Picks

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
© 2025 iBankHub. Designed by Creative IT.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.