কালালা’র সম্পত্তি বণ্টন প্রসঙ্গে
يَسْتَفْتُونَكَ ، قُلِ اللهُ يُفْتِيكُم فِى الكَللَةِ ان امرُوا هَلَكَ لَيْسَ لَهُ وَلَدولة ط أخت فلها يَصْفُ مَا تَرَكَ ، وَهُوَ بَرثَهَا إِن لَّمْ يَكُن لَّهَا وَلَد فَإِن كَانَتَا اثْنَتَيْنِ فَلَها LAGANDALGUAGE تَرَكَ ، وَإِن كَانُوا إِخْرَةِ رِجَالاً وَنِسَاء فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ التلين ان الله لَكُمْ أَن تَضِلُّوا ، وَاللهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ * يبين
লোকেরা তোমার নিকট কালালা সম্বন্ধে পরিষ্কারভাবে জানতে চায় । বল, আল্লাহ তোমাদেরকে কালালা সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন।
কোনো ব্যক্তি যদি সন্তানহীন অবস্থায় মরে যায় এবং তার একজন বোন থাকে তবে সে (বোন) তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে অর্ধেক পাবে এবং বোন যদি সন্তানহীনা অবস্থায় মারা যায় তবে ভাই তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে। মৃতের উত্তরাধিকারী যদি দু’বোন হয় তবে তারা পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ পাবে।
আর যদি ভাই বোন কয়েকজন হয়, তবে পুরুষের অংশ নারীর দ্বিগুণ হবে । আল্লাহ তোমাদের জন্য আইন-কানুন সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে এ আশংকায় । আল্লাহ সবকিছু জ্ঞাত ও অবহিত। (সূরা আন-নিসা: আয়াত ১৭৬)
ভূমিকা
আয়াতটি সূরা নিসার অন্যান্য আয়াত নাযিলের বহু পরে নাযিল হয়েছে। হাদিসের কোনো কোনো বর্ণনা হতে মনে করা যায় যে, এ আয়াত কুরআনের সর্বশেষ আয়াত। এ বর্ণনা সহিহ প্রমাণিত না হলেও বস্তুত পক্ষে এতটুকু প্রমাণিত যে, এ আয়াত নবম হিজরিতে নাযিল হয়েছিল।
সূরা নিসা পূর্ব হতেই একটি সম্পূর্ণ সূরা হিসেবে পঠিত হয়ে আসছিল। এ কারণে সূরার শুরুতে মিরাস সংক্রান্ত আয়াতসমূহের ধারাবাহিকতার সঙ্গে এ আয়াতকে শামিল করা হয়নি, বরং সূরার শেষে পরিশিষ্ট হিসেবে রাখা হয়েছে।
কালালা’র সম্পত্তি বণ্টন প্রসঙ্গে

গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ‘কালালা’ সম্পর্কে আলোচনা
‘কালালা’ aux শব্দের অর্থ কি, সে সম্পর্কে বিভিন্ন মত রয়েছে। কারো কারো মতে, ‘কালালা’ সে ব্যক্তি যার কোনো সন্তান নেই এবং বাপ-দাদাও জীবিত নেই। কারো কারো মতে, ‘কালালা’ সেই ব্যক্তি যে নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেছে।
সাধারণ ফিকহবিদগণ এ ব্যাপারে হযরত আবু বকর (রা)-এর মতকে সমর্থন করেছেন । তাঁর মতে, ‘কালালা’ হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যার কোনো সন্তান নেই এবং বাপ-দাদাও জীবিত নেই। কুরআন হতেও এ মতের সমর্থন পাওয়া যায় ।
কেননা কুরআনে “কালালা’র বোনকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেকের অধিকারিণী করা হয়েছে অথচ কারো পিতা জীবিত থাকলে সে বোন কোনো কিছুই পায় না। কালালা’র সম্পত্তি বণ্টন প্রসঙ্গে।
আয়াতের আর্থ-সামাজিক তাৎপর্য
সূরা নিসার ১১ ও ১২ আয়াতে মিরাসের বিস্তারিত বিধি-বিধান বর্ণিত হয়েছে। এ আয়াত প্রসঙ্গে ফিকহবিদগণ একমত হয়েছেন যে, এখানে সে সব ভাই- বোনের মিরাসের কথা বলা হয়েছে যারা মা-বাপ উভয় দিক বা বাপের দিক দিয়ে ভাই-বোন।
এর অর্থ হলো যে, সূরা নিসার দ্বিতীয় রুকুতে যে ভাই- বোনের মিরাসের উল্লেখ করা হয়েছে তারা হচ্ছেন কেবল মায়ের দিক দিয়ে ভাই বা বোন। এখানে এ কথাও স্পষ্ট যে ছেলে হোক, মেয়ে হোক, একজন সন্তান থাকলেও মৃতের ভাইবোন উত্তরাধিকার পাবে না।
মিরাসী আইন ইসলামী বিধানের একটি মূল অংশ। এটি ইসলামী অর্থনীতির বণ্টন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত রাখাই সঙ্গত হবে। ইসলাম ব্যাপক বণ্টনকে সমর্থন করেছে। কালালা’র সম্পত্তি বণ্টন প্রসঙ্গে।
মৃতের সম্পত্তির ব্যাপক বণ্টন হিংসা, বিদ্বেষ ও বঞ্চনার মনোভাব দূর করতে সাহায্য করে এবং তা সামাজিক সৌহার্দ্যের ও শান্তির সহায়ক। ব্যাপক বণ্টন অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও কল্যাণকর। মিরাসী আইনের মাধ্যমে অনেক দরিদ্র আত্মীয়ের পুনর্বাসন হয়ে থাকে।
যে সমাজে মিরাসী আইন যথাযথভাবে কার্যকর হয় সে সমাজে সংশ্লিষ্ট লোকদের পুনর্বাসন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান অনেক সহজতর হয়ে আসে আর এরা সরকারের উপরও এ ক্ষেত্রে তেমন একটা বোঝা বলে প্রতীয়মান হয় না। কালালা’র সম্পত্তি বণ্টন প্রসঙ্গে।
এর ফলে সমাজের অর্থনীতিতে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা স্বাভাবিকভাবেই সুদৃঢ় ও স্থিতিশীল হয়। অন্যদিকে ব্যাপকভাবে সম্পদ বণ্টনের ফলে সমাজে ব্যক্তিগত পর্যায়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই পুঁজিহীন মানুষের সংখ্যা কম থাকে । তাতে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ডে একটা সুস্থ ও প্রগতিশীল ধারা প্রবাহিত থাকে।