স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Wellbeing Online Training NCF 23: মুক্তপাঠ বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা কোর্সে যারা অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছেন আপনারা এখানে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করুন। এখানে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এর স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ কিভাবে যোগ দিবেন তা দেখানো হয়েছে।
নিচের বাটনে ক্লিক করে সরাসরি স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্ৰিয় শিক্ষক, শিক্ষার্থীর জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জনে সহায়ক ও তার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতানির্ভর করার এই নতুন মহতী প্রয়াসের আপনিই মূল চালিকাশক্তি।
আপনিই গড়ে তুলবেন আগামী প্রজন্ম যারা জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, মেধায় মননে, উদ্ভাবনে, নৈতিকতায় ও সুস্বাস্থ্যে বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত গড়বে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়টি সেই সুন্দর আগামী প্রজন্মের কথা বিবেচনা করে একটি নতুন বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার জন্য মুক্তপাঠের নির্ধারিত লিংকে প্রবেশ করুন। অথবা আমাদের দেওয়া এই কনটেন্ট অনুসরণ করুন। গত পর্বে আমরা বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনলাইন প্রশিক্ষণ NCF Science New Training নিয়ে জানার চেষ্টা করেছি।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ
যারা সার্ভারে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণটি করতে সক্ষম হন নাই। তাহলে নিচের ভিডিওটি দেখুন। এটি দেখলেই আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রমে এই বিষয়ে আপনার ধারনা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আপনি কি এখনো স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারেন নাই। তাহলে এই লিংকে প্রবেশ করুন।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়টিতে মূল প্রতিপাদ্য একজন শিক্ষার্থীর ভালো থাকা (well-being) এর উদ্দেশ্য সমন্বিতভাবে ভালো থাকার উপাদানগুলো সম্পর্কে সচেতন হয়ে নিজের জ্ঞান ও উপলব্ধি ব্যবহার করে সমন্বিত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন।
শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্য কীভাবে একজন মানুষের সুস্বাস্থ্য অর্থাৎ ভালো থাকা কে প্রভাবিত করে একজন শিক্ষার্থী নিজে কীভাবে তার সুস্বাস্থ্যে ও সুরক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে তা উপলব্ধি করা এবং চর্চায় উদ্যোগী হওয়া সম্পর্কে এবারের শিক্ষাক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে।
এভাবে ধীরে ধীরে নিজের সমন্বিত সুস্বাস্থ্যের দায়িত্ব সে নিজে গ্রহণ করে সুস্থ, পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ, উৎফুল্ল ও স্বতঃস্ফূর্ত জীবনের জন্য তার ভালো থাকা নিশ্চিত করতে যোগ্যতা অর্জন করবে।
এই বিষয়টি শুধু স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য জানার বিষয় নয়; বরং জীবনব্যাপী ভালো থাকার চর্চা করতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করাই এর উদ্দেশ্য। সেজন্য এখানে নেই কোনো সামষ্টিক পরীক্ষা; শিক্ষার্থীর শিখনকালীন ও তার ভালো থাকার চর্চার মূল্যায়নই এখানে প্রাধান্য পেয়েছে।
বিষয় ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা
এখানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে বিষয় ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্সে আলোচিত ভিডিওটি দেওয়া হল। আপনি চাইলে এখান থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ের অনলাইন কোর্স সম্পর্কে ধারনা নিতে পারেন।
ষষ্ঠ শ্রেণির এই বিষয়টিতে মোট ছয়টি যোগ্যতা রয়েছে যা শিক্ষার্থীরা ৬টি অভিজ্ঞতা চক্রের মধ্য দিয়ে অর্জন করবে।
আর তা অর্জনের জন্য কিছু সহায়ক অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা অর্জনের প্রক্রিয়া, মূল্যায়নের জন্য কিছু টুলস এবং তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। সেগুলো আপনাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের সাথে যুক্ত হয়ে সম্মিলিতভাবে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করবে এবং এ বিষয়গুলোতে তাদের জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গী ও মূল্যবোধে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনবে।
শিক্ষক সহায়িকায় অভিজ্ঞতানির্ভর শিখনচক্রকে চারটি ধাপে, যথা বাস্তব অভিজ্ঞতা, প্রতিফলনমূলক পর্যবেক্ষণ, বিমূর্ত ধারণায়ন ও সক্রিয় পরীক্ষণে সাজানো হয়েছে। এছাড়াও এখানে পাঠের বদলে সেশন আকারে অভিজ্ঞতাগুলোকে সাজানো হয়েছে।
এছাড়া ছেলে-মেয়ে-তৃতীয় লিঙ্গ, বিশেষ চাহিদা নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিত করা, কোভিড মহামারিতে বিকল্প উপায়ে শিক্ষা, শিখনকালীন মূল্যায়ন, শিখন শেষে শিক্ষকের প্রতিফলন, পরিবার ও কমিউনিটির অংশগ্রহণ, অন্য বিষয়ের সাথে আন্তঃসম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই শিক্ষক সহায়িকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা বই এবং তাদের ডায়েরি বা জার্নালের সাথে নিবিড় সম্পর্ক। শিক্ষক সহায়িকার আলোকে শ্রেণিতে আপনি শিক্ষার্থীদের সাথে অনেক মজার কাজ করবেন।
সেগুলোর আলোকে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা বই এবং ডায়েরি বা জার্নালে অনেক কাজ করবে। তাই এই বিষয়টিতে আপনার এবং শিক্ষক সহায়িকার ভূমিকাটিই প্রধান।
আপনার প্রতি রইল শ্রদ্ধা। আগামী প্রজন্মকে ভালো থাকার পাথেয় আপনি তুলে দেবেন সেই শুভকামনা ও প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতার বিবরণী
বয়সভিত্তিক অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা এবং এর চ্যালেঞ্জ সঠিকভাবে মোকাবিলা করে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুরক্ষিত থেকে নিজে সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করতে পারা ও অন্যকে উদ্বুদ্ধ করতে পারা।
নিজের ও অন্যের মতামত ও অবস্থানকে সম্মান করে ইতিবাচক যোগাযোগের মাধ্যমে পারবারিক, সামাজিক ও বৈশ্বিক পরিসরে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে সক্রিয় ও মানবিক নাগরিক হিসেবে অবদান রাখা ।
বিষয়ের ধারণায়ন
অন্তঃ ও আন্তঃব্যক্তিক পরিবর্তন এবং প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে নিজ স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে সকলকে নিয়ে ভালো থাকা প্রত্যেক মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
নিজে ভালো থাকা এবং অন্যের ভালো থাকায় অবদান রাখার ওপর মানুষের স্বপ্ন ও ভবিষৎ জীবন অনেকাংশে নির্ভর করে যা স্বাস্থ্যকর ও সুস্থ সমাজ এবং নিরাপদ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়টি ধারণায়নে প্রতিক্রিয়াভিত্তিক (Reactive) উদ্যোগের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতায়ন (Empowerment) কৌশল বিবেচনা করা হয়েছে, যা সময় সাপেক্ষ হলেও শিক্ষার্থীদের কঠিন বাঁধা দূর করে ভেতর থেকে আত্ম বিশ্বাসী ও মানবতাবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে টিকে থাকতে (Resilient) সহায়তা করে।
সংশ্লিষ্ট যোগ্যতাসমূহ অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজের অনুভূতি ও মানসিক চাহিদা, সক্ষমতা ও সম্ভাবনা অনুধাবন করে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন ও পরিচর্যা করার যোগ্যতা অর্জন করবে এবং অন্যের অনুভূতি অনুধাবন করে ভাব বিনিময় ও মত প্রকাশ, কার্যকর অংশগ্রহণ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা অর্জন করবে।
তারা সচেতন হয়ে সম্পর্কের যত্ন, পরিচর্যা, উন্নয়ন, নতুন সম্পর্ক তৈরি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছিন্ন করার পদক্ষেপ নিতে পারবে।
আত্মপ্রত্যয়, আত্মমর্যাদাবোধকে সমুন্নত রেখে সামাজিক ও বৈশ্বিক পরিবর্তন ও বৈরিতার পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা করে নিজেকে সুস্থ, সংবেদনশীল ও পরিশীলিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।
এ যোগ্যতা অর্জনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানুষ, সমাজ ও পৃথিবীর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। ফলে শিক্ষার্থীরা অন্যের আনন্দ, বেদনা অনুধাবন করে সমআনন্দ বা সমব্যথা অনুভব করে এবং সকল প্রকার ঝুঁকি, দ্বন্দ্ব হতাশা, ক্ষোভ, বিদ্বেষ নিরসনের মাধ্যমে মানব ও প্রকৃতি সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে অর্থবহ জীবনযাপনের মাধ্যমে ভালো থাকতে পারবে বলে প্রত্যাশা।
বিষয়ের যৌক্তিকতা, গুরুত্ব এবং ক্ষেত্রসমূহ বিবেচনায় নিম্নলিখিতভাবে এর ধারণায়ন করা হয়েছে
শরীর ও মনের যত্ন এবং পরিচর্যা: স্বাস্থ্য সুরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ পন্থা হলো নিজের পরিচর্যা অর্থাৎ নিজেকে ভালোবেসে যত্ন ও পরিচর্যা করা। শিক্ষার্থীর শরীর, মন এবং পরিবেশের অন্তঃ ও আন্তঃ মিথস্ক্রিয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতির স্বাস্থ্যকর, ইতিবাচক, সংবেদনশীল ও কার্যকরী ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতিনিয়ত সচেতনতা, নিজেকে যত্ন ও পরিচর্যা করা প্রয়োজন।
সুতরাং নিরবচ্ছিন্নভাবে আত্মপরিচর্যা করতে পারার যোগ্যতা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য অত্যাবশ্যক। দৈনন্দিন এবং বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পুষ্টি ও খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা ও খেলাধুলা, রোগ ও দুর্ঘটনা, ঝুঁকি মোকাবিলা, আবেগ ব্যবস্থাপনা, সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা, চাপ মোকাবিলা, শখ ও স্বাস্থ্যকর বিনোদন ও অংশগ্রহণ, স্বেচ্ছা সেবা ইত্যাদি সার্বিকভাবে আত্মপরিচর্যার অংশ।
আত্মপরিচর্যায় শরীর ও মনের সঙ্গে পরিবার ও সমাজের মিথস্ক্রিয়ার প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজে ভালো থাকার অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে অন্যকে ভালো থাকতে ভূমিকা রাখা। যথাযথভাবে জেনে, বুঝে, অনুধাবন ও উপলব্ধি করে কার্যকরী আত্মপরিচর্যা করতে হলে আবেগিক বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্লেষণ ও সামাজিক বুদ্ধিমত্তা সংশ্লিষ্ট সক্ষমতাসমূহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১. আবেগিক বুদ্ধিমত্তা
নিজের আবেগ অনুভূতির অনুধাবন ও উপলব্ধি, ইতিবাচকভাবে প্রকাশ ও ব্যবস্থাপনাসহ অন্যের আবেগ ও অনুভূতি বোঝা এবং যৌক্তিক ও স্বাস্থ্যকর যোগাযোগ মাধ্যম, ভঙ্গী নির্বাচন করতে পারা এবং ধৈর্য্য ও সহনশীলতা প্রদর্শন করার যোগ্যতা এই ধরণের মধ্যে অর্ন্তভূক্ত।
চিন্তাকে যৌক্তিক, বিশ্লেষণধর্মী ও গঠনমূলক রেখে ইতিবাচকভাবে ভূমিকা রাখতে পারা এবং প্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারাও এই যোগ্যতাসমূহের অংশ।
২. আত্ম বিশ্লেষণ
নিজের বৈশিষ্ট্য, গুণাবলী, সামর্থ্য অনুধাবন করে বিশ্লেষণ ও যৌক্তিক মুল্যায়নের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ, বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া, অনুভূতি ও আচরণের সংগে সম্পর্ক এবং প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী সহায়তা চাইতে পারা এই ধরণের যোগ্যতাসমূহের অন্তর্ভূক্ত।
৩. সামাজিক বুদ্ধিমত্তা
সমাজের সক্রিয় সদস্য হিসেবে থেকে সামাজিক কর্মকান্ডে ইতিবাচক অংশগ্রহণ ও ভূমিকা রাখা এবং নিজের কার্যক্রম ও ভুমিকায় সন্তুষ্ট থেকে নিজেকে শ্রদ্ধা করা ও ভালোবাসতে পারার জন্য সামাজিক বুদ্ধিমত্তা সংশ্লিষ্ট যোগ্যতাসমূহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের সামর্থ্য অনুধাবন করে যৌক্তিক ও স্বাস্থ্যকর ভাবে আত্ম বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের মাধ্যমে সামাজিক সম্পর্ক গঠন ও বজায় রাখা, আন্ত: সম্পর্ক সংশ্লিষ্ট ঝুকিঁ ও চাপ ব্যবস্থাপনা, ধৈর্য্য ও সহমিতার সাথে আবেগ ও চাপমুক্ত থেকে দৃঢ়তা ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রত্যয় ও নমনীয়তার সংগে দ্বন্দ্ব নিরসন ও সমঝোতা করতে পারা এবং সামাজিক নেটওয়ার্ক বজায় রাখতে পারা সামাজিক বুদ্ধিমত্তার অন্যতম যোগ্যতা।
সুতরাং শরীর, মন, পরিবার ও সমাজের প্রতিনিয়ত মিথস্ক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে আবেগিক বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্লেষণ এবং সামাজিক বুদ্ধিমত্তা অর্জন করে নিজেকে ভালোবেসে, নিজের ভালো থাকার ক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ব উপলব্ধি করে, আত্মপরিচর্যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভালো থাকার যোগ্যতা অর্জন করবে।
শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত যোগ্যতাগুলো অর্জন করে শরীর, মন, পরিবার ও সমাজের প্রতিনিয়ত মিথস্ক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে আবেগিক বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্লেষণ এবং সামাজিক বুদ্ধিমত্তা অর্জন করে নিজেকে ভালোবেসে, নিজের দায়িত্ব উপলব্ধি করে, নিরবচ্ছিন্নভাবে শরীর ও মনের যথাযথ যত্ন ও পরিচর্যার মাধ্যমে নিজের ভালো থাকার ও অন্যকে ভালো রাখতে ভূমিকা রাখার যোগ্যতা অর্জন করবে।
অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন
শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অর্জনকে নিশ্চিত করার জন্য এই শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন-শেখানো কৌশলকে অন্যতম একটি পদ্ধতি হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এই কৌশল অনুসারে মূলত শিক্ষার্থীরা সরাসরি অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে নিজের শিখনের দায়িত্ব নিজে পালন করার মাধ্যমে যোগ্যতা অর্জন করবে। শিক্ষক শুধু তাকে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে ও সহায়তা করে তার দায়িত্ব পালন করবেন।
এই পদ্ধতিতে আনন্দময়, পঞ্চ-ইন্দ্রিয়ের সমন্বিত ব্যবহারের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সহযোগিতামূলক শিখন, একক, জোড়া এবং দলগত কাজসহ স্বপ্রণোদিত শিখনের সংমিশ্রণ, বিষয়নির্ভর না হয়ে প্রক্রিয়া এবং প্রেক্ষাপটনির্ভর শিখন, অনলাইন শিখনের ব্যবহার ইত্যাদি প্রক্রিয়াগুলোর চর্চার সুযোগ রাখা হয়েছে।
অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনকে ফলপ্রসূ করতে শিক্ষকের ভূমিকাকেও স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তামূলক, একীভূত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিখন পরিবেশ নিশ্চিত করবেন যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখনের উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়।
অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনকে বোঝানোর জন্য সাধারণভাবে একটি চক্রাকার ছককে ব্যবহার করা হয়। যেখানে চারটি মূল ধাপ অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের শিখন নিশ্চিত হয়।
প্রথম ধাপ – বাস্তব অভিজ্ঞতা: এই ধাপে শিক্ষার্থী বিষয়ভিত্তিক তার বাস্তব জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাবে।
দ্বিতীয় ধাপ- প্রতিফলনমূলক পর্যবেক্ষণ: এরপর তারা পর্যবেক্ষণ, আলোচনা, অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে আগের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করবে।
তৃতীয় ধাপ – বিমূর্ত ধারণায়ন: এই ধাপে শিক্ষার্থীরা কোনো একটি সাধারণ ধারণায় বা নিজস্ব ব্যাখ্যায় উপনীত হবে। প্রয়োজনে বিভিন্ন রিসোর্সের সহযোগিতা নেবে।
চতুর্থ ধাপ- সক্রিয় পরীক্ষণ/প্ৰয়োগ: অর্জিত ধারণা অন্য কোনো অভিজ্ঞতায় বা পরিস্থিতিতে ব্যবহার করবে।
ষষ্ঠ শ্রেণির নির্ধারিত যোগ্যতাসমূহ
৬.১ সুস্থ, পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ, উৎফুল্ল ও স্বতঃস্ফূর্ত থাকতে নিজের দৈনন্দিন যত্ন ও পরিচর্যা করতে পারা এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ নির্ণয় ও মোকাবিলায় উদ্যোগী হওয়া।
৬.২ শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ও এর প্রভাবের পারস্পরিক সম্পর্ক অনুধাবন করে পরিবর্তনের সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারা
৬.৩ অন্যের আবেগ ও অনুভূতিকে অনুধাবন ও সম্মান করে এবং নিজের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি যত্নবান হয়ে তার ইতিবাচক প্রকাশ করতে পারা।
৬.৪ অন্যের মূল্যায়নে প্রভাবিত না হয়ে সফলতা ও ব্যর্থতা নিজের সামর্থ্য ও সীমাবদ্ধতার বিশ্লেষণে আত্মমূল্যায়ন করে আবেগ অনুভূতির যৌক্তিক, স্বাস্থ্যকর ও গঠনমূলক প্রকাশ করতে পারা এবং উত্তরণে ভূমিকা রাখতে পারা।
৬.৫ পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে বয়স উপযোগী বিভিন্ন পরিসরে অন্যের ভাব, আবেগ ও অনুভূতিকে সম্মান করে সহনশীলতার সাথে নিজের মত ও ধারণা প্রকাশ করতে পারা।
৬.৬ আন্তঃসম্পর্ক ঝুঁকি নির্ণয় করতে পারা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী মোকাবিলা করতে ও বিদ্যমান সেবাকাঠামো থেকে সহায়তা নিতে পারা।
শিখন মূল্যায়ন
নতুন শিক্ষাক্রমের মূল লক্ষ্যই যেহেতু শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অর্জন নিশ্চিত করা, তাই এতে শিক্ষার্থীর মূল্যায়নের পরিবর্তে শিখনের মূল্যায়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর তাই মূল্যায়নের অন্যতম কৌশল হিসেবে নেওয়া হয়েছে শিখনকালীন মূল্যায়ন।
অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যখন যে শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাবে, তখনই তাকে পর্যবেক্ষণ, হাতে-কলমের কাজ, রুব্রিক্স প্রভৃতির মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে যে তাদের শিখন হয়েছে কি না।
মূল্যায়নে কোনো নম্বর ব্যবহার করা হবে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু রুব্রিক্স এর নির্দিষ্ট স্থানে স্টার চিহ্ন দিয়ে মূল্যায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীর উন্নয়নের জন্য তাদের বইয়ে নির্দিষ্ট স্থানে এবং ডায়েরিতে পর্যবেক্ষণ নোট লিখতে হবে। এই রেকর্ড পরবর্তীতে শিক্ষার্থীর সমন্বিত মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
সকল বিষয়ের অনলাইন প্রশিক্ষণ দেখুন
বিষয়ের নাম | কোর্স শুরুর তারিখ ও সময় | অংশগ্রহণ পদ্ধতি |
---|---|---|
বাংলা | ২৪/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০ | কোর্স শুরু করুন |
ইসলাম ধর্ম | ২৪/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০ | কোর্স শুরু করুন |
ইংরেজি | ২৪/১২/২০২২, সকাল ১০:০০ | কোর্স শুরু করুন |
স্বাস্থ্য সুরক্ষা | ৪/১২/২০২২, সকাল ১০:০০ | কোর্স শুরু করুন |
গণিত | ২৪/১২/২০২২, সকাল ১১:০০ | কোর্স শুরু করুন |
শিল্প ও সংস্কৃতি | ২৪/১২/২০২২, সকাল ১১:০০ | কোর্স শুরু করুন |
হিন্দু ধর্ম | ২৪/১২/২০২২, দুপুর ১২:০০ | কোর্স শুরু করুন |
বৌদ্ধ ধর্ম | ২৪/১২/২০২২, দুপুর ১২:০০ | কোর্স শুরু করুন |
খ্রিস্ট ধর্ম | ২৪/১২/২০২২, দুপুর ১২:০০ | কোর্স শুরু করুন |
জীবন ও জীবিকা (১ম অংশ) | ২৪/১২/২০২২, বিকাল ০৩:০০ | কোর্স শুরু করুন |
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান (১ম অংশ) | ২৪/১২/২০২২, বিকাল ০৪:০০ | কোর্স শুরু করুন |
বিজ্ঞান | ২৫/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০ | কোর্স শুরু করুন |
ডিজিটাল টেকনোলজি | ২৫/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০ | কোর্স শুরু করুন |
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান (২য় অংশ) | ২৫/১২/২০২২, সকাল ১০:০০ | কোর্স শুরু করুন |
জীবন ও জীবিকা (২য় অংশ) | ২৫/১২/২০২২, সকাল ১১:০০ | কোর্স শুরু করুন |