বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনলাইন প্রশিক্ষণ NCF Science New Training

জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এর আলোকে মুক্তপাঠে বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ শুরু হবে ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ সকাল ৯ টায়; মাধ্যমিক শিক্ষকগণ নির্ধারিত তারিখে বিজ্ঞান বিষয়ের অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে।

আপনাদের জন্য বিষয় ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ বিজ্ঞান এর মুক্তপাঠ কোর্সে অংশগ্রহণ করার পদ্ধতি ও সনদ গ্রহণ পদ্ধতি ‍দেখানোর চেষ্টা করবো।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ

নিচের বাটনে ক্লিক করে আপনি সরাসরি বিষয় ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ বিজ্ঞান এর কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আপনি চাইনে নিচের ভিডিওতে বিষয় ভিত্তিক বিজ্ঞান অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১

বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ বিজ্ঞান

বিজ্ঞান বিষয়ের সরাসরি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার জন্য শিক্ষকগণ ভিডিও লেসন দেখতে হবে। আপনাদের সুবিধার্থে বিজ্ঞান অনলাইন প্রশিক্ষণ ভিডিও দেওয়া হল।

সবাইকে শুভেচ্ছা! সুপ্রিয় শিক্ষকবৃন্দ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এর বিজ্ঞান বিষয়ের অনলাইন প্রশিক্ষণে আপনাকে স্বাগতম। আপনারা ইতোমধ্যেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এর সাথে পরিচিত হয়েছেন। 

আমাদের এই নতুন শিক্ষাক্রম টা কেন এসেছে? কি কি পরিবর্তন এটাতে আসতে যাচ্ছে? সেই বিষয়গুলি আমরা ইতিমধ্যেই জানি। তবুও বিষয়টি সম্পর্কে সংযোগ স্থাপনের জন্য আমরা আরো কিছু বিষয় নিয়ে বলার চেষ্টা করছি।

প্রথমেই আমরা সেই আলোচনায় যাই যে নতুন শিক্ষাক্রমের এই ধারণাটা কেন এলো? পরিবর্তনগুলো এসেছে সেগুলো কেন প্রস্তাব করা হয়েছে? কেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এত বড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছে? 

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন। প্রতিটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে আমাদের শিক্ষাক্রমে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন। 

অংশীদারদের কাছ থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা ক্রমে কি কি পরিবর্তন প্রয়োজন সেগুলোর একটি করে প্রস্তাব উঠে এসেছে। 

শুধুমাত্র গবেষণা নয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা যখন প্রণয়ন করা হয়েছে তখন বিভিন্ন অংশীজন যেমন-  শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ও গবেষক থেকে বিভিন্ন মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ

প্রিয় শিক্ষক, বিজ্ঞান বিষয়টি নিশ্চয়ই আমাদের কারো জন্যই কোনো নতুন বিষয় নয়! কিন্তু বিজ্ঞানকে আমরা প্রথাগতভাবে যেভাবে দেখে এসেছি, এই শিক্ষাক্রমে তারচেয়েও বিস্তৃতভাবে চিন্তা করা হয়েছে।

যেহেতু শিক্ষক হিসেবে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব আপনারই, বিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে আপনার ভূমিকা অর্থবহ করে তুলতে প্রথমেই শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানকে কীভাবে দেখা হয়েছে সে সম্পর্কে জানা জরুরি!

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞান বিষয়টিকে কীভাবে দেখা হয়েছে?

বিজ্ঞান সমাজ বা প্রকৃতির বাইরে কোনো পৃথক বিষয় নয়, বরং প্রকৃতির ঘটনাবলিকে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে বুঝতে চেষ্টা করা বিজ্ঞান শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য।

কাজেই এই শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক বিজ্ঞান শিক্ষাকে শুধু খটমটে তত্ত্ব এবং পরীক্ষাগারে হাতে গোনা কিছু পরীক্ষণের মধ্যেই আটকে রাখা হয়নি, বরং বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা অর্জনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে যা শিক্ষার্থীর মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বিজ্ঞানভিত্তিক জীবনাচরণের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

প্রতিটি শিশু জন্মগতভাবে অনসুন্ধানী মন নিয়ে জন্ম নেয়। সমাজ এবং প্রকৃতির বিভিন্ন বস্তু এবং ঘটনা তাঁর কৌতূহলী মনকে আরো বেশি নাড়া দেয়।

সে জানতে চায় এর কারণ কী? এর পেছনের ঘটনা কী? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যে পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয় তা হলো বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান।

বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান হলো কিছু কৌশলের সমন্বয়ে একটি সুসংহত পদ্ধতি, যার মাধ্যমে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করা হয়।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক এ পদ্ধতি আয়ত্ত করতে হলে শিক্ষার্থীকে একটি যৌক্তিক, নিয়মতান্ত্রিক ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় যা তাঁকে বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তোলে। তাই এই শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞান শিক্ষার ধারণায়নের একেবারে কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানকে।

এই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য স্কেল বা পরিমাপ, অনুপাত ও পরিমাণ নির্ণয়ের প্রয়োজন পড়ে। নির্দিষ্ট কোনো সিস্টেমে ঘটে চলা ঘটনাবলি ব্যাখ্যা করার জন্য ওই সিস্টেমকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হয়, বিবেচনায় নিতে হয় সিস্টেম ও এর উপাদানসমূহের গঠন ও আচরণ, তাদের স্থিতি ও পরিবর্তন, এবং সিস্টেমের ভেতরে চলতে থাকা বস্তু ও শক্তির মিথস্ক্রিয়া।

বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ থেকে প্রাপ্ত প্রমাণনির্ভর তথ্যের ভিত্তিতে এসব ঘটনার ধরন বা প্যাটার্ন ও কার্যকারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়। অনুসন্ধানে প্রাপ্ত জ্ঞান বারবার পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর একটা সময় বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।

সময়ের সঙ্গে উদঘাটিত বৈজ্ঞানিক তথ্য, তত্ত্বের সমন্বয়ে বয়ে চলা বিজ্ঞানের মূল স্রোত থেকে ক্রমান্বয়ে তিনটি বিশেষায়িত ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়, যেমন- ভৌতবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান এবং পৃথিবী ও মহাকাশবিজ্ঞান। এই তিনটি বিশেষায়িত ক্ষেত্রের বাইরেও আরেকটি আলোচনার ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তা হলো বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সমাজ।

বিজ্ঞানের তথ্য দিয়ে ভারাক্রান্ত করে নয়, বরং অনুসন্ধানমূলক বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিখনের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানের দর্শন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ইত্যাদির উপর সম্যক ধারণা নিয়ে শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞানভিত্তিক জীবনাচরণে অভ্যস্ত করে তোলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।

এর ফলে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, দক্ষতা ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে তারা দৈনন্দিন জীবনে বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করে বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে পারবে ও বিজ্ঞানলব্ধ সামাজিক মূল্যবোধ (Socio- scientific values) ধারণ করে ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক ক্ষেত্রে দায়িত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল আচরণ করবে।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা

একটি বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতাসম্পন্ন সমাজ গড়ে তোলা বিজ্ঞান শিক্ষার চূড়ান্ত লক্ষ্য। এই শিক্ষাক্রমে তাই অনুসন্ধানমূলক শিখনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে বিজ্ঞান শিক্ষা শুধু বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব জানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে;

বরং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অনুসন্ধিৎসা, প্রক্রিয়াকরণ দক্ষতা ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে। ফলাফলস্বরূপ, শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরি হবে এবং প্রতিদিনের জীবনে, কিংবা যে কোনো সমস্যা সমাধানে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার প্রভাব পড়বে।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে এই চর্চা শিক্ষার্থীর মধ্যে ধীরে ধীরে বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতার একটি অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীর উপলব্ধি ও স্বজ্ঞামূলক বা মেটাকগনিটিভ দক্ষতাসমূহকে।

মেটাকগনিশন বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক

মেটাকগনিশনকে সহজ ভাষায় বলা চলে learning to learn; কী শিখবে, কীভাবে শিখবে, কীভাবে মূল্যায়িত হবে, অর্থাৎ সমগ্র শিখন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থী পূর্ণ সচেতনভাবে নিজেই ব্যবস্থাপনা করবে এবং প্রতিফলনমূলক শিখনের দক্ষতা অর্জন করবে।

অনুসন্ধানমূলক বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিখন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেটাকগনিটিভ দক্ষতাসমূহ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। মেটাকগনিটিভ শিখনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী জীবনব্যাপী শিখনের জন্য যোগ্য হয়ে ওঠে এবং বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে নিজের পরবর্তী শিখনের দায়িত্ব নেবার উপযুক্ত হয়ে গড়ে ওঠে।

বিজ্ঞানলব্ধ সামাজিক মূল্যবোধ (Socio-scientific values)

এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলার কথা বার বার বলা হয়েছে। বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় শুধু বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনায় নয়, বরং জীবনের সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে।

সেজন্য এই ফ্রেমওয়ার্কে বিজ্ঞানলব্ধ সামাজিক মূল্যবোধকে (Socio-scientific values) গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান শিক্ষায় বিজ্ঞানমনস্কতার চর্চার পাশাপাশি শিক্ষার্থীর মধ্যে ক্রস-ডিসিপ্লিনারি মূল্যবোধগুলো গড়ে তোলাও জরুরি।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিক্ষার্থী যাতে করে তার আশেপাশের পরিবেশ এবং তার উপর মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাবকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ করে এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিক বিভিন্ন সমস্যার বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানের চেষ্টা করে।

বৈজ্ঞানিক মূল্যবোধ ধারণ করার মাধ্যমে তারা বিজ্ঞানের দর্শনকে নিজের সংস্কৃতিতে আত্তীকৃত করতে পারবে, পাশাপাশি প্রকৃতি, পরিবেশ ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য সম্পর্কে কৌতূহলী হবে, বৈচিত্র্যকে সম্মান করবে।

প্রাকৃতিক ও সামাজিক সকল ইস্যুর বিশ্লেষণে বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় দেবে; বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক বিজ্ঞানের প্রকৃতি ও সৌন্দর্য হৃদয়ঙ্গম করবে এবং নিজেকে বিশ্বপ্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উপলব্ধি করতে পারবে।

এই শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া কেমন হবে?

এই শিক্ষাক্রমের অন্যতম একটি এপ্রোচ হলো অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন শেখানো কার্যক্রম। সহজ কথায় বলতে গেলে, আমরা বাস্তব জীবনে শিক্ষার্থী যে অভিজ্ঞতাসমূহের মধ্য দিয়ে যায় এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর যে যোগ্যতাগুলো অর্জিত হবার কথা- এই দুইয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন করাই এই এপ্রোচ বেছে নেয়ার উদ্দেশ্য।

তার মানে প্রথাগত শিক্ষা কার্যক্রমে বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক, অর্থাৎ আপনার যে দায়িত্ব ছিল এখন তা পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হবে।

মূলত শিক্ষার্থীকে এই পুরো শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যেই সহায়তা প্রয়োজন তা দেয়াই আপনার বর্তমান দায়িত্ব। অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনকে খুব প্রচলিত একটা চক্রের মাধ্যমে বোঝানো হয়-

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনলাইন প্রশিক্ষণ NCF Science New Training
বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া

ষষ্ঠ শ্রেণির নির্ধারিত বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিখনযোগ্যতাসমূহ

শিক্ষাক্রমে রূপরেখা অনুযায়ী বিজ্ঞান বিষয়ের ধারণায়নের উপর ভিত্তি করে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা ধাপে ধাপে বিজ্ঞান বিষয়ের কী কী যোগ্যতা অর্জন করবে তার একটি ধারাবাহিক শিখন ক্রম নির্ধারণ করা হয়েছে।

ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য নির্ধারিত যোগ্যতাগুলো নিচে দেয়া হল, বোঝার সুবিধার জন্য প্রতিটি যোগ্যতার পাশে তা অর্জনের উপায় কেমন হতে পারে তা জুড়ে দেয়া হয়েছে।

১. বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো এবং বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব যে প্রমাণের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে তা গ্রহণ করতে পারা;

ব্যাখ্যা: শিক্ষার্থীরা কোনো বাস্তব সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।

এই কাজ করতে গিয়ে তাদের বিজ্ঞানীদের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা তৈরি হবে। পাশাপাশি এই অভিজ্ঞতার সূত্র ধরে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তা বিশ্লেষণ করতে পারবে।

বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব যে শুধুমাত্র প্রমাণের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং যথেষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে তা পরিবর্তিতও হতে পারে তা উপলব্ধি ও গ্রহণ করতে পারবে।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ

২. বৈজ্ঞানিক পরীক্ষণের ক্ষেত্রে ফলাফলের চেয়ে পরিমাপের পদ্ধতির বস্তুনিষ্ঠতার উপর গুরুত্ব প্রদান করা;

ব্যাখ্যা: বৈজ্ঞানিক পরীক্ষণের ক্ষেত্রে অনেক সময় শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে কাজের অংশ হিসেবে নানা ধরনের পরিমাপ করতে হয়।

এসব ক্ষেত্রে পরিমাপের ফলাফল কতটা সঠিক তার চেয়ে পরিমাপের প্রক্রিয়া কতটা বস্তুনিষ্ঠ সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক শিখন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পরিমাপের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে এবং এই প্রক্রিয়ার বস্তুনিষ্ঠতার উপর গুরুত্ব দিতে সক্ষম হবে।

২. বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে পরিবেশের বিভিন্ন সজীব ও অজীব বস্তুর দৃশ্যমান গঠন ও তাদের মধ্যকার শৃঙ্খলা উপলব্ধি করতে পারা;

ব্যাখ্যাঃ শিক্ষার্থীরা পরিবেশের বিভিন্ন সজীব ও অজীব বস্তু পর্যবেক্ষণ করে তাদের গঠন অনুসন্ধান করবে। বিভিন্ন বস্তুর গঠনবৈশিষ্ট্য তুলনার মাধ্যমে তারা এদের গঠনের প্যাটার্ন খুঁজে বের করবে;

এবং এর মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তুর গঠনের মধ্যে একধরনের শৃঙ্খলা বা order উপলব্ধি করতে সমর্থ হবে।

৩. দৃশ্যমান পরিবেশের প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম বস্তুসমূহের গঠনের কাঠামো-উপকাঠামো ও তাদের আচরণ/বৈশিষ্ট্যর মধ্যকার সম্পর্ক অনুসন্ধান করতে পারা;

ব্যাখ্যা: শিক্ষার্থীরা পরিবেশের প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম কোনো বস্তুর গঠন পর্যবেক্ষণ করবে। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কোনো বস্তুর বিভিন্ন অংশ কীভাবে এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে, আবার সবগুলো অংশ সামগ্রিকভাবে কীভাবে একটা অভিন্ন ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে যার মধ্য দিয়ে বস্তুটির নির্দিষ্ট কোনো আচরণ বা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়- এই বিষয়গুলো উদ্ঘাটন করতে সমর্থ হবে।

৪. প্রকৃতিতে বস্তু ও শক্তির মিথস্ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে বস্তুর মতো শক্তিও যে পরিমাপযোগ্য তা উপলব্ধি করা এবং শক্তির স্থানান্তর অনুসন্ধান করতে পারা;

ব্যাখ্যা: শিক্ষার্থীরা কোনো সিস্টেম বা ব্যবস্থায় বিভিন্ন বস্তুর শক্তির আদান প্রদান পর্যবেক্ষণ করবে, এবং এর মাধ্যমে কী পরিমাণ শক্তি স্থানান্তরিত হচ্ছে তা যে পরিমাপ করা সম্ভব এই ধারণা গঠন করবে।

৫. প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম সিস্টেমের উপাদানসমূহের নিয়ত পরিবর্তন ও পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে যে আপাত স্থিতাবস্থা সৃষ্টি হয় তা অনুসন্ধান করতে পারা;

ব্যাখ্যাঃ যেকোনো প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম সিস্টেমের উপাদানসমূহ পরস্পরের সাথে নানা রকম ক্রিয়া বিক্রিয়ায় অংশ নেয়, কিংবা অবিরত পরিবর্তিত হতে থাকে। এদের নিয়ত পরিবর্তন ও পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অবস্থা বা সাম্যাবস্থা সৃষ্টি হয়, যা স্থির বা গতিশীল দুইই হতে পারে। শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিখন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে কোনো প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম সিস্টেমে এই আপাত স্থিতাবস্থা কীভাবে সৃষ্টি হচ্ছে তা অনুসন্ধান করবে।

৬. পৃথিবী ও মহাবিশ্বের উৎপত্তি অনুধাবন করতে পারা;

ব্যাখ্যা: পৃথিবী ও মহাবিশ্ব নিয়ে মানুষের কৌতূহল অতি প্রাচীন, প্রতিটি শিশু নিখাদ বিস্ময়ে মহাকাশের রহস্য বুঝতে চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীর এই অকৃত্রিম কৌতূহলকে জাগিয়ে তোলা এবং পরিচর্যা করা বিজ্ঞান শিক্ষাক্রমের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক সেজন্য তাদের মহাকাশ পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেয়া, কল্পনাশক্তিকে বিকাশের সুযোগ দেয়া, এবং একইসঙ্গে পৃথিবী ও মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বসমূহের সাথে পরিচিত করে তোলা যায়- এমনভাবে এসম্পর্কিত শিখন অভিজ্ঞতা সাজানো হয়েছে।

৭. প্রচারপাশের প্রকৃতিতে জীববৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ করে একই ধরনের জীবের মধ্যে ভিন্নতা অন্বেষণ করতে পারা;

ব্যাখ্যা: শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শিখন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তাদের পরিচিত পরিবেশের জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিত হবে এবং একই ধরনের জীবের মধ্যে কতরকম ভিন্নতা দেখা যায় তা অনুসন্ধান করবে।

৮. প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিসমূহ অনুসন্ধান করে সেই ঝুঁকি মোকাবেলায় সচেষ্ট হওয়া;

ব্যাখ্যা: উপরের ছয় নম্বর শিখন যোগ্যতার ক্ষেত্রে যেমন যেকোনো প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম সিস্টেমের আপাত স্থিতাবস্থা অনুসন্ধানের কথা বলা হয়েছিল, এই শিখন যোগ্যতায় সুনির্দিষ্টভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্যের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের নিয়ত পরিবর্তন ও ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় যে সাম্যাবস্থা বজায় থাকে তা কী কী কারণে নষ্ট হতে পারে সেইসব ঝুঁকিসমূহ শিক্ষার্থীরা অনুসন্ধান করবে এবং সেগুলো মোকাবেলায় সচেষ্ট হবে।

৯. বাস্তব জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রয়োগে উদ্বুদ্ধ হওয়া।

ব্যাখ্যা: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শব্দদুটি অনেক সময় একইসঙ্গে উচ্চারিত হলেও এদের অর্থ ও প্রয়োগে বড় ধরনের পার্থক্য আছে। শিক্ষার্থীরা শুধু যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির স্বরূপ সম্পর্কে জানবে তা-ই নয়,

বরং বিভিন্ন শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তারা প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রয়োগে সচেষ্ট হবে এবং অন্যদেরকেও উদ্বুদ্ধ করবে। একইসঙ্গে প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধেও তারা সচেষ্ট হবে।

ষষ্ঠ শ্রেণি বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক বছর ব্যাপি লেসন প্লান

ষষ্ঠ শ্রেণির পুরো বছরজুড়ে যে কয়টি অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের মধ্য দিয়ে যেতে আপনি শিক্ষার্থীকে সহায়তা করবেন তা এক নজরে দেখে নিন-

  • ১. আকাশ কত বড়?
  • ২. আমাদের জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি;
  • ৩. পিকনিক! পিকনিক!
  • ৪. আমাদের যারা প্রতিবেশী;
  • ৫. চলো নৌকা বানাই!
  • ৬. রোদ, জল, বৃষ্টি;
  • ৭. গতির খেলা;
  • ৮. সবার ইশকুল;
  • ৯. চাঁদ সূর্যের পালা;
  • ১০. রান্নাঘরেই ল্যাবরেটরি!
  • ১১. দেহঘড়ির কলকব্জা;
  • ১২. পানির সঙ্গে বন্ধুতা;
  • ১৩. বিশ্বভরা প্রাণ;
  • ১৪. রঙের দুনিয়া;
  • ১৫. হারিয়ে গেছে যারা;
  • ১৬. আপনার শিশুকে টিকা দিন!
  • ১৭. বাঁচবে নদী, তাতে জীবন থাকে যদি;

প্রিয় শিক্ষক আশা করছি আপনি বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনলাইন প্রশিক্ষণ NCF Science New Training ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছেন। আর কোনো তথ্যে প্রয়োজন হলে এখানে কমেন্ট করুন।

সকল বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণগুলো দেখুন

বিষয়ের নামকোর্স শুরুর তারিখ ও সময়অংশগ্রহণ পদ্ধতি
বাংলা২৪/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০কোর্স শুরু করুন
ইসলাম ধর্ম২৪/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০কোর্স শুরু করুন
ইংরেজি২৪/১২/২০২২, সকাল ১০:০০কোর্স শুরু করুন
স্বাস্থ্য সুরক্ষা৪/১২/২০২২, সকাল ১০:০০কোর্স শুরু করুন
গণিত২৪/১২/২০২২, সকাল ১১:০০কোর্স শুরু করুন
শিল্প ও সংস্কৃতি২৪/১২/২০২২, সকাল ১১:০০কোর্স শুরু করুন
হিন্দু ধর্ম২৪/১২/২০২২, দুপুর ১২:০০কোর্স শুরু করুন
বৌদ্ধ ধর্ম২৪/১২/২০২২, দুপুর ১২:০০কোর্স শুরু করুন
খ্রিস্ট ধর্ম২৪/১২/২০২২, দুপুর ১২:০০কোর্স শুরু করুন
জীবন ও জীবিকা (১ম অংশ)২৪/১২/২০২২, বিকাল ০৩:০০কোর্স শুরু করুন
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান (১ম অংশ)২৪/১২/২০২২, বিকাল ০৪:০০কোর্স শুরু করুন
বিজ্ঞান২৫/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০কোর্স শুরু করুন
ডিজিটাল টেকনোলজি২৫/১২/২০২২, সকাল ০৯:০০কোর্স শুরু করুন
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান (২য় অংশ)২৫/১২/২০২২, সকাল ১০:০০কোর্স শুরু করুন
জীবন ও জীবিকা (২য় অংশ)২৫/১২/২০২২, সকাল ১১:০০কোর্স শুরু করুন

2 thoughts on “বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনলাইন প্রশিক্ষণ NCF Science New Training

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.