সামাজিক সুবিচার বা আদল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা বা অর্থনীতির প্রধান লক্ষ্য। প্রকৃতপক্ষে ইসলামের সব শিক্ষার উদ্দেশ্যই সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
সামাজিক সুবিচার কায়েম করার জন্যই ইসলামে সুদকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহ পাক কুরআন মজিদে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে সুদকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেনঃ
সুদখোরদের অবস্থা হলো সেই ব্যক্তির ন্যায়, যাকে শয়তান তার নিজ প্রভাব দ্বারা মস্তিষ্ক বিকৃত করে দিয়েছে। এর কারণ হলো এই যে, তারা বলে, ব্যবসা ও সুদ একই ধরনের। অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন । যারা আল্লাহর আদেশ মোতাবেক এরপর সুদী কারবার হতে বিরত হবে, তারা পূর্বে যা নিয়েছে, তা তাদেরই থাকবে।
এ ব্যাপারে তাদের সমস্যা আল্লাহর নিকট সোপর্দ কিন্তু যারা এ আদেশের পরেও সুদী কারবার করবে তারা জাহান্নামী, জাহান্নামেই তারা চিরকাল থাকবে।
(আল বাকারা: আয়াত ২৭৫)
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক তবে সুদ বাবদ যা পাওনা আছে, তা ছেড়ে দাও। যদি তোমরা তা না করো, তবে তোমাদের আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
আর যদি তোমরা তওবা করো তবে তোমরা নিজেদের আসল মূলধন ফেরত পাবে। কারো ওপর জুলুম করো না, তোমাদের উপরও জুলুম করা হবে না।
(আল বাকারা: আয়াত ২৭৮ ২৭৯)
হে ঈমানদারগণ! দ্বিগুণ, চতুর্গুণ সুদ খেয়ো না। দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তি পাবার নিমিত্ত আল্লাহকে ভয় করতে থাক।
(আল ইমরান: আয়াত ১৩০)
অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব

এখানে দ্বিগুণ, চতুর্গুণ সুদের উল্লেখের অর্থ এই নয় যে, দ্বিগুণ, চতুগুর্ণ সুদ না হলে তা বৈধ হবে । তা হতে পারে না । এটা সূরা বাকারার আয়াতসমূহ হতে স্পষ্ট হয় । এখানে আরবে সে সময় যা কিছু বাস্তবে ঘটতো তার বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
সুদবিহীন অর্থব্যবস্থা কোনো নতুন বিষয় নয়। আগেও একবার ইসলামের প্রথম যুগে অর্থনীতিকে সুদমুক্ত করা হয়েছিল। ইসলাম-পূর্ব যুগে আরব দেশে অর্থনীতি সুদের ভিত্তিতে পরিচালিত হতো। সব ব্যবসায়ীক ও ব্যক্তিগত লেনদেন সুদের ভিত্তিতে হতো।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদীন অর্থনীতিকে সুদবিহীনভাবে গড়ে তোলেন। সুতরাং আমাদের জন্য সুদহীন অর্থ-ব্যবস্থা নতুন কিছু নয় বরং আমরা জানি যে, এর মডেল ইতিহাসে ছিল। আমাদের কাজ হচ্ছে সুদবিহীন অর্থ ব্যবস্থাকে নতুনভাবে পুনঃপ্রবর্তন করা।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, অষ্টম শতাব্দী হতে শুরু করে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি সুদ ছাড়াই পরিচালিত হতো। কেননা সে সময় মুসলিম বিশ্বই সবচেয়ে উন্নত ছিল; কেবল জ্ঞান- বিজ্ঞানে নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যেও। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
সর্বোপরি পাশ্চাত্য হতে যেসব পণ্য প্রাচ্যে আসতো তার পথও (Trade route) ছিল মুসলিম বিশ্বের ভেতর দিয়েই। কেননা পাশ্চাত্য তখনো অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল । ইউরোপীয় সভ্যতার বিকাশ আরো পরে শুরু হয়েছিল।
মুসলিম অর্থনীতি তখন ইসলামের ভিত্তিতে সুদ ছাড়া পরিচালিত হতো; কেননা মুসলিম বিশ্বের আইন ব্যবস্থা ছিল তখন ইসলামী ফিকাহ । যদিও খেলাফতের নামে বাদশাহী তখন কায়েম ছিল, তথাপি ইসলামী আইনের ভিত্তিতেই সমাজ, অর্থনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালিত হতো।
যদি অষ্টম শতাব্দী হতে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত অত্যন্ত উন্নত এক অর্থনীতি সুদ ছাড়া চলতে পারে তবে আজও সুদ ছাড়া একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত অর্থনীতি পরিচালনা করা যে সম্ভব, এতে কোনো সন্দেহ থাকতে পারে না। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
এরপর আমি সুদভিত্তিক অর্থনীতির মন্দ প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করব । লাভ হোক বা না হোক, ঋণদাতা কর্তৃক ঋণগ্রহীতার নিকট হতে নির্দিষ্ট হারে সুদ দাবি করা নিঃসন্দেহে একটি জুলুম। এর ফলে অনেক ঋণগ্রহীতার অর্থনৈতিক ভরাডুবি ঘটে যা সমাজের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে।
অনেকে মনে করতে পারেন যে, আজকাল ব্যাংকে যারা টাকা জমা রাখেন, তারা ব্যাংক হতে সুদ পেয়ে থাকেন এবং এ সুদ দেয়ার ফলে ব্যাংকের কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই । কিন্তু এ ধারণা সঠিক নয়; কেননা ব্যাংক যে সুদ জমাকারীদের দিয়ে থাকে তার দ্বিগুণ সুদ ঋণগ্রহীতার উপর চাপিয়ে দেয়।
এ পরিস্থিতিতে ঋণগ্রহীতা ব্যবসায়ী বা শিল্পপতি যদি মন্দার সম্মুখীন হয়, তবে সে আর সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে অনেক সময় সক্ষম হয় না। ফলে ব্যাংক ঋণগ্রহীতার শিল্প বা বন্ধক দেয়া বাড়ি ও সম্পত্তির উপর হস্তক্ষেপ করে থাকে।
এভাবে সুদ ব্যবস্থার কারণে অনেকের সর্বনাশ হয়ে থাকে। কাজেই সুদ যে ইনসাফের সম্পূর্ণ খেলাফ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
এ সুদের কারণেই দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক রকম চড়া হয়ে থাকে । সুদবিহীন ব্যবস্থায় উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ী উৎপাদন খরচের উপর স্বাভাবিক মুনাফা যোগ করে দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে থাকে। কিন্তু সুদী অর্থনীতিতে সুদও মূল্যের উপর যোগ করা হয়। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
কাজেই অধিকাংশ দ্রব্যের ওপর কেবল সুদের কারণেই জনগণকে অতিরিক্ত দাম দিতে হচ্ছে। সুদী ব্যবস্থার আর একটি ভয়াবহ দিক হচ্ছে এই যে, এর ফলে পুঁজি সামান্যসংখ্যক লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়ার সুযোগ পায়, যা কুরআনের শিক্ষার সম্পূর্ণ খেলাফ।
পুঁজির এ পুঞ্জিভূত হওয়া কোনো চেষ্টা তদবীরের ফল নয়। সুদের এটি একটি বৈশিষ্ট্য যে, হাত গুটিয়ে বসে থাকা একটি শ্রেণিকে এ ব্যবস্থা শ্রম ছাড়া সম্পদ বৃদ্ধির এক সুবর্ণ সুযোগ করে দেয় । যে কেউ প্রচুর বিত্ত-সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে বা অন্য কোনো সূত্রে পেয়ে গেলে সুদের বদৌলতে টাকা ব্যাংকে রেখে বিনা পরিশ্রমে সম্পদ বৃদ্ধি করতে পারে।
ফলে এ শ্রেণির লোকদের মধ্যে অকর্মন্যতা, বিলাসিতা ও দুষ্কর্মের প্রসার দেখা দেয় । আর যে সম্পদ সে এভাবে পেয়ে থাকে তা সবই সমাজের দরিদ্র শ্রেণির লোকদের ঘর্ম ও রক্তধারা নিঃসৃত। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
এমনিভাবে দু’টি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে যার একটি হচ্ছে, পুঁজি অপরিমিত ও অস্বাভাবিকভাবে জমা হতে থাকা, অপরটি হচ্ছে, ধনী-গরীবদের মধ্যে অস্বাভাবিক শ্রেণি পার্থক্য সৃষ্টি হওয়া । এতে সামাজিক শান্তি নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দেয়। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
মালের জমা হওয়া সম্বন্ধে জার্মানির প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডক্টর সাখত, যিনি জার্মানির রাইখ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন, এলজেবরার একটি হিসাব দ্বারা প্রমাণ করেন যে, সুদী ব্যবস্থায় দুনিয়ার সমগ্র ধন-দৌলত একটি সুদখোর শ্রেণির হাতে চলে যেতে বাধ্য। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
এর কারণ হচ্ছে সুদের ভিত্তিতে ঋণদাতা সর্বদাই লাভবান হয়ে থাকে আর গ্রহীতা হয়ে থাকে কখনো লাভবান, কখনো ক্ষতির সম্মুখীন। (সাইয়েদ কুতুব শহীদ, ইসলাম ও সামাজিক সুবিচার, পৃ: ৩৫৪)।
অথচ শরীকদারী নীতি ও মুনাফার ভিত্তিতে যে অর্থনীতি গড়ে উঠবে তাতে একটি শ্রেণির হাতে পুঁজি ক্রমাগত জমা হতে থাকার বা কর্মবিমুখ একটি শ্রেণি গড়ে ওঠার কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
সুদের অন্য এক মারাত্মক দিক হচ্ছে, এর ফলে অর্থনীতিতে বারবার মন্দা ও তেজীভাবের আবর্তন হতে থাকে (Business cycle) যার ফলে অর্থনীতিতে সব সময় অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করে। অর্থনীতিতে যখন তেজীভাব থাকে, তখন সুদের হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
এভাবে যখন সুদের হার অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় তখন ঋণগ্রহীতা যদি হিসাব করে দেখে যে, অতিরিক্ত সুদের হারের কারণে লাভের সম্ভাবনা কম, তখন সে আর ঋণ নিতে চায় না। এর ফলে পুঁজি খাটানোতে ভাটা পড়ে, উৎপাদন কমে যায়, শ্রমিক ছাঁটাই হয় এবং সাধারণভাবে ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দেয়।
এরপর আবার যখন ব্যাংক দেখতে পায় যে, পুঁজির চাহিদা কমে গেছে, তখন অপারগ হয়ে আবার সুদের হার কমিয়ে দেয়। তারপর ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি নতুন করে পুঁজি নিয়ে বিনিয়োগে আত্মনিয়োগ করে। এমনিভাবে অর্থনীতিতে ক্রমাগতভাবে মন্দা ও তেজীভাব সৃষ্টি হতে থাকে। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
এ পরিস্থিতি যে অর্থনীতি ও জনকল্যাণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, তাতে কোনোই সন্দেহ থাকতে পারে না। সুদী ব্যবস্থার অন্য একটি বিপদজনক দিক হচ্ছে এ ব্যবস্থায় ফটকাবাজারী (Speculation) উৎসাহিত হয়। অন্যদিকে মুনাফার ভিত্তিতে যে ব্যাংক ব্যবস্থা গড়ে ব্যবস্থা গড়ে ওঠে তাতে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা গ্রহণ করা হয়।
এ ব্যবস্থায় জামানত (Security) দেয়াই যথেষ্ট নয়, লাভের নিশ্চয়তাও থাকতে হবে। কিন্তু সুদী অবস্থায় জামানত দিতে সক্ষম হলেই অন্য সতর্কতার কোনো প্রয়োজন নেই। আজকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ক্ষেত্রে ঋণ না দেয়ার যে নির্দেশ দিয়ে থাকে তা খুব কমই পালিত হয় এবং এসব ফাঁকি দিয়ে ফটকাবাজারীর জন্য ঋণ নেয়া বিশেষ কঠিন হয় না।
কেননা, যেহেতু সুদী ব্যবস্থায় জামানতকেই যথেষ্ট মনে করা হয়, সে জন্য বাস্তবে টাকার কি ব্যবহার হচ্ছে তার উপর নজর রাখা হয় না । ফলে সুদী ব্যবস্থার আড়ালে বিশেষ করে বিভিন্ন পণ্য মওজুদের মাধ্যমে ফটকাবাজারী কায়েম হয়ে থাকে যা দ্রব্যমূল্য ও অর্থনীতিকে অস্বাভাবিকভাবে প্রভাবিত করে জনসাধারণের দুর্দশার কারণ হয়।
অর্থনীতির উপর সুদের খারাপ প্রভাব খুব সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো । এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদীর সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং’ এবং আনোয়ার ইকবাল কোরেশীর ইসলাম এন্ড দি থিওরী অব ইন্টারেস্ট’ পুস্তক দুইটি দেখা যেতে পারে। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
অর্থনীতিতে সুদ কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে না। ১৯৩৫ সালে কিনস (Keynes ) -এর The General Theory of Income, Employment and Interest পুস্তক প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মনে করা হতো যে, সুদ হচ্ছে সঞ্চয়ের মূল কারণ।
কিন্তু কিনস দেখিয়ে দিয়েছেন যে, সঞ্চয়ে সুদের কোনো ভূমিকা নেই। সব আধুনিক অর্থনীতিবিদই আজ তা সত্য বলে মনে করেন । অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
বর্তমানে সুদ কেবল ঋণদান ও ঋণগ্রহণের একটি ভিত্তি হিসাবে কাজ করছে এবং এ ভিত্তিতেই ঋণ দেয়া নেয়া হচ্ছে। অবশ্য ঋণ দানের এ ভিত্তিটি যে কত ক্ষতিকর তা তো আমরা আগেই দেখেছি ।
অথচ শরিকদারী এবং মুনাফার সম্পর্ক যে ঋণ দেয়া-নেয়ার আরো সুন্দর ও ন্যায়সঙ্গত ভিত্তি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এর ফলে অর্থনীতিতে কোনো খারাপ প্রভাবও দেখা দেবে না।
সুদমুক্ত অর্থনীতি ও ব্যাংক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশসহ প্রায় সব মুসলিম দেশে ইসলামী ব্যাংক কায়েম করা হয়েছে। প্রতিটি ব্যাংকের অনেক দেশী-বিদেশী শাখাও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
ইসলামী ব্যাংক এখন বিশ্বে একটি স্বীকৃত ব্যাংকিং ও বিনিয়োগ ব্যবস্থা। প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থা অপেক্ষা এটা অনেক ভালো ফল দেখাতে পেরেছে। আশা করা যায় যে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এ ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী ও কার্যক্ষম হয়ে উঠবে। অর্থনীতিতে সুদের প্রভাব
আরো পড়ুন: ইসলামী অর্থনীতি : প্রয়োগ ও বাস্তবতা