ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সমস্যা ও সম্ভাবনা আলোচনার পূর্বে আমি এর সংজ্ঞা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আধুনিক ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ইতিহাস ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনা করতে চাই।
সংজ্ঞা
ইসলামী ব্যাংকিং হচ্ছে এমন এক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা ব্যাংকিং ক্ষেত্রে ইসলামী অর্থনৈতিক ও আর্থিক নীতিমালা প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কাজ করে। ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) মতে—
ইসলামী ব্যাংক হলো – এমন এক আর্থিক প্রতিষ্ঠান যার মর্যাদা, নিয়ম ও নীতিমালায় ইসলামী শরিয়াহ আইনের প্রতি অঙ্গীকার এবং যে কোনো কর্মকাণ্ডে সুদ গ্রহণ ও প্রদান নিষিদ্ধের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ঘোষিত হয়েছে।
১৯৮৩ সালে প্রণীত মালয়েশিয়ার ইসলামী ব্যাংকিং আইনে বলা হয়েছে-
ইসলামী ব্যাংক হলো এমন এক কোম্পানি যা ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবসায় পরিচালনা করে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবসায় মানে যে ব্যাংকিং ব্যবসার লক্ষ্য ও কর্মকাণ্ডে ইসলাম ধর্মে অননুমোদিত কোনো উপাদান যুক্ত নেই। ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
কেবল মুনাফা অর্জনই ইসলামী ব্যাংকিংয়ের উদ্দেশ্য নয় । জনগণের কল্যাণ এর লক্ষ্য । ইসলামী চেতনা হলো অর্থ, আয় ও সম্পদের মালিকানা আল্লাহর । তাই এই সম্পদ ব্যবহৃত হবে সমাজের ভালোর জন্য।
ইসলামে লাভ-ক্ষতিতে অংশীদারিত্বের যে নীতিমালা রয়েছে এবং অন্যান্য অনুমোদিত বিনিয়োগ মডেলের ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংক পরিচালিত হয়।
এতে সুদ কঠোরভাবে পরিত্যাজ্য যা সকল শোষণের মূল ও ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের জন্য দায়ী। ইসলামী ব্যাংকিং অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পে বৈষম্য দূর করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ইতিহাস
ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ইতিহাসকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, এটা যখন কেবল ধারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। দ্বিতীয়ত, যখন এটা কোথাও বেসরকারি উদ্যোগ এবং কোথাও কোথাও আইনের মাধ্যমে বাস্তবে রূপ নেয়।
ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ধারণা
সাম্প্রতিক অতীতে গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের দিকে পণ্ডিত ব্যক্তিগণ সুদমুক্ত ব্যাংকিংয়ের স্থলে ইসলামী ব্যাংকিং নিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। পরের দু’দশকে ইসলামী ব্যাংকিং অধিকতর মনোযোগ আকর্ষণ করে।
সত্তর দশকের প্রথম দিকে এ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা যায়। মুসলিম দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠান ও সরকারের সম্পত্তির কারণে বাস্তবে অনুশীলন শুরু হয় তত্ত্ব এবং যার ফল হলো ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। এই প্রক্রিয়ায় ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি)।
ইসলামী ব্যাংকসমূহের জন্মলাভ
বিভিন্ন মুসলিম দেশের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে প্রথম বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক দুবাই ইসলামিক ব্যাংক’ও প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৫ সালে। মিসর ও সুদানে ‘ফয়সাল ইসলামিক ব্যাংক’ নামে ১৯৭৭ সালে আরো দু’টি বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ।
একই বছর কুয়েত সরকার প্রতিষ্ঠা করে ‘কুয়েত ফিন্যান্স হাউজ’ । দুবাইয়ের প্রথম বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ১০ বছরের মধ্যে ৫০টিরও বেশি ইসলামী ব্যাংক জন্মলাভ করে। মুসলিম দেশ ছাড়াও ডেনমার্ক, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যে এগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়।
অধিকাংশ দেশে বেসরকারি উদ্যোগ কাজ করে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পেছনে এবং এর কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট ব্যাংকেই সীমাবদ্ধ থাকে। ইরান ও পাকিস্তানে সরকারি উদ্যোগে ইসলামী ব্যাংকিং চালু হয় এবং দেশের সকল ব্যাংক এর আওতায় আসে। এ দু’দেশই ১৯৮১ সালে ইসলামী ব্যাংকিং চালুর পদক্ষেপ নেয়।
বর্তমানে যেসব দেশে ইসলামী ব্যাংক রয়েছেঃ
০১. আফগানিস্তান ০২. আজারবাইজান ০৩. আয়ারল্যান্ড ০৪. আলজেরিয়া ০৫. আলবেনিয়া০৬. আর্জেন্টিনা ০৭. অস্ট্রেলিয়া ০৮. বাহামা ০৯. বাহরাইন ১০. বাংলাদেশ ১১. বসনিয়া হার্জেগোভিনা ১২. ব্রুনাই ১৩. কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ ১৪. চীন ১৫. সাইপ্রাস ১৬. ডেনমার্ক ১৭. ইথিওপিয়া ১৮. জিবুতি ১৯. মিসর ২০. ফ্রান্স ২১. জার্মানি ২২. গিনি ২৩. গাম্বিয়া ২৪. হংকং ২৫. ভারত ২৬. ইন্দোনেশিয়া ২৭. ইরান ২৮. ইরাক ২৯. জর্ডান ৩০. কাজাখস্তান ৩১. কেনিয়া ৩২. কিবরিস টার্কিস রিপাবলিক ৩৩. কুয়েত ৩৪. লেবানন ৩৫. লিবিয়া ৩৬. লিচেনস্টেইন ৩৭. লুক্সেমবার্গ ৩৮. মালয়েশিয়া ৩৯. মালদ্বীপ ৪০. মরিশাস ৪১. মৌরিতানিয়া ৪২. মরক্কো ৪৩. নাইজেরিয়া ৪৪. ওমান ৪৫. পাকিস্তান ৪৬. ফিলিস্তিন ৪৭. ফিলিপাইন ৪৮. কাতার ৪৯. রাশিয়া ৫০. সউদি আরব ৫১. সেনেগাল ৫২. সিরিয়া ৫৩. দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৪. শ্রিলংকা ৫৫. সুদান ৫৬. সুইজারল্যান্ড ৫৭. থাইল্যান্ড ৫৮. তানজানিয়া ৫৯. তিউনিসিয়া ৬০. ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ৬১. তুরস্ক ৬২. সংযুক্ত আরব আমিরাত ৬৩. যুক্তরাজ্য ৬৪. যুক্তরাষ্ট্র ৬৫. উগান্ডা ৬৬. ইয়েমেন ৬৭. জাম্বিয়া
ইসলামী ব্যাংকগুলোকে যেসব সমস্যার সমাধান করতে হয়
অধিকাংশ ইসলামী ব্যাংক, বিনিয়োগের জন্য মুরাবাহা, বাই মুয়াজ্জল, বাই সালাম, ইসতিসনা, হায়ার পারচেজ/লীজ এসব পদ্ধতি অবলম্বন করে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
ইসলামী ব্যাংক সর্বদা শরিয়াহ আইনের আওতায় লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। ফলে অনেক সময় অর্থনীতিবিদ ও সাধারণ জনগণ ইসলামী ব্যাংকিং ও প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের মধ্যে প্রকৃত পার্থক্য অনুধাবন করতে পারে না।
ইসলামী ব্যাংকিংয়ে বিনিয়োগের মুদারাবা ও মুশারাকা ধরন হলো আদর্শ । কিন্তু ইসলামী ব্যাংক এ দু’টো ধরন অনুসরণ করে না। এর কারণ – উপরোক্ত দু’টি ধরন প্রচলনের জন্য কোনো নিয়মতান্ত্রিক বিশ্লেষণ ও গবেষণা যেমন হয়নি তেমনি নেয়া হয়নি প্রকৃত প্রচেষ্টা। অবশ্য পেশাদাররা নিম্নোক্ত কারণগুলোকে দায়ী করেনঃ
ক) একনিষ্ঠ উদ্যোক্তার ঘাটতি,
খ) সৃজনশীল একনিষ্ঠ পেশাদারের অভাব,
গ) পদ্ধতি প্রক্রিয়া,
ঘ) একনিষ্ঠ স্পন্সরের অভাব, যারা কিনা পেশাদারদের এ ব্যাপারে চাপের মুখে রাখতে পারে,
ঙ) দক্ষ পেশাদার জনবলের অভাব।
আগাম চুক্তি বৈদেশিক মুদ্রা বুকিংয়ে সমস্যা
বাংলাদেশে মার্কিন ডলার, পাউন্ড, ইউরো ও অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার মান নির্দিষ্ট নয়। এগুলোর দাম প্রায়ই ওঠানামা করে। আমাদের অধিকাংশ আমদানি-রফতানি হয় মার্কিন ডলারে। শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলার সবসময় সামনে এগিয়ে থাকে এবং দেশের আমদানিকারকদের তুলনায় রফতানিকারকরা ভালো অবস্থায় আছেন।
ভারী প্রকল্প-যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে এক বছর বা ৬ মাস লাগতে পারে। এমন দীর্ঘ সময়ের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার মানের তারতম্য সামলানোর জন্য বাংলাদেশে আগাম বুকিং প্রয়োজন হয়। কিন্তু শরিয়াহর বিধি-নিষেধের কারণে ইসলামী ব্যাংক আগাম চুক্তি করে বৈদেশিক মুদ্রা মানের তারতম্য এড়ানোর ঝুঁকি দূর করতে পারে না।
আগাম বুকিংয়ের অনুমতি শরিয়াহ দেয় না। শরিয়াহ অনুযায়ী মুদ্রা বিনিময় হতে হবে শরিয়াহ কর্তৃক ‘সরফ’-এর লিখিত সুনির্দিষ্ট শর্তের ভিত্তিতে। ইনল্যান্ড বিল পারচেজ/ফরেন বিল পারচেজ ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে আরেকটি সমস্যা।
দেখা যায় যখন রফতানিকারকরা তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণের জন্য বিল পরিপক্বতা লাভের আগেই রফতানিকৃত পণ্যের মূল্যের জন্য ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়।
এ ক্ষেত্রে প্রতি বছর ব্যাংকে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু এটা কেন বা কি ধরনের বিনিয়োগ? বিল সংগ্রহের সামান্য ফি ছাড়া ব্যাংক রফতানিকারককে দেয়া তহবিলের জন্য কিছু গ্রহণ করতে পারে না ।
ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতির সাথে পরিচিতির অভাব। ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
গত ৪০ বছর ধরে ইসলামী ব্যাংকের বিস্তার সত্ত্বেও মুসলিম ও অমুসলিম বিশ্বের অনেকেই বোঝেন না ইসলামী ব্যাংকিং আসলে কি, এটা প্রথম সমস্যা। অথচ ইসলামী ব্যাংকিংয়ের মূলনীতি পরিষ্কার। টাকা থেকে টাকা বানানো ইসলামী আইনের পরিপন্থী।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
ব্যবসা ও ভূসম্পত্তির মালিকানা থেকে সম্পদ আয় করতে হবে। তবে কোনটি ইসলামী ব্যাংকিংয়ের উৎপাদন, আর কোনটি নয় তার কোনো একক সংজ্ঞা আজো নেই। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের একক সংজ্ঞাও এখনো কেউ দিতে পারেনি।
এখানে একটি বড় ব্যাপার হচ্ছে, প্রতিটি ব্যাংকের শরিয়াহ কাউন্সিল বা বোর্ড নির্ধারণ করে কোনটি ইসলামী ব্যাংকিং আর কোনটি নয়, ব্যবসায় কোনটি গ্রহণযোগ্য আর কোনটি ব্যাংক ও গ্রাহক উভয়ের জন্য ঝুঁকিপুর্ণ আরো সহজভাবে বলতে গেলে, কি হবে আর কি হবে না।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
এই অনিশ্চয়তার কারণে ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতিতে এখনো মান প্রমিতকরণ করা যায়নি । নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের জন্যও এটা কঠিন । কারণ, তারা জানতে চান তারা আসলে কিসের কর্তৃত্ব প্রদান করছেন। বাজারে নতুন আসা গ্রাহকদের পরিচিত করে তোলার বিষয়টিও এই ব্যাংকের জন্য একটি অতিরিক্ত সমস্যা।
পোর্টফলিও ব্যবস্থাপনা
যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক প্রতিনিধির আচরণ নির্ধারিত হয় অতীত অভিজ্ঞতা ও বর্তমান সীমাবদ্ধতা দ্বারা ৷ অনেক দেশেই ইসলামী ব্যাংক এখনো অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের মাধ্যমে বেড়ে উঠছে । সীমাবদ্ধতা হলো, অনেক দেশেই ইসলামী ব্যাংক তাদের পছন্দসই ও সবচেয়ে অনুকূল সংজ্ঞা বেছে নিতে পারে না।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
ফলে গ্রাহকের চাহিদা থাকলেই তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যায় না এবং বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিবেশে কাঠামোগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নমনীয়তা প্রদর্শন করা সম্ভব হয় না। এছাড়াও ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় পরিচিত পছন্দসই পরিবর্তনও করা যায় না।
যেমন, পরিপক্কতা লাভের পরও স্বল্পমেয়াদী তহবিলের একটা অংশ সাধারণত উত্তোলন করা হয় না। মধ্যম বা দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের জন্য এই তহবিল ব্যবহার করা হয়। ম্যাচিউরিটি ট্রান্সফরমেশন বা পরিপক্কতা রূপান্তরের পূর্বশর্ত হলো – অপ্রত্যাশিত প্রত্যাহার বা অন্য কোনো কারণে একটি ব্যাংক বাইরের উৎস থেকে তারল্য গ্রহণে সক্ষম হবে।
সুদমুক্ত ইসলামী অর্থ ও পুঁজিবাজার না থাকায় এ ধরনের কার্যকর পরিপক্কতা রূপান্তরের পূর্ব শর্ত পূরণের মতো যথার্থ ব্যবস্থা ইসলামী ব্যাংকগুলোর নেই। অন্যদিকে সুদমুক্ত বন্ড মার্কেট বা ইসলামী ফিনান্সিয়াল পেপারসের জন্য একটি মাধ্যমিক বাজার থাকলে ইসলামী ব্যাংক টার্ম ট্রান্সফরমেশন জোরদার করতে পারে।
এখনো অনেক আর্থিক পদ্ধতি উদ্ভাবন ঘটাতে হবে, তা না হলে আর্থিক মধ্যস্থতা বিশেষ করে ঝুঁকি ও ম্যাচিউরিটি ট্রান্সফরমেশন যথাযথভাবে কাজ করবে না।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
নিয়ন্ত্রণকারী পরিবেশ
ইসলামী ব্যাংক ও আর্থিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সম্পর্ক একটি স্পর্শকাতর বিষয়। প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের জন্য তৈরি একই আইন-কানুনের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও তদারক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, ইসলামী ব্যাংক এমন এক পরিবেশে জন্মলাভ করেছে যেখানে আইন, প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ও মনোভাব গড়ে উঠেছে সুদভিত্তিক অর্থনীতিতে সহায়তা করার জন্য।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
ইসলামী ব্যাংকগুলোর লাভ-লোকসানভিত্তিক কর্মতৎপরতা, আসলে বর্তমান দেওয়ানী আইনের আওতায় পুরোপুরি আসে না। বিরোধ নিষ্পত্তির প্রয়োজন দেখা দিলে, দেখা যায় দেওয়ানী আদালত ইসলামী ব্যাংকিং তৎপরতার যৌক্তিকতা সম্পর্কে যথাযথভাবে জ্ঞাত নয়।
ক) আমানত, যা লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষা করে। এতে রয়েছে শতভাগ রিজার্ভ এবং তা নিরাপদ। ফলে ঝুঁকি এড়ানো যায় ৷
খ) লাভ-লোকসানে অংশীদারিত্ব বা ইক্যুইটি হিসাবে আমানতকারীদের বিবেচনা করা হয় ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডারদের মতোই । এখানে লাভের হারের বা শেয়ারের মূল্যের নিশ্চয়তা নেই।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
অমুসলিম দেশগুলোতে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের অনুমতিদানের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো খুবই কঠোর। এসব দেশে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি কর্তৃপক্ষের বাড়তি শর্তাবলীও পূরণ করতে হয় (আইনগত বিধি- নিষেধ ছাড়াও বিভিন্ন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অমুসলিম দেশে ইসলামী ব্যাংকিং পরিচালনাকে দুরূহ করে তোলে)।
মুসলিম দেশেও অর্থনৈতিক বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হয় ইসলামী ব্যাংকের । তহবিল যোগান ছাড়াও গ্রহণযোগ্য বিনিয়োগ ক্ষেত্ৰ খুঁজে বের করা ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
তারল্য উপাদানের অনুপস্থিতি
অনেক ইসলামী ব্যাংকে ট্রেজারি বিল ও অন্যান্য বিপনণযোগ্য সিকিউরিটিজের মতো লিকুইডিটি ইন্সট্রুমেন্ট বা তারল্য উপকরণের অভাব রয়েছে । এসব উপকরণ তারল্য ঘাটতি বা অতিরিক্ত তারল্য সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ে ভিন্নতর পদ্ধতিতে ইসলামী ব্যাংক কাজ করায় এই অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠেছে। এই অসামঞ্জস্যতার ফলে ইসলামী ব্যাংকে যদি তারল্য ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একে নিয়ন্ত্রণ বা সমর্থন যোগাতে পারে না।
তাই ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সাথে জড়িত কর্তৃপক্ষের উচিত তারল্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা ও সমাধানের পথ খোঁজা।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
আধুনিক প্রযুক্তি ও সংবাদ মাধ্যমের ব্যবহার
গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য অধিকাংশ ইসলামী ব্যাংকেরই প্রডাক্ট এসেনশিয়ালের কোনো বৈচিত্র্য নেই। কোনো পণ্যের মানোন্নয়ন এবং এর ব্যবহার বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না।
আধুনিক প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ইসলামী ব্যাংকে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা সাধন, ব্যবস্থাপনা ও নীতি নির্ধারণী কাঠামো ঢেলে সাজানো এবং সর্বোপরি এর প্রতিটি পর্যায়ে আধুনিক প্রযুক্তির প্রচলন ঘটাতে হবে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক ইসলামী ব্যাংকের প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ও প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে। অথচ এটা শুধু সম্ভাবনার পূর্ণ পরিস্ফুটনের জন্য নয়; তীব্র প্রতিযোগিতা, স্পর্শকাতর বাজার এবং সচেতন গ্রাহকদের এই যুগে ব্যাংকগুলোর টিকে থাকার জন্যও জরুরি।
পেশাদার ব্যাংকারের প্রয়োজনীয়তা
ইসলামী ব্যাংকে পেশাদার ব্যাংকার বা ব্যবস্থাপকদের প্রয়োজনীয়তা এখন পর্যন্ত গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা হচ্ছে না । এখনো অনেক ব্যাংক মালিক নিজেই সরাসরি পরিচালনা করেন বা এমন লোকদের দ্বারা পরিচালিত হয় যাদের ইসলামী ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তেমন অভিজ্ঞতা নেই অথবা যারা প্রচলিত ব্যাংকিং পদ্ধতিতেই অধিক অভ্যস্ত।
ফলে অনেক ইসলামী ব্যাংকই চ্যালেঞ্জ ও তীব্র প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় সক্ষম হয় না। পেশার প্রতি একনিষ্ঠ যোগ্য ব্যাংকারদের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়িয়ে ব্যাংকিং কর্মকাণ্ডে পেশাদারিত্ব তৈরি করা প্রয়োজন।
ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত পেশাদারদের বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে তাদের শিল্প, প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে গভীর ধারণা অর্জন করতে হবে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
ব্যবসায়িক উদ্যোগের পাশাপাশি বিনিয়োগের নৈতিক ও ধর্মীয় প্রয়োগ সম্পর্কেও তাদের ধারণা থাকতে হবে। ব্যাংকিং পেশাদারদের ইসলামিক ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রশিক্ষণও দিতে হবে।
অধিকাংশ ব্যাংকের জনশক্তি প্রচলিত অর্থনীতিতে প্রশিক্ষিত। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাদের দূরদৃষ্টি ও নিষ্ঠায় ঘাটতি রয়েছে । বর্তমান ইসলামী ব্যাংকগুলো অনেকটা স্থবির। গতিশীল কর্মসূচির অভাবই শুধু নয় এসব ব্যাংক এখন পর্যন্ত সংবাদ মাধ্যমকেও যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারছে না।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
এই বিশ্বে যে ইসলামী ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে মুসলমানরাও সে ব্যাপারে খুব একটা সচেতন নয় । নিজেদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে ইসলামী ব্যাংকগুলো এখন পর্যন্ত মিডিয়াকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেনি। ইসলামী ব্যাংকগুলোর কর্তৃপক্ষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টির ওপর নজর দেয়া উচিত।
ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা

প্রচলিত ব্যাংকারদের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ইসলামী পণ্ডিতদের দৃষ্টিভঙ্গি গুলিয়ে ফেলা
পেশাগত প্রকৃতির কারণেই ব্যাংকাররা বাস্তববাদী ও প্রয়োগমুখী। ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত ব্যাংকারদের প্রবণতা হচ্ছে ইসলামী নীতিগুলোকে উপস্থিত লেনদেনের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে এমনভাবে সাজিয়ে নেয়া। অধিকন্তু প্রতিদিনের ব্যস্ততার ফাঁকে কোনো গবেষণা করার সময় তাদের কমই থাকে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
অথচ এ গবেষণা ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারত । অন্যদিকে যেসব বুদ্ধিজীবী ইসলামী ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স নিয়ে গবেষণা করেন তাদের মনোভাব অনেকটা পদ্ধতিগত। অর্থাৎ কি হওয়া উচিত, এটা নিয়েই তারা অধিক ব্যস্ত। ব্যাংকিং বা গ্রাহকদের চাহিদা সম্পর্কে তাদের খুব কম জনেরই ধারণা আছে।
ইসলামী অর্থবাজারের অনুপস্থিতি
বাংলাদেশে ইসলামী অর্থবাজারের অনুপস্থিতির কারণে ইসলামী ব্যাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত তহবিল বিনিয়োগ করতে পারে না। এই তহবিল ব্যবহার করা যায় না বলে আয়ের বদলে তা অলস ফেলে রাখতে হয়।
কারণ, বাংলাদেশে সরকারি ট্রেজারি বিল, অনুমোদিত সিকিউরিটিজ ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিল – সব কিছুই সুদ উৎপাদক। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সরকার ‘বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ইসলামী ইনভেস্টমেন্ট বন্ড’ চালু করে । ইসলামী ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারে। এর ফলে এ সমস্যার কিছুটা সমাধান হয়েছে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
উপযুক্ত দীর্ঘমেয়াদী সম্পদের অনুপস্থিতি
ইসলামী ব্যাংকগুলোর উপযুক্ত দীর্ঘমেয়াদী সম্পদের অনুপস্থিতির প্রমাণ স্বল্পমেয়াদী লেনদেনযোগ্য আর্থিক উপাদনের স্বল্পতার মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আন্তঃব্যাংক বাজারের মতো কোনো স্থান নেই যেখানে কোনো ব্যাংক গিয়ে দৈনন্দিন উদ্বৃত্ত তহবিল হাজির করতে পারে অথবা সাময়িক তারল্য ঘাটতি পূরণের জন্য যেখান থেকে তহবিল গ্রহণ করা যায়।
আবার পরিপক্কতার আগ পর্যন্ত যেখানে লাভের হার জানা যায় না সেখানে ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট লেনদেনের ব্যবস্থা করাও কঠিন। তাছাড়া বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো নতুন ধরনের ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করতে পারে কি না তাও পরিষ্কার নয়। প্রকৃত অর্থে এসব কার্যকারণ বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিংকে বেশ প্রতিকূল অবস্থায় ফেলেছে।
সহায়ক ও সংযোগ প্রতিষ্ঠানের স্বল্পতা
যত সমন্বিতই হোক না কেন, কোনো ব্যবস্থাই কেবল নিজস্ব উপায়-উপাদানের ওপর টিকে থাকতে পারে না। উপযুক্ত প্রকল্প চিহ্নিত করার জন্য ইসলামী ব্যাংকিং লাভজনকভাবেই অর্থনীতিবিদ, আইনজীবী, বীমা কোম্পানি, ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা, নিরীক্ষক ইত্যাদি পেশাদারের সেবা গ্রহণ করতে পারে।
গ্রাহকদের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ব্যাংকগুলোর গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ফোরাম থাকা প্রয়োজন। পুরোপুরে ইসলামী ব্যাংকিংমুখী এ ধরনের সহায়ক সেবা এখনো বাংলাদেশে গড়ে উঠেনি।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
বিদেশী ব্যাংকের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা
বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকগুলো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ যে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তা হলো, বিদেশী ব্যাংকগুলোর সাথে তাদের সম্পর্ক কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
আরো সহজভাবে বলতে গেলে, কিভাবে আন্তর্জাতিক ব্যবসা তৎপরতা চালানো হবে। এটা অবশ্যই নতুন কোনো আর্থিক ইনস্ট্রুমেন্ট তৈরির সাথে জড়িত যে ইনস্ট্রুমেন্ট একই সাথে ইসলামী নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সুদভিত্তিক ব্যাংক, তথা বিদেশী ব্যাংকগুলোর কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে।
দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন
সরকারের মূল্য নির্ধারণ নীতির সাথে ইসলামী ব্যাংকগুলো গভীরভাবে যুক্ত থাকে কোনো যৌক্তিকতা ছাড়াই। উদ্যোক্তাদের মূল্যস্তর বাড়িয়ে দেয়ার মতো গোপন কস্ট ও ইনপুট থেকে এরা লাভবান হতে পারে না।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
অন্যদিকে, বিনিয়োগকৃত প্রকল্পের ব্যর্থতার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসলামী ব্যাংকগুলো লাভসহ তহবিল ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা, প্রকল্পের সাফল্যের ওপর নির্ভর করে। অসততা ও উপেক্ষার মাধ্যমে অংশীদারের কাছ থেকে নিরাপত্তা আদায় করা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয় ৷
সম্ভাবনা
আমার মতে, ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। দেশের ব্যাংকিং খাতের অন্তত ২১-২৪ ভাগ বাজার ইসলামী ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণে। এর পরিধি ক্রমেই বাড়ছে। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রতি প্রচলিত ব্যাংকগুলো ঝুঁকছে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
বর্তমানে ৮টি ইসলামী ব্যাংক ও ১৭টি প্রচলিত ব্যাংকে পৃথক ইসলামী ব্যাংকিং উইং চালু আছে। এদের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকও রয়েছে। সারাদেশে শুধু ইসলামী ব্যাংকেরই ২৮০টি শাখা রয়েছে। ৮টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক মিলিয়ে এ সংখ্যা ৭৬৪ (আগস্ট ২০১৪)।
সব দেশে অবস্থা সমান না-ও হতে পারে। যদি কোনো একটি দেশেও ইসলামী ব্যাংক সফল হতে পারে, তাহলে আমার মতে প্রত্যেক মুসলিম দেশের অবস্থা একই হবে।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
এর মানে, কোনো দেশে প্রথম ইসলামী ব্যাংকটিকে দক্ষতার সাথে পরিচালিত এবং সফল হতে হবে। যাতে, জনগণ এর ওপর আস্থা রাখতে পারে । নতুন ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পুরনোগুলোর উচিত দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা ধার দিয়ে সাহায্য করা।
উপরে যেসব সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা থেকে উত্তরণ অসম্ভব কোনো বিষয় নয়। আরও আন্তরিকতাপূর্ণ চেষ্টা ও গবেষণার মাধ্যমে এর অধিকাংশ সমস্যা দূর করা সম্ভব।ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা।
আইডিবি, ওআইসি, ফিকাহ একাডেমি, আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ইসলামী ব্যাংকের উচিত ইসলামী ব্যাংকিং, ফাইন্যান্স ও অর্থনৈতিক ইস্যুগুলোতে গবেষণার জন্য আরো খরচ করা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারি সহায়তার প্রয়োজন হবে ।