Close Menu
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

What's Hot

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023
Facebook X (Twitter) Instagram
Friday, July 18
Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest Vimeo
Subscribe Button Button
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us
iBankHubiBankHub
Home » ইসলামী অর্থনীতি: দর্শন ও কর্মকৌশল
Apps

ইসলামী অর্থনীতি: দর্শন ও কর্মকৌশল

iBankHub EditorBy iBankHub EditorDecember 8, 2022Updated:July 9, 2023No Comments12 Mins Read
Share Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Reddit Telegram Email
ইসলামী অর্থনীতি: দর্শন ও কর্মকৌশল ইসলামী অর্থনীতির Update
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

ইসলামী অর্থনীতি বর্তমানে একটি বিজ্ঞানে পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এ কথাও বলা যায় যে, অর্থনীতি সাবজেক্টের বয়সও খুব বেশি নয় । মাত্র আশি বা নব্বই বছর। এর পূর্বে এটা পলিটিক্যাল সায়েন্সের অন্তর্ভুক্ত ছিল, তখন এটাকে পলিটিক্যাল ইকোনমি (Political Economy) বলা হতো।

গত পঞ্চাশ-ষাট বছর ধরে ইসলামী অর্থনীতির উপর ব্যাপক কাজ হচ্ছে। বেশকিছু বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সিনিয়র অর্থনীতিবিদ এই বিষয়ে কাজ করছেন।

এদের মধ্যে রয়েছেন প্রফেসর খুরশীদ আহমদ, ড. নাজাত উল্লাহ সিদ্দিকী, প্রফেসর ড. ওমর চাপরা, ড. মনজের কাহাফ, ড. তরিকুল্লাহ খান, ড. মুনাওয়ার ইকবাল প্রমুখ।

এছাড়াও অন্য স্কলাররা এই বিষয়ে অনেক কাজ করেছেন। আস্তে আস্তে ইসলামী অর্থনীতি একটি পূর্ণ বিজ্ঞানে (Science) পরিণত হয়েছে।

ইসলামী অর্থনীতির ওপর আলোচনা করতে গেলে ইসলামী অর্থনীতির যে দর্শন বা স্ট্র্যাটেজি সেই বিষয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন।

ইসলামী অর্থনীতির দর্শন হলো এই অর্থনীতির ভিত্তি অথবা তার স্ট্র্যাটেজি বা কর্মকৌশলের ভিত্তি কেননা, একটি বিল্ডিং যেমন নির্ভর করে তার ফাউন্ডেশনের ওপর, ফাউন্ডেশনটাই বলে দেয় বিল্ডিংটি কি রকম হবে, তেমনিভাবে ইসলামী অর্থনীতির দর্শন বলে দেয় যে, তার স্ট্র্যাটেজিটা কি হবে বা কি হওয়া উচিত।

কিন্তু সেই দর্শন এবং কর্মকৌশল আলোচনার পূর্বে আমি মনে করি বর্তমান বিশ্বে যা চলছে তা সংক্ষেপে আলোচনা করা দরকার । বর্তমানে বিশ্বের সর্বাধিক চলিত (Ruling) অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হচ্ছে ক্যাপিটালিজম (Capitalism)।

আমরা যদি এই ক্যাপিটালিজমের সমস্যাগুলো বুঝতে পারি তা হলেই ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্ব বুঝতে পারব। এটা এই জন্যেই প্রয়োজন যে, বর্তমান রুলিং আইডিওলজি (Ruling Ideology) দৃশ্যত খুব শক্তিশালী, খুব সফল বলে মনে হয়।

অনেকের এও মনে হতে পারে যে, এর বুঝি কোনো দুর্বলতা নেই । কিন্তু এ কথাটা সত্য নয় এবং এ কথাটাই আমি এখানে আলোচনা করতে চাই।

ক্যাপিটালিজমের বয়স ষোড়শ শতাব্দী থেকে ধরা হয়। প্রায় পাঁচশ’ বছর এর বয়স। এই পাঁচশ বছরে ক্যাপিটালিজম যে দুনিয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে তা অস্বীকার করা যাবেনা, তেমনি এ কথাও অস্বীকার করা যাবে না যে, ক্যাপিটালিজম বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য (Poverty), অসমতা (Unequality) দূর করতে পারেনি।

কাজেই, ক্যাপিটালিজম দোষমুক্ত বা সমস্যামুক্ত এটা যেমন অতীতের ক্ষেত্রে বলা যায় না, তেমনি আজকেও বলা যায় না।

আমরা গত বিশ-পঁচিশ বছরে পুঁজিবাদী বিশ্বের অনেক সংকট দেখেছি। সাউথ ইস্ট এশিয়ায় বিরাট অর্থনৈতিক ক্রাইসিস দেখলাম বিগত শতাব্দীর একেবারে শেষের দিকে এবং সেটা এখনো চলছে। ল্যাটিন আমেরিকাতেও আমরা বিভিন্ন সময় ক্রাইসিস দেখেছি। ২০০৮ সন থেকে চলছে বিশ্বজোড়া নতুন করে অর্থনৈতিক সংকট।

ক্যাপিটালিজম আমরা কমবেশি সবাই বুঝি। বিভিন্ন অর্থনৈতিক মতবাদ প্রধানত পাশ্চাত্যেই তৈরি হয়েছে এবং ডেভেলপ করেছে। পাশ্চাত্যের পন্ডিতরাই এর ওপর বেশি কাজ করেছেন।

এ কথাগুলো শুধু ক্যাপিটালিজমের ক্ষেত্রেই সত্য নয়, সোস্যালিজমের ক্ষেত্রেও সত্য। ওয়েলফেয়ার ইকোনমিকস (Welfare Economics) নামে যা বিশ্বে চলছে, সেটাও পাশ্চাত্যেরই অবদান। পাশ্চাত্যের চিন্তাবিদরাই এসব ধারণা নিয়ে আসছেন।

ক্যাপিটালিজমের ভিত্তি ছিল বা এর পেছনে শুরুতে কাজ করত খৃস্টান এথিকস বা খৃস্টান নৈতিকতা। কারণ, পাশ্চাত্যের যেখানে এর বিকাশ ঘটে সেই সমাজ মূলত খৃস্টান সমাজ ছিল।

মৌলিকভাবে জনগণ খৃস্টীয় এথিকসে বিশ্বাস করত। ফলে ক্যাপিটালিজমের অর্থনৈতিক নীতিমালায় যা-ই ত্রুটি থাকুক না কেন, খৃস্টান এথিকস তাকে মডারেট করতো, তার খারাপ প্রভাবকে সংযত করত, তাকে নিয়ন্ত্রণ করত।

পরবর্তীকালে কোনো কোনো লেখকের দ্বারা অষ্টাদশ শতাব্দীতে মুক্তবুদ্ধির (Enlightenment) যে আন্দোলন শুরু হয় তার মূল দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্মকে জীবনের মৌলিক কর্মকাণ্ড থেকে বাদ দেয়ারও চেষ্টা করা হলো। এই আন্দোলনের কারণে বাস্তবে সেকুলারিজম প্রাধান্য পায় এবং সমাজ সেক্যুলারিস্ট হয়। সেখানে মোরালিটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে এবং যুক্তিকে (Reason) প্রাধান্য দেয়া হয়।

এতে মনে করা হলো যুক্তিই সবকিছুর সমাধান করতে পারে। যদিও আমরা জানি, যুক্তিবাদে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এর দ্বারা সব সমাধান করা যায় না। যুক্তিবাদ সত্ত্বেও মানুষের ভিতর মতবিরোধ দেখা দেয় এবং আজকে যেটা যুক্তিসংগত মনে হয় কালকে সেটা যুক্তিসংগত থাকে না।

এই সমস্ত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও একটা সময় গেছে যখন রিজনকে প্রায় পূজা করা হতো। আল্লাহর স্থানে, গড়ের স্থানে রিজনকে নিয়ে আসা হলো। সেটা ভ্রান্ত ছিল, বিভ্রান্তি ছিল, ভুল ছিল।

এনলাইটেনমেন্ট মুভমেন্টের কারণে (ক্যাপিটালিজমের ভিত্তি হওয়ার কারণে বা এর ফল স্বরূপ) চলে আসল ম্যাটেরিয়ালিজম (Materialism), ভোগবাদ, ব্যক্তিবাদ, স্বার্থপরতার মতো বস্তুবাদের বিষয়সমূহ। এর ফলে আসে বেশি হাই কনজাম্পশান।

অন্যদিকে এটা একটা সামাজিক ডারউইনিজম সৃষ্টি করল। আমরা ডারউইনিজম সম্পর্কে জানি। ডারউইনিজম হচ্ছে, জীব জগতের যে ধারণা ডারউইন থেকে এসেছে বা ডারউইন উদ্ভাবন করেছেন – (Natural selection and servival of the fittest)।

অর্থাৎ জীবজগত সম্পর্কিত ডারউইনের ধারণাই ডারউইনিজম। এখন সোস্যাল ডারউইনিজম অর্থাৎ সামাজিক ক্ষেত্রেও ডারউইনিজম বিশ্বব্যাপী এত গুরুত্ব পেয়েছে এনলাইটেনমেন্ট মুভমেন্ট এবং ম্যাটেরিয়ালিজমের বিকাশের কারণে।

ক্যাপিটালিজমের মাধ্যমে এই ধারণা সৃষ্টি হয় যে, অর্থনীতিতেও Natural selection হবে এবং এখানে শুধু ফিটেস্টরাই সারভাইভ করবে। যোগ্যরাই বাঁচবে। অর্থনীতিতে, যদি তা-ই হয়, তাহলে তার মানে হবে প্রকৃতপক্ষে দুর্বলের কোনো স্থান থাকবে না, দরিদ্রের স্থান থাকবে না। যদি থাকেও তাহলে তাদের খুব সংকীর্ণ স্থান থাকবে।

সোজা কথা, বিশ্ব অর্থনীতি ধনীদের, যোগ্যের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। অর্থাৎ ম্যাটেরিয়ালিজম, এনলাইটেনমেন্ট মুভমেন্টের কারণে, সোস্যাল ডারউইনিজমের কারণে পুঁজিবাদ একটি ডকট্রিনে পরিণত হয়। অর্থনীতিতে শুধু যোগ্যরাই টিকে থাকবে – সেটাই একটি মতাদর্শে বা দর্শনে পরিণত হয় ।

এতে দরিদ্রের প্রতি খৃস্টান ইথিকসের কারণে যে মায়া-মহব্বত ছিল, তাদের প্রতি যে দায়িত্ববোধ ছিল, সেটা উঠে গেল। এমনকি দর্শনের মাধ্যমে সেটা উঠে গেল । তখন তারা দরিদ্র মারা গেলে কি হবে সে যুক্তি খাড়া করতে পারল না।

যোগ্যদের টিকে থাকার ফলে দরিদ্ররা মরে যাবে । এই ধরনের ফলাফল অষ্টাদশ শতাব্দীর মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনের কারণে দেখা দিয়েছিল।

ক্যাপিটালিজমের থিওরীর পেছনে কতগুলো অগ্রহণযোগ্য ধারণা (Concepts) ছিল যেগুলো আমাদের জানা দরকার। যেগুলো প্রকৃতপক্ষে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।

যেমন প্রথমত, অর্থনীতির আইনগুলো হচ্ছে ফিজিক্যাল ল’-এর মতো। যেমন যেভাবে পৃথিবী ঘুরছে বা সূর্য যেভাবে চলছে নিজস্ব নিয়মে অথবা বায়ু প্রবাহ, নদী বা সমুদ্রের গতি প্রভৃতি ফিজিক্যাল ল’জ যেমন সঠিক তেমনি ইকোনমিক ল’জ সঠিক।

এখানে অর্থনীতির আইন ফিজিক্যাল আইনের মতোই-এরকম একটা ধারণা নিয়ে আসা হলো। তারা এগুলো বিশ্বাস করে। কিন্তু এটা একেবারে সত্য নয়। আমরা জানি, বাজার ক্রমাগত পরিবর্তন হতে থাকে।

যেই পরিবর্তন আমাদের সোলার (Solar ) সিস্টেমে হয় না বা আমাদের ফিজক্যাল ল’তে হয় না। অথচ যেকোনো বাজার ব্যাপক পরিবর্তনের সম্মুখীন। সুতরাং এ রকমই একটা ভুল ধারণার ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে ক্যাপিটালিজম।

দ্বিতীয়ত, মানুষের কাজের মোটিভেশন বা কাজ করার প্রেরণাটা কি? সে সম্পর্কে তারা বলে, মানুষের কাজের মোটিভেশন হলো শুধু তার স্বার্থপরতা (Pecuniary Interest)। মানুষ মূলত স্বার্থপর এবং তার স্বার্থপরতা, স্বার্থ উদ্ধার করাই হচ্ছে তার প্রকৃত মোটিভেশন।

এটাকেই তারা টেকনিক্যালি বলে Rational Economic Man। মানুষ হচ্ছে যুক্তিবাদী (Rational)। এ যুক্তির পরিচয় হচ্ছে সে স্বার্থের জন্য কাজ করে। তবে একথা ঠিক যে, মানুষের মধ্যে স্বার্থপরতা রয়েছে এবং স্বার্থ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

মানুষ কেবল স্বার্থের জন্যেই কাজ করে? এ কথা সত্য নয়। তাহলে দুনিয়ায় এত ত্যাগ (Sacrifice) মানুষ করতে পারত না। পরিবারের জন্যে, সমাজের জন্যে মানুষ এত ত্যাগ করত না। এত চ্যারিটি দুনিয়াতে থাকতো না।

তৃতীয়ত, তারা একটি মূল্যবোধহীন অর্থনীতির জন্ম দিল। তারা একটি ডকট্রিন খাড়া করল পজিটিভিজম (Positivism) নামে। পজিটিভিজম হলো, অর্থনীতিতে কোনো মূল্যবোধ নেই।

অর্থনীতিতে মূল্যবোধ এলেই অর্থনীতি প্রভাবিত হয়ে যাবে। অর্থনীতি তার ন্যাচারাল কোর্স থেকে সরে পড়বে। অর্থনীতি একটি বিজ্ঞান হিসেবে থাকবে না।

কিন্তু অর্থনীতির কার্যক্রমে কোনো মূল্যবোধ থাকবে না? এরকম দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত মারাত্মক। আর তা-ই যদি হয় তাহলে কোন যুক্তিতে আমরা দরিদ্রের জন্য কাজ করব? দারিদ্র্য কেন দূর করব? কেন আমরা নিরক্ষরতা দূর করব? কেন আমরা বঞ্চিত জনগণের জন্য কাজ করব? এ সবই তো মুল্যবোধের সাথে সম্পর্কিত।

সুতরাং পজিটিভিজম ধারণা ক্যাপিটালিজমে প্রবেশ করল যে, অর্থনীতিতে কোনো মূল্যবোধ নেই । ক্যাপিটালিজমের অপর নাম মূল্যবোধহীন অর্থনীতি । এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না অথচ এটাই চলছে ক্যাপিটালিজমের নামে।

আবার বলা যায়, পুরোপুরি চলছে না। কারণ, মানুষের মানবিকতা কখনো কখনো এসব বিষয় কার্যকর হতে দেয় না। কারণ এগুলো সব আন- ন্যাচারাল (অস্বাভাবিক) ধারণা। এ জন্যে হয়ত বা এগুলো থিওরিতে আছে তবে বাস্তবে তা পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব হয় না ৷

চতুর্থত, ক্যাপিটালিজম মার্কেট সিস্টেমের উপর গুরুত্ব দেয়। মার্কেট সিস্টেমের গুরুত্ব সত্ত্বেও তার অনেক সমস্যা রয়েছে। কিন্তু সেটা তারা স্বীকার করে না। ক্যাপিটালিজমের মার্কেট সিস্টেমের অনেক ভালো দিক আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

এলোকেশন অব রিসোর্সের ক্ষেত্রে মার্কেট একটি ভালো কাজ করে। কিন্তু আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে, ক্যাপিটালিজমে মার্কেট সিস্টেমটাকে যে রকম পুরোপুরি পারফেক্ট মনে করা হয় তা কিন্তু সত্য নয়।

বাস্তবে মার্কেট সিস্টেমের মাধ্যমে পুরোপুরি রিসোর্স বা সম্পদের সঠিক বণ্টন (Proper allocation) হয় না। ন্যায়বিচারমূলক বণ্টন হয় না। তার প্রমাণ বাস্তবে একটা দেশে জনগণের একটা অংশের হাতে প্রয়োজনীয় ক্রয় ক্ষমতা না থাকায় তারা কিনতে পারে না।

যেমন, আমাদের দেশে অর্ধেকের বেশি লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। তাদের কাছে ডলার বা পাউন্ড নেই। তারা কিনতে পারে না। তারা অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় জীবন সামগ্রী কিনতে পারে না বলে তাদের প্রয়োজনটা মার্কেটেই যায় না, যেতেও পারে না।

তাদের দুধ বা ওষুধ দরকার হলেও সেই প্রয়োজন মার্কেটে আসছে না। তাদের বাড়ি দরকার, বাড়ি ভাড়া করা দরকার সেই প্রয়োজন মার্কেটে যায় না । কারণ, তারা সেটা কিনতে পারছেনা।

অন্যদিকে মার্কেট সিস্টেমে যাদের টাকা আছে তারা চারটা-পাঁচটা গাড়ি কিনতে পারে । বিরাট বিরাট বাড়ি বানাতে পারে। অন্যদিকে যাদের টাকা নেই তারা দুধ পর্যন্ত কিনতে পারে না। ওষুধ কিনতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে দু’টো ফল জনগণের হয়।

প্রথমত পূর্ণ ও সঠিক ডিমান্ডটা মার্কেটে আসতে পারে না বর্তমান মার্কেট সিস্টেমের কারণে এবং দ্বিতীয়ত অগ্রাধিকার (Priorities) নষ্ট হয়ে যায়। দরকার দুধের অথচ মার্কেট বলছে বিলাস সামগ্রী বানাও।

কেননা Price Mechanism-এর মাধ্যমে বাজারে সেসব দ্রব্যের চাহিদা এসেছে। গাড়ির চাহিদাটাই মার্কেটে আসছে। দুধের চাহিদা আর আসতে পারছেনা।

সুতরাং মার্কেট সিস্টেম সঠিক পদ্ধতি নয় যার মাধ্যমে সম্পদের সমবণ্টন হতে পারে । কেননা, সম্পদ চলে যাবে সেইদিকে, যেদিক থেকে মার্কেটে ডিমান্ড আসছে। সম্পদ সেই দিকেই যাবে, যেই ডিমান্ডটি মার্কেটে আসে। ফলে যে ডিমান্ড আসছে না (দুধের ডিমান্ড পুরোপুরি আসছে না) সেদিকে তো সম্পদ যাচ্ছে না।

এরকম প্রচণ্ড ইমপারফেকশন (Imperfection) মার্কেট সিস্টেমে রয়েছে। সুতরাং যারা মনে করেন মার্কেট সব সমস্যার সমাধান করবে তারা সম্পূর্ণ ভুল করে, মার্কেটের দাস (Servant) হয়ে যায়। কিন্তু সেটা হওয়া ঠিক হবে না। বাজার গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বাজার একমাত্র বিবেচ্য বিষয় নয়।

এই কনটেক্সটে (Context) এখন ইসলামের অর্থনীতির যে মূল ভিত্তি বা তার যে স্ট্র্যাটেজি সে সম্পর্কে আলোচনা করতে চাই। বর্তমানে রুলিং আইডিওলজি ক্যাপিটালিজমের দুর্বলতা বোঝার কারণে ইসলামী অর্থনীতির কর্মকৌশল ভালো করে বোঝা সম্ভব।

ইসলামী অর্থনীতিবিদগণ তিনটি বিষয় বা কনসেপ্টকে মূল ভিত্তি বলেছেন। প্রথম ভিত্তিটি হলো তৌহিদ। এই তৌহিদ হচ্ছে পৃথিবী আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। এটা তাৎপর্যহীন সৃষ্টি নয়। সকল মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি। সকল মানুষের গুরুত্ব রয়েছে এবং সকল মানুষকে গুরুত্ব দিতে হবে।

ইসলামী অর্থনীতি: দর্শন ও কর্মকৌশল
(ইসলামী অর্থনীতি)

ইসলামী অর্থনীতির দ্বিতীয় ভিত্তি হচ্ছে খিলাফত। খিলাফত হলো – মানুষ আল্লাহর খলিফা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষই। সূরা বাকারা, সূরাতুল ফাতিরে এবং অন্যান্য সূরাতে একথা বলা হয়েছে। খিলাফত মানুষকে অত্যন্ত সম্মানিত করেছে।

মানুষ কোনো চান্স প্রোডাক্ট (Chance Product) নয় । হঠাৎ করে একটা এক্সিডেন্টের মাধ্যমে মানুষের সৃষ্টি সে রকম নয়। মানুষ জন্মগত অপরাধী (Born Sinner)-ও নয়। যেমনটি পাশ্চাত্যে মনে করা হয়।

খিলাফতের ধারণা মানুষের মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। খিলাফতের তাৎপর্য হলো বিশ্বভ্রাতৃত্ব (Universal Brotherhood)। অর্থাৎ সকল মানুষ ভাই বা ভাই-বোন এবং এ হিসেবে তারা মর্যাদার অধিকারী, সমতার অধিকারী, সমভাবে তাদের দিকে খেয়াল করতে হবে। খেয়াল করার প্রয়োজন রয়েছে।(ইসলামী অর্থনীতি)

এর আরেকটা তাৎপর্য হলো, মানুষ মূল মালিক নয়। মূল মালিক আল্লাহ পাক এবং সম্পদ (Resource) একটা আমানত মাত্র। যে কোনোভাবে সে সম্পদকে ব্যবহার করতে পারে না। সম্পদকে ব্যবহার করতে হবে আল্লাহ তায়ালা যেভাবে চেয়েছেন ঠিক সেভাবে। এগুলো হলো খিলাফতের ধারণার গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য।

তৃতীয় ভিত্তি জাস্টিস, ইনসাফ বা ন্যায়বিচার। আদল হলো কুরআনের পরিভাষা। কুরআনে প্রায় একশ’ আয়াত আছে, যেখানে জাস্টিসের কথা বলা হয়েছে । আরো একশ’ আয়াত আছে যেখানে জুলুমের নিন্দা করা হয়েছে। তার মানে হলো, অর্থনীতিতে জুলুম থাকলে চলবে না এবং জাস্টিস আনতে হবে। এটাই হলো জাস্টিসের মূল তাৎপর্য।

আরো পরিষ্কারভাবে বলা যায়, ইনসাফের দাবি হলো সকল মানুষের প্রয়োজনকে পূর্ণ করতে হবে। সকলের জন্য সম্মানজক আয়ের (Respectable earning) ব্যবস্থা করতে হবে। এমনভাবে অর্থনীতিটাকে সাজাতে হবে, এমনভাবে কর্মকৌশলটাকে নির্ধারণ করতে হবে যাতে সকলের আয়ের ব্যবস্থা হয়।

যদি কারোর আয়ের ব্যবস্থা না হয় কিংবা যদি কেউ সম্মানজনক আয়ের ব্যবস্থা না করতে পারে-অর্থাৎ যদি তার কোনোরকম শারীরিক বা মানসিক দুর্বলতা থাকে বা অর্থনৈতিক কোনো বিপর্যস্ত অবস্থা থাকে সে অবস্থায় অনেকে হয়ত ইনকাম করতে পারল না; তাহলে তাদের ব্যবস্থা প্রথমে করতে হবে তার পরিবারের বা আত্মীয়-স্বজনদের।

আর তারা যদি না পারে তাহলে রাষ্ট্রকে করতে হবে। এ হলো জাস্টিসের দাবি।(ইসলামী অর্থনীতি)

এরপর ইসলামী অর্থনীতির কর্মকৌশল (Strategy) সম্পর্কে বলতে হয়। চারটি স্ট্র্যাটেজির কথা আমাদের অর্থনীতিবিদরা বলেছেন । অনেক কথা বললেও এই চারটি কথাই প্রধান। এর মধ্যে প্রথমটি হলো নৈতিক ছাঁকনি।

অর্থাৎ রিসোর্সের একটা পয়েন্ট অব টাইম বা কোনো নির্দিষ্ট সময়ের একটা সীমা আছে এবং এর ডিমান্ড প্রায় সীমাহীন। ফলে এ দু’টির মধ্যে মিলাতে গেলে ডিমান্ডের উপর এমন এক ছাঁকনি দরকার যাতে ডিমান্ডগুলো যেন একটু কমে আসে, সংযত থাকে।

একটি ছাঁকনি হলো প্রাইস (Price) যেটা আধুনিক ক্যাপিটালিজমে আছে। প্রাইসের মাধ্যমে ডিমান্ডকে সংযত করা হয়। আমার টাকা কম সুতরাং আমি কিনতে পারবো না – এটা হচ্ছে এক ধরনের ছাঁকনি বা ফিল্টার, যার মাধ্যমে এটা হয়।

ইসলাম এই প্রাইস ফিল্টারকে মেনে নিয়েছে। আবার মেনে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা জিনিস সে নিয়ে আসে। সেটাকে বলা হয় নৈতিক ফিল্টার।(ইসলামী অর্থনীতি)

অর্থাৎ মানুষের মধ্যে ইসলাম এমন একটা নৈতিকতা সৃষ্টি করেছে, এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে যে, মানুষ যেন অপব্যয় না করে। অতিভোগ যেন না করে । অতিরিক্ত ভোগের দিকে যেন তার নজর না যায়। নৈতিক ছাঁকনির গুরুত্ব অনেক।

কেননা, মূল্য ছাঁকনি (Price Filter) দ্বারা কেবল দরিদ্র মানুষের দাবি কমানো যায়। সুতরাং এই একটা স্ট্র্যাটেজি ইসলামী অর্থনীতিবিদরা সাজেস্ট করেছেন – মূল্য ছাঁকনি ছাড়াও কর্মকৌশলের অংশ হিসেবে একটা নৈতিক ছাঁকনি ( Moral Filter) নিয়ে আসা।

যাতে করে ডিমান্ড সংযত হয়। প্রাইসের মাধ্যমেও আমরা ডিমান্ডকে সংযত করব, অন্যদিকে নৈতিক ছাঁকনির মাধ্যমে আমরা অতিরিক্ত ভোগ নিয়ন্ত্রণ করব। যতবেশি ভোগ করব, ততবেশি আল্লাহর কাছে দায়ী হব।

আমাদেরকে জবাব দিতে হবে। এর জন্য চ্যারিটি করতে হবে। এইসব মাধ্যম ডিমান্ড এর দাবিকে কমিয়ে এনেছে যেন আমাদের কোনো একটা নির্দিষ্ট সময়ের রিসোর্সের প্রাপ্যতার সঙ্গে ডিমান্ডের সংঘাতটা কমে আসে।

ইসলামী অর্থনীতিবিদগণ দ্বিতীয় যে স্ট্র্যাটেজির কথা বলছেন সেটা হলো প্রপার মোটিভেশন (Proper motivation)। আমাদের প্রপার মোটিভেশন থাকতে হবে, প্রপার মোটিভেশন সৃষ্টি করতে হবে। ক্যাপিটালিজম এই মোটিভেশনকে একমাত্র স্বার্থ বলেছে।(ইসলামী অর্থনীতি)

কিন্তু ইসলাম বলেছে – না, স্বার্থ ঠিকই আছে কিন্তু এই স্বার্থপরতাকে বিস্তার করে দিতে হবে। অর্থাৎ ক্যাপিটালিজম যেখানে দুনিয়াভিত্তিক স্বার্থের কথা বলে সেখানে ইসলামী অর্থনীতি দুনিয়া ও আখিরাতের স্বার্থের কথা বলে।

দু’টো মিলে যাতে লাভ সেটাই স্বার্থ এডুকেশনের মাধ্যমে, মিডিয়ার মাধ্যমে, প্রচারের মাধ্যমে, ওয়াজের মাধ্যমে, দাওয়াতের মাধ্যমে – সর্ব উপায়ে এটা করতে হবে। জনগণের মাঝে উপযুক্ত মোটিভেশন সৃষ্টি করতে হবে।

অর্থনৈতিক কাজকর্মে কেবল দুনিয়ার স্বার্থ দেখলে চলবে না । দুনিয়ার স্বার্থ এবং আখিরাতের স্বার্থ দেখতে হবে। সুতরাং ইসলাম মোটিভেশনের স্বার্থপরতাকে বিস্তৃত করে দিয়েছে। বেসিক কর্মকৌশলের মধ্যে এটা রয়েছে।

উপরের বিষয়গুলো বাস্তবায়নে সময় লাগবে। এ জন্য ইসলামী অর্থনীতিবিদরা তৃতীয় কর্মকৌশলও নির্ধারণ করেছেন Socio-economic financial re-structuring নামে এবং এই বিষয়টিকেই তারা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন।

এর মাধ্যমে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং ফাইনান্সিয়াল ব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করতে হবে। এর সাহায্যে ব্যাংকিং সিস্টেমের মনিটরিং পলিসির (Monitoring ploicy), ফিসকেল সিস্টেমে (Fiscal) পরিবর্তন করতে হবে। ব্যাংকের টাকা সৃষ্টির ক্ষমতাকে (Power to money creation ) সংযত করতে হবে।

পূর্ণ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে ও মিডিয়াম শিল্পের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষি এবং রুরাল অর্থনীতির উপর গুরুত্ব দিতে হবে। শুধুমাত্র আরবান বেসড (Urban based) হলে চলবে না। এ সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা ইসলামী অর্থনীতিবিদরা করেছেন।

কর্মকৌশলের চতুর্থ দিক হলো, Social re-structuring, Economic re- structuring এবং Financial re-structuring-এর কাজটি করতে হবে সরকারকে। ইসলামের অবস্থা সমাজতন্ত্রের মত নয় যে, সরকার সব করবে। আবার পুঁজিবাদের মতোও নয় যে, মার্কেটই সব করবে।(ইসলামী অর্থনীতি)

ইসলাম বলে, মার্কেটকে আশি ভাগ আর সরকারকে বিশ ভাগ করতে হবে (এ হার পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন হতে পারে)। এটাই হচ্ছে সরকারের ভূমিকা আর এই চারটিই হলো ইসলামী অর্থনীতির মূল কর্মকৌশল।

আরো পড়ুন: ইসলামী ব্যাংকিংয়ের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা

Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
Previous Articleইসলামী ব্যাংকিংয়ের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা
Next Article ইসলামী অর্থনীতি ও তার সমসাময়িকতা
iBankHub Editor
  • Website

Related Posts

Apps

একাউন্ট লক হওয়া উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য সংশোধন এর সুযোগ

October 13, 2023
Apps

ব্র্যাক ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং ৯টি অ্যাপস Brac Bank Internet Banking 9 Secure Apps

February 5, 2023
Apps

অগ্রণী ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি সেবা Agrani Bank 15 Important Services

February 3, 2023
Add A Comment
Leave A Reply Cancel Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Top Posts

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Categories
  • AB Bank Bangladesh (105)
  • Apps (11)
  • Banking Solution (12)
  • Education (28)
  • Palli Sanchay Bank (490)
  • Savings (9)
  • Update (16)
Stay In Touch
  • Facebook
  • YouTube
  • TikTok
  • WhatsApp
  • Twitter
  • Instagram
Most Popular

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Our Picks

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
© 2025 iBankHub. Designed by Creative IT.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.