Close Menu
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

What's Hot

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023
Facebook X (Twitter) Instagram
Friday, July 18
Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest Vimeo
Subscribe Button Button
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us
iBankHubiBankHub
Home » ওশরের বিধান
Education

ওশরের বিধান

iBankHub EditorBy iBankHub EditorDecember 11, 2022Updated:July 9, 2023No Comments11 Mins Read
Share Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Reddit Telegram Email
ওশরের বিধান ইসলামী অর্থনীতির Update
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

ফসলের যাকাত বা ওশর আদায় মুসলমানদের জন্য কেবল শরীয়তের বিধানের দিক দিয়েই অপরিহার্য বা ফরজ নয়, বাংলাদেশের মতো কৃষিপ্রধান দেশে ওশর আদায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। ওশরের বিধান

এদেশের বিরাট জনগোষ্ঠী গ্রামে অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থায় বাস করে। এদেশের দারিদ্র্য দূর করা, দরিদ্রদের পুনর্বাসন করা ও তাদের ভবিষ্যতের জন্য স্বাবলম্বী করা ওশর আদায় করার উপর অনেকাংশে নির্ভর করে।

কিন্তু অত্যন্ত বেদনার কথা যে বাংলাদেশের জনগণ ওশর সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নয় । তাই তারা ওশর আদায় করে না। এভাবে শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ হুকুম এদেশে পালিত হচ্ছে না এবং তার ফায়দা থেকে এদেশের জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে।

ওশর ফরজ হওয়ার দলিল: কুরআন ও হাদিস থেকে ওশর ফরজ হওয়ার দলিল নিম্নে উল্লেখ করা যাচ্ছে। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন:

হে ঈমানদারগণ! তোমরা পবিত্র উপার্জন থেকে এবং আমরা তোমাদের জন্য জমি থেকে যা কিছু বের করি, তা থেকে ব্যয় করো । আর ব্যয় করতে গিয়ে খারাপ জিনিস দিতে ইচ্ছা করো না । কেননা তোমরা নিজেরাও তো উপেক্ষা করা ছাড়া গ্রহণ করতে প্রস্তুত হও না।

(সূরা বাকারা: আয়াত ২৬১)

ব্যয় করার এই নির্দেশ ফরজ প্রমাণ করে। জাসসাস বলেছেন, ব্যয় করো অর্থ যাকাত দাও। অন্য বিশেষজ্ঞরাও এ ব্যাপারে একমত। আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন:

তিনি আল্লাহ যিনি নানা প্রকারের গুল্মলতা ও গাছ-গাছালি সম্বলিত খেজুর বাগান সৃষ্টি করেছেন, ক্ষেত-খামার বানিয়েছেন, যা থেকে নানা প্রকারের খাদ্য উৎপাদন করা হয়, জয়তুন ও আনারের গাছ তৈরি করেছেন যার ফল দেখতে সাদৃশ্যসম্পন্ন ও স্বাদে বিভিন্ন হয়ে থাকে, তোমরা সকলে খাও এর উৎপাদন – যখন তা ধরবে এবং আল্লাহর হক আদায় কর যখন তার ফসল কেটে তুলবে।

(সূরা আনআম: আয়াত ১৪১)

ইমাম আবু হানিফা, আবু ইউসুফ, মুহাম্মাদ আল শায়াবানী, ইমাম মালিক, সাইদ ইবনুল মুসাইয়েব, তাউস, কাতাদাহ ও দাহহাকসহ অধিকাংশ মনীষীদের মতে এ আয়াতে আল্লাহর হক বলতে ফসলের যাকাত ওশরকে বুঝানো হয়েছে । এ আয়াতেও আদায় করো দ্বারা ওশর ফরজ প্রমাণিত হয়।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

যেসব জমিকে বৃষ্টির পানি ও নদীর পানি সিক্ত করে তা থেকে ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ (ওশর) এবং যেসব জমি সেচের মাধ্যমে সিক্ত হয় তা থেকে ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ (অর্ধ-ওশর) দিতে হবে।’

হযরত জাবির (রা.) থেকেও আহমদ ও মুসলিম একই ধরনের হাদিস নবী (সা.)-এর কথা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

কি কি ফসলের ওশর হয়

সূরাতুল বাকারা এবং সুরাতুল আনআম-এর উপরোল্লিখিত আয়াত ও রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত সহীহ হাদিসের সাধারণ তাৎপর্যের আলোকে জমির সব ধরনের উৎপাদনের উপর ওশর ফরজ। এসব আয়াতে ও হাদিসে বিভিন্ন ধরনের ফসলের মধ্যে পার্থক্য করা হয়নি।

এ জন্য ইমাম আবু হানিফা, দাউদ জাহেরী, ইবরাহীম নখয়ী, ওমর ইবনে আবদুল আযীয, মুজাহিদ ও হাম্মাদ ইবনে আবু সালমান মত প্রকাশ করেছেন যে জমির সব ধরনের উৎপাদনেই ওশর হবে।

ইমাম মালিক শাফেয়ীর মত হচ্ছে যা-ই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত ও সঞ্চয় করে রাখা যায় তাতেই ওশর হবে। এ মতে যা খাদ্য নয় এবং যেসব খাদ্য শুকিয়ে জমিয়ে রাখা যায় না তাতে ওশর হবে না।

ওশরের বিধান

ওশরের বিধান
ওশরের বিধান

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের প্রচলিত মত হচ্ছে যেসব ফসল মাপা যায়, সংরক্ষণ করা যায় এবং শুকিয়ে রাখা যায় তাতে ওশর হবে। (ওশরের বিধান)

এ যুগের বিখ্যাত মুজতাহিদ আলেম ইউসুফ আল কারযাভী সব মতামত ও তাদের যুক্তি আলোচনার পর কুরআনের আয়াত ও সহীহ হাদিসের সাধারণ তাৎপর্যের ভিত্তিতে সব ধরনের ফসলেই ওশর হবে বলে মত দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন:

কেবলমাত্র খাদ্য হিসেবে গ্রহণীয় জিনিসের উপরে যাকাত ধার্য সংক্রান্ত হাদিসসমূহের কোনোটিই ত্রুটিমুক্ত নয়। হয় তার সনদ বিভিন্ন, ধারাবাহিকতা ও অবিচ্ছিন্নতা নাই, না হয় কোনো কোনো বর্ণনাকারী জইফ। কিংবা যে হাদিস রাসূলে করীমের (সা.) কথা হিসেবে বর্ণিত আসলে তা কোনো সাহাবির উক্তি।

নবী করীমের (সা.) কথা হিসেবে বর্ণিত ‘শাকশবজিতে যাকাত নেই সনদের দিক দিয়ে খুব দুর্বল হাদিস। তাই তা দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। কুরআন ও হাদিসের সাধারণ ও ব্যাপক ঘোষণাবলীকে সীমিত ও সংকীর্ণ করা তো দূরের কথা।

ইমাম তিরমিযী এই হাদিস উদ্ধৃত করে লিখেছেন, ‘এই হাদিসের সনদ সহীহ নয়।’ হাদিসটিকে সহীহ মেনে নিলে হানাফীদের মতে তার ব্যাখ্যা হচ্ছে তাতে এমন যাকাত ধাৰ্য নয় যা আদায়কারী কর্মচারীদের মাধ্যমে আদায় করতে হবে।

কাজেই সব ধরনের ফসলে ওশর হবে এ মতই কুরআন, সুন্নাত ও অধিকাংশ আলেমের মত বিবেচনায় যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য।(ওশরের বিধান)

নিসাবের পরিমাণ কি

কি পরিমাণ ফসলে ওশর ফরজ হবে সে সম্বন্ধে মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম আবু হানিফার মত হচ্ছে, পরিমাণ কম হোক কি বেশি হোক ফসলের সব পরিমাণের উপরই ওশর দিতে হবে।

ইবরাহীম নখয়ী, ইয়াহইয়া ইবনে আদম ও ওমর ইবনে আবদুল আযীয থেকে একই মত বর্ণিত হয়েছে। তাদের মতের ভিত্তি হচ্ছে নবী (সা.) বর্ণিত একটি হাদিস, “আকাশের পানিতে যাই সিক্ত হবে তাতেই ওশর হবে।

কিন্তু নিম্নে উল্লিখিত হাদিসের ভিত্তিতে ইমাম মালিক, শাফেয়ী, আহমদ ইবনে হাম্বল, আবু ইউসুফ, মুহাম্মদসহ অধিকাংশ আলেম মত প্রকাশ করেছেন যে পাঁচ ওয়াসাকের পরিমাণে কোনো যাকাত হবে না।(ওশরের বিধান)

পাঁচ ওয়াসাক খেজুরের কম পরিমাণে যাকাত নেই।(ওশরের বিধান)

নাসায়ীতে আবু সাইদ খুদরী থেকে বর্ণিত হয়েছে, “কোনো ফসলে ও খেজুরে তার পরিমাণ পাঁচ ওয়াসাক না হওয়া পর্যন্ত যাকাত নেই।” এ ব্যাপারে অধিকাংশের মতই যুক্তিযুক্ত। প্রকৃতপক্ষে এসব হাদিসের মধ্যে কোনো বৈপরিত্য নেই।

কেননা আকাশের পানি যা সিক্ত করে তাতেই ওশর কথাটি দ্বারা কোন জমির উপর ওশর ধার্য হবে এবং কোনটিতে অর্ধ-ওশর ধার্য হবে সে কথার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। নিসাবের পরিমাণ কি হবে সে সম্বন্ধে এ হাদিসে ইঙ্গিত করা হয়নি। সে দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে অন্য হাদিসসমূহে।

পাঁচ ওয়াসাক বলতে কত পরিমাণ বুঝাবে এ সম্বন্ধে কিছুটা মতভেদ আছে। ৬০ ছা-এ এক ওয়াসাক হয়ে থাকে। মতভেদের কারণ হচ্ছে ছা-র পরিমাণ। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর ইউসুফ আল কারযাভী মত দিয়েছেন যে পাঁচ ওয়াসাক সমান ৬৫৩ কিলোগ্রাম অর্থাৎ ১৮ মনের মতো।

পাকিস্তানে যাকাত ও ওশর আইন প্রণয়নের সময় এ পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সর্বশেষে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে পাঁচ ওয়াসাক হবে ৯৪৮ কিলোগ্রাম বা সাড়ে ছাব্বিশ মন।

পাকিস্তানে যাকাত ও ওশর আইন প্রণয়নে বিশ্বের অনেক খ্যাতনামা আলেমের মতামত নেয়া হয়। কাজেই এ মতকে এ যুগের আলেমদের এক ব্যাপক অংশের মত বলে গ্রহণ করা যেতে পারে। আমাদের দেশেও এ মতের উপর আমল করা উচিত হবে।(ওশরের বিধান)

ওশর ও খারাজ

জমহুর ফিকাহবিদগণ মুসলমানের মালিকানাধীন সব জমির উপর ওশর ফরজ বলেছেন । কেননা কুরআন ও সুন্নাতের স্পষ্ট আয়াত ও দলিলের ভিত্তিতে কোনো মুসলমানই ওশর আদায় হতে অব্যাহতি পেতে পারে না। তারা এও মনে করেছেন যে, সরকার কর্তৃক যদি কোনো ভূমিকর বা খারাজ ধার্য করা হয় তা দিলেও ওশর দিতে প্রত্যেক মুসলমান বাধ্য।

তারা ওশর ও খারাজ একত্রে ধার্য হওয়া অবৈধ মনে করেন না। কেননা খারাজ ও ওশর দুই ভিন্ন প্রকৃতির হক । খারাজ হওয়ার কারণ হচ্ছে জমি ব্যবহার করার অধিকার। অন্যদিকে ওশর আদায়ের কারণ হচ্ছে জমির ফসল লাভ।(ওশরের বিধান)

মহুর ফিকাহবিদগণ ইবনে মসউদের মাধ্যমে নবী (সা.) হইতে বর্ণিত নিম্নোক্ত হাদিস গ্রহণ করেননি | “কোনো মুসলিমের জমির উপর ওশর ও খারাজ একসঙ্গে ধার্য করা যেতে পারে না।” ইমাম নববী বলেছেন এ হাদিসটি বাতিল ।

এর দুর্বল হওয়া সর্ব সমর্থিত । বায়হাকী বলেছেন যে এর বর্ণনাকারী ইয়াহইয়া ইবনে আম্বাসাতা যে দুর্বল বর্ণনাকারী তা সর্ব সমর্থিত । ইমাম সুয়ুতী ইবনে আব্বাস ও ইবনে আদী সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন যে ইয়াহইয়া ছাড়া আর কেউ তা বর্ণনা করেননি, সে দাজ্জাল ।

এ পর্যায়ে ইমাম আবু হানীফা মত প্রকাশ করেছেন যে, জমি যদি ওশরী হয় তবে ওশর দিতে হবে এবং যদি খারাজী হয় তবে খারাজ দিতে হবে। জমি কিভাবে ওশরী হয় এবং কিভাবে খারাজী হয় এ প্রসঙ্গে আবু ওবায়েদ কিতাবুল আমুয়ালে যা লিখেছেন তার সারাংশ হচ্ছে:

ক. যে জমির মালিকই ইসলাম গ্রহণ করবে ও তারপরও জমির মালিক থেকে যাবে সেই জমিই ওশরী জমি হবে।

খ. কোনো দেশ বিজয়ের পর সে দেশের জমি যদি মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করা হয় সে জমি ওশরী হবে।

গ. মৃত জমি ও পোড়ো জমি যদি মুসলমানরা আবাদ করে তা ওশরী হবে ।

ঘ. অন্যদিকে বিজয় বা সন্ধির পর অন্য জাতির জমি যদি তাদের নিকটই করের বিনিময়ে রাখা হয় তবে তা হবে খারাজী জমি।(ওশরের বিধান)

উপরে বর্ণিত নীতি মোতাবেক বাংলাদেশের প্রায় জমিই যে ওশরী তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ দেশের অধিকাংশ অধিবাসী অমুসলমান ছিল এবং তারা ইসলাম গ্রহণ করেছে। তারা বিপুল পরিমাণ অনাবাদী জমি আবাদ করেছে। মুসলিম সরকার হতেও তারা অনেক জমি পেয়েছে। এ সব জমিই ওশরী।

অনুমানের ভিত্তিতে মুসলমানের জমিকে খারাজী গণ্য করা যায় না। তেমনিভাবে মুসলিম বিজয়ের সময় প্রত্যেকটি জমির কি অবস্থা ছিল তা বিবেচনা করে কোনো জমিকে খারাজী গণ্য করা আজ সম্ভব নয় এবং শরীয়তের যথেষ্ট কোনো দলিলের ভিত্তিতে এমন কিছু করার মতো প্রয়োজনীয়তাও আমাদের নেই।

এ যুগের বড় হানাফী আলেম ও তাফসিরকার মুফতী মুহাম্মদ শফী এ সম্পর্কে বলেন:

(সরকার) জমির যে সরকারি খাজনা আদায় করে তা ওশর বা খারাজের শরয়ী নীতির অধীনে আদায় করে না এবং ওশর ও খারাজ নামেও আদায় করে না। আবার তার খাতে খরচ করার কোনো ঘোষণা সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়নি।(ওশরের বিধান)

এজন্য মুসলিম রাষ্ট্রের আরোপিত ইনকাম ট্যাক্স বা সরকারি খাজনা দিলে যাকাত ও ওশরের ফরজ দায়িত্ব হতে অব্যাহতি পাওয়া যায় না। এ দায়িত্ব বহাল থাকে এবং সম্পদের মালিকদের নিজ নিজ যাকাত ও ওশর বের করে তা তার খাতে ব্যয় করা অবশ্য কর্তব্য।

কাজেই বাংলাদেশের মুসলমানদের জমিকে ওশরী গণ্য করতে হবে এবং ওশর দিতে হবে। অবশ্য জনগণের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে এবং ওশর আদায়ের পরে প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য যদি জমির খাজনা তুলে দেয়ার প্রয়োজন বোধ হয় তবে তা করা খুবই সংগত হবে।(ওশরের বিধান)

যেখানে বাংলাদেশে মুসলমানদের জমির খাজনা ২০/২৫ কোটি টাকার মতো হবে সেখানে মুসলমানদের জমি হতে ওশর আদায় হতে পারে অন্তত ২৫০ কোটি টাকা। কাজেই সামান্য ভূমিকরের জন্য আমরা ওশর আদায় পরিত্যাগ কোনো অবস্থাতেই করতে পারি না। কেননা তাতে গরীবের অধিকার লঙ্ঘিত হবে।(ওশরের বিধান)

ওশরের পরিমাণ

একটি স্বাভাবিক বৎসরে বাংলাদেশে অন্তত তিন কোটি টন খাদ্যশস্য (চাল, গম ইত্যাদি) উৎপন্ন হয় । বাংলাদেশের জনগণের এক বড় অংশ ভূমিহীন কৃষক। তাদের হাতে জমি নেই। জমির অর্ধেক পরিমাণ রয়েছে সচ্ছল বা বড় কৃষকদের হাতে।(ওশরের বিধান)

কাজেই বাংলাদেশের উৎপাদিত খাদ্যশস্যের অন্তত অর্ধেক অর্থাৎ ১ কোটি টন উৎপাদন করে থাকে সচ্ছল কৃষকগণ এবং তাদের প্রত্যেকের উৎপাদনের পরিমাণ নিসাবের অতিরিক্ত হয়ে থাকে যা যাকাতযোগ্য। যদি এই ১ কোটি টনের উপর অর্ধ-ওশর (৫%) আদায় করা হয় তবে ওশরের পরিমাণ হবে ৫ লক্ষ টন যার মূল্য হবে কমপক্ষে ২৫০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে পাট, চা, রবিশস্য, তামাক ও অন্যান্য ফসল (যার যাকাতযোগ্য পরিমাণ হবে অন্তত ৫,০০০ কোটি টাকা) হতে অর্ধ-ওশর (৫%) আদায় করা হলে ২৫০ কোটি টাকার ওশর আদায় হবে।

এ হিসাবের জন্য আমরা ধরে নিয়েছি যে সব জমিতেই সেচ দেয়া হচ্ছে এবং তাই ওশর (১০%) আদায় না করে অর্ধ-ওশর আদায় করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে অনেক জমির ফসল হতে ওশর (১০%) আদায়যোগ্য হবে এবং সেক্ষেত্রে মোট ওশরের পরিমাণ আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে।(ওশরের বিধান)

ওশর সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়

ওশর আদায়ের পূর্বে জমির ফসল উৎপাদনের খরচ বাদ যাবে কি? এ পর্যায়ে আমরা জানি যে সেচের খরচকে আল্লাহর রাসূল (সা.) বিশেষভাবে বিবেচনা করেছেন এবং যে জমিতে সেচ দিতে হয় তার ফসলের ওশর ১০% না করে ৫% নির্ধারণ করেছেন।(ওশরের বিধান)

অন্যান্য খরচ বাদ দেয়ার ব্যাপারে কোনো সহীহ সুন্নাত আমাদের কাছে নেই। ইবনে হাযাম, ইমাম মালিক, ইমাম শাফেয়ী ও আবু হানীফা মত প্রকাশ করেছেন যে, আল্লাহ যে হক ধার্য করেছেন তা কুরআন বা প্রমাণিত সুন্নাত ছাড়া প্রত্যাহার করা জায়েজ নয়।(ওশরের বিধান)

হযরত ইবনে আব্বাসের মত হলো যা ফসলের জন্য ব্যয় করা হয়েছে তা বাদ দিয়ে অবশিষ্টের উপর ওশর দিতে হবে। হযরত ইবনে ওমর মনে করেন পরিবার ও কৃষিকাজ করার জন্য যে ঋণ বা খরচ করা হলো তা সবই বাদ যাবে ।

মকহুল, সুফিয়ান সাওরী, আবু উবাইদ এ মতই পোষণ করেন। সুফিয়ান সাওরী ও ইমাম আহমদ খারাজ বা ভূমিকর বাদ দেয়ার পর ওশর আদায় করার কথা বলেছেন।(ওশরের বিধান)

পাকিস্তানে যাকাত ও ওশর আইন প্রণয়নের সময় আলেমদের অধিকাংশের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে ফসল উৎপাদনকারী খরচ বাবদ সর্বোচ্চ এক চতুর্থাংশ বাদ দিতে পারবে । অবশিষ্টের উপর ওশর (১০%) দিতে হবে।

অবশ্য সেচের ক্ষেত্রে অর্ধ-ওশর (৫%) দিতে হবে। যদি কোনো জমিনে বৎসরের এক সময় সেচ এবং অন্য সময় বৃষ্টির পানি দ্বারা ফসল ফলানো হয় সে ক্ষেত্রে যে ফসল সেচ দ্বারা ফলানো হয় তার উপর অর্ধ-ওশর (৫%) এবং যে ফসল বৃষ্টির পানিতে ফলানো হয় তার উপর ওশর (১০%) দিতে হবে।

অবশ্য যদি কোনো ফসল ফলানোর সময়ের এক অংশ বৃষ্টির পানি এবং এবং অন্য অংশ সেচ দ্বারা সিক্ত হয় তাহলে বেশিরভাগ সময় হিসাবে ধরে ওশর বা অর্ধ-ওশর দিতে হবে।(ওশরের বিধান)

যদি কোনো জমিন বর্গা দেয়া হয় তাহলে কি হবে? সে ক্ষেত্রে জমির মালিক ও বর্গাদারকে তার নিজ নিজ অংশের ওশর বা অর্ধ-ওশর দিতে হবে। যদি দু’জনের একজনের ফসল নিসাব পরিমাণ হয় এবং অন্য জনের নিসাব পরিমাণ না হয় তাহলে যার নিসাব পরিমাণ হবে তাকে দিতে হবে এবং যার হবে না তাকে কিছুই দিতে হবে না। এ মতই যুক্তিযুক্ত।

ওশর পণ্যেও আদায় করা যায় এবং নগদেও আদায় করা যায়। আমাদের দেশে ধান ও গমের ওশর পণ্যে এবং অন্যান্য ফসলের ওশর নগদে অর্থাৎ ওশর হিসাবে আদায়যোগ্য পণ্যের মূল্যে আদায় করা যায়।(ওশরের বিধান)

ধান ও গমের ওশর পণ্যে আদায় করা হলে দেশের গ্রামাঞ্চলে এসব পণ্যের মজুদ গড়ে তোলা সম্ভব হবে যার মাধ্যমে দরিদ্র জনগণকে সহায়তা করা অনেক সহজ হবে। ওশর আদায় করার জন্য প্রত্যেক গ্রামে স্থানীয় জনগণ মসজিদভিত্তিক কমিটি ও অন্যান্য ব্যবস্থা করতে পারেন। মসজিদের পাশেই ওশরের ফসল রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

ওশর আদায় করার যথাযোগ্য ব্যবস্থা করা আমাদের সমাজকে দারিদ্র্যমুক্ত করার জন্য অপরিহার্য। এ ব্যাপারে আলেম, ইসলামী চিন্তাবিদ, সমাজবিদ ও অন্যান্য সবার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। এজন্য ওশর সংক্রান্ত বিস্তারিত আহকাম জনগণকে জানানো অত্যন্ত জরুরি। কেননা জনগণ এ সম্পর্কে অবহিত নয়।(ওশরের বিধান)

আরো পড়ুন: যাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা


Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
Previous Articleযাকাত ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রধান প্রধান ব্যবস্থা
Next Article দারিদ্র্য বিমোচন : ইসলামের কৌশল
iBankHub Editor
  • Website

Related Posts

Education

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023
Education

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023
Education

মাধ্যমিক শিক্ষকগণ বিষয় ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করবেন যেভাবে

October 25, 2023
Add A Comment
Leave A Reply Cancel Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Top Posts

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Categories
  • AB Bank Bangladesh (105)
  • Apps (11)
  • Banking Solution (12)
  • Education (28)
  • Palli Sanchay Bank (490)
  • Savings (9)
  • Update (16)
Stay In Touch
  • Facebook
  • YouTube
  • TikTok
  • WhatsApp
  • Twitter
  • Instagram
Most Popular

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Our Picks

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
© 2025 iBankHub. Designed by Creative IT.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.