প্রিয় শিক্ষক, আশা করছি ভালো আছেন। আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি, আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি। এই পাঠ অনুসরণ করে আপনি ৬ষ্ঠ শ্রেণির গণিত বিষয়ে অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি, আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি কিভাবে পড়াতে হবে এবং কিভাবে পড়ালে শিক্ষা ফলপ্রসু হবে তা জানতে পারবেন।
এই আর্টিকেল অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি, আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতির ধারণা বিষয়ে কীভাবে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা যায় সে সম্পর্কে সাজানো হয়েছে।
অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি, আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি
দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম রিচ টু টিচ-এর এই কোর্সে আপনাদের স্বাগত। পূর্ববর্তী মডিউলগুলোতে শিক্ষাবিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ- শিখন কার্যক্রমের বিভিন্ন তত্ত্ব ও ব্যবহারিক দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কোর্সের এ পর্যায় থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির গণিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।
সেইসাথে, একটি শ্রেণিকক্ষে কীভাবে এ ধারণাগুলো প্রয়োগ করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আমরা জানি যে, ষষ্ঠ শ্রেণির গণিত বইটি- স্বাভাবিক সংখ্যা ও ভগ্নাংশ, অনুপাত ও শতকরা, পূর্ণসংখ্যা, বীজগণিতীয় রাশি, সরল সমীকরণ, জ্যামিতির মৌলিক ধারণা, ব্যবহারিক জ্যামিতি এবং তথ্য ও উপাত্ত এই আটটি অধ্যায় নিয়ে সাজানো হয়েছে।
মডিউল ৩ এর অংশে প্রথম অধ্যায়- “স্বাভাবিক সংখ্যা ও ভগ্নাংশ” থেকে অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি এবং আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বিষয়ভিত্তিক আলোচনা (অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি, আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি)
এখানে যে বিষয়গুলোতে আলোকপাত করা হয়েছে, সেগুলো হল-
১. অংকপাতন কী,
২. স্বাভাবিক সংখ্যা কী,
৩. দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতিতে কীভাবে সংখ্যা পাঠ করা হয় এবং
৪. আন্তর্জাতিক গণনা রীতিতে কীভাবে সংখ্যা পাঠ করা হয়।
অঙ্কপাতন
অঙ্কপাতন হলো কোন সংখ্যাকে অঙ্ক ব্যবহার করে লেখা। আর এ লেখার রীতিতে দশটি প্রতীক ব্যবহার করা হয় বলে এটি হলো দশমিক বা দশ-গুণোত্তর রীতি।
এই দশটি প্রতীক হল – ০,১,২,৩,৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯। এর মাঝে ১ – ৯ হল স্বাভাবিক সংখ্যা এবং সার্থক অঙ্ক। আর একটি হল ০ (শূন্য);
এই অঙ্কগুলো ব্যবহার করে যখন একটি সংখ্যা লেখা হয়, যেমন ধরা যাক সংখ্যাটি ৭৫৩, তখন সংখ্যাটির প্রতিটি অঙ্ক দুইটি মান প্রকাশ করে।
এগুলো হল এদের স্বকীয় মান এবং স্থানীয় মান৷ স্বকীয় মান হলো অঙ্কটির নিজস্ব মান এবং স্থানীয় মান হচ্ছে অবস্থান অনুযায়ী অঙ্কটির মান৷ তাহলে এখানে স্বকীয় মান হলো ৭৫৩ এর ক্ষেত্রে সংখ্যাটির সর্ব ডানের অঙ্ক ৩।
৩ এর স্বকীয় বা নিজস্ব মান হলো ৩, ৫ এর মান ৫, ৭ এর মান ৭। কিন্তু স্থানীয় মান যেহেতু অবস্থানের উপর ভিত্তি করে হবে, তাই সর্বডানের ৩ এর স্থানীয় মান হবে ৩, ডানদিক থেকে দ্বিতীয় ৫ এর স্থানীয় মান ৫০, এবং ৭ এর মান ৭০০। যেমন- ৭৫৩= ৭ × ১০০ + ৫× ১০ + ৩

দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি
অঙ্কপাতনের এই আলোচনাটি যদি দেশীয় রীতিতে পড়া হয়, তাহলে এভাবে পড়া হবে- একক, দশক, শতক, হাজার, অযুত, লক্ষ, নিযুত এবং কোটি;

এখানে ৪৫৬,৭৮,৪২,৫০০ (চারশত ছাপ্পান্ন কোটি আটাত্তর লক্ষ বেয়াল্লিশ হাজার পাঁচশত) কে স্থানীয় মানের ছকে দেখানো হয়েছে।

গণনার সময় ১৪, ৫৫, ৭৩ এগুলোকে দশকের ঘরের সংখ্যা হিসেবে বলা এবং পড়া হয়। ১৪০, ১৫৫ এগুলোকে বলা হয় শতকের ঘরের, আবার ৫০০২ কে বলি হাজারের ঘরের সংখ্যা
কিন্তু অযুতকে অযুত হিসেবে না পড়ে হাজারের সাথে মিলিয়ে যত হাজার হয় তত পড়া হয়। ৪২০০০ কে অযুতের ঘরের ৪-কে হাজারের ২-এর সাথে মিলিয়ে ৪২,০০০ (বেয়াল্লিশ হাজার) পড়া হয়। একইভাবে নিযুতকে পড়া হয় লক্ষের সাথে।
যেমন- ৭৮,০০০০০ (আটাত্তর লক্ষ)। আবার কোটির ঘরের বামদিকের সমস্ত ঘরের অঙ্ককে কোটির সাথে মিলিয়ে যত কোটি হয় তত কোটি পড়া হয়। যেমন- ৪৫৬,০০,০০,০০০ (চার শত ছাপ্পান্ন কোটি)
এক্ষেত্রে শুদ্ধভাবে পড়তে এবং লিখতে কমা (,) ব্যবহার করা সুবিধাজনক। তাহলে এই পুরো সংখ্যাটিই যদি হাজার,লক্ষ, কোটি অনুযায়ী কমা দিই, তাহলে পাওয়া যাবে – ৪৫৬,৭৮,৪২,৫০০ (চারশত ছাপ্পান্ন কোটি আটাত্তর লক্ষ বেয়াল্লিশ হাজার পাঁচশত)।
আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি
আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে একক,দশক এবং শতক দেশীয় রীতির মতোই পড়া ও লেখা হয়। তবে, হাজারের পরে অযুত, লক্ষ, নিযুত, কোটি’র বদলে রয়েছে মিলিয়ন এবং বিলিয়ন।
আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি অনুসারে এই ছকটি করা হয়েছে। এখানে শতকের বামের ঘরটি হাজারের। হাজারের ঘরে অনূর্ধ্ব ৩ অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা লেখা যায় এবং যত লেখা হয় তত হাজার পড়া হয়।

যেমন- ৪২৫০০০ (চারশত পঁচিশ হাজার)। এরপর, হাজারের ঘরের বামদিকের ঘর হলো মিলিয়ন। হাজারের মতোই এখানেও অনূর্ধ্ব ৩ অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা লেখা যায় এবং যত লেখা হয় তত মিলিয়ন পড়া হয়।
যেমন-৭৬৬০০০০০০ (সাতশত ছেষট্টি মিলিয়ন)। মিলিয়নের ঘরের বামদিকের ঘর হলো বিলিয়ন এবং এখানেও আগের মতোই অনূর্ধ্ব ৩ অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা লেখা যায় এবং যত লেখা হয় তত বিলিয়ন পড়া হয়। যেমন- ৬০২০০০০০০০০০ (ছয়শত দুই বিলিয়ন);
লক্ষণীয়, এখানে সম্পূর্ণ সংখ্যাটিতে ৬০২,৭৬৬,৪২৫,১৫২ তিন অঙ্ক পরপর কমা বসেছে। এখানে যে রীতি অনুযায়ী এই সংখ্যাটিকে গণনা করা হলো এটিই হলো আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি।
এই সংখ্যাটিকে বিলিয়ন, মিলিয়ন, হাজার অনুযায়ী কমা দিয়ে পরলে হবে- ছয়শত দুই বিলিয়ন সাতশত ছেষট্টি মিলিয়ন চারশত পঁচিশ হাজার একশত বায়ান্ন;
শিখন-শেখানো (অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি ও আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি)
শ্রেণিকক্ষে অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি, আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি- এর উপস্থাপন ক্ষেত্রে শিক্ষাক্রমে নির্দিষ্টভাবে এই বিষয়গুলোর শিখনফল দেওয়া আছে। সেগুলো হল-
১. এই পাঠ শেষে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক সংখ্যার অঙ্কপাতন করতে পারবে।
২. দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রীতিতে অঙ্কপাতন করে পড়তে পারবে।
এই শিখনফল দুইটি হল শিক্ষার্থীর বুদ্ধিবৃত্তীয় শিখনফল।
এছাড়াও এই ছকে একটি আবেগীয় শিখনফল আছে। সেটি হল যে,
“শিক্ষার্থীরা সংখ্যা সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে বিভিন্ন ধরণের সংখ্যাভিত্তিক মজার মজার খেলায় উৎসাহী হবে”।
এই ছকে “শিখন – শেখানো” নির্দেশনায় বলা হয়েছে-
“শিক্ষক উদাহরণের সাহায্যে স্বাভাবিক সংখ্যা ও শূন্যের ধারণা দেবেন এবং উদাহরণ ও প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে অঙ্কের স্থানীয় মানের পূর্বজ্ঞান যাচাই করবেন”
অর্থাৎ এই “শিখন-শেখানো” নির্দেশনা লক্ষ্য করলে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত এ শিখনফল অর্জন করতে শিক্ষক কী কী উপায়ে শ্রেণিকক্ষে এই বিষয় সম্পর্কে পূর্বজ্ঞান যাচাই করবেন, পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
পাঠ কার্যক্রম পরিচালনায় প্রথমেই লক্ষ্য করতে হবে, যে বিষয়ে আলোচনা হবে সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা কেমন বা আদৌ কোন ধারণা রয়েছে কিনা।
এক্ষেত্রে শুরুতেই নিশ্চিত করতে হবে যে, শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক সংখ্যা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রয়েছে। যেহেতু অঙ্কপাতন বিষয়ে পূর্বের শ্রেণিগুলোতে শিক্ষার্থীরা ধারণা লাভ করেছে, তাই বিভিন্ন উদাহরণ ও প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে তাদের পূর্বজ্ঞান যাচাই করা যেতে পারে।
পূর্বজ্ঞান যাচাই
পূর্বজ্ঞান যাচাই করার জন্য শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করা যেতে পারে যে অঙ্ক ও সংখ্যার ধারণা ব্যাখ্যা করতে বলা যেতে পারে।
ক. অঙ্ক ও সংখ্যার পার্থক্য করতে দেওয়া যেতে পারে।
খ. অঙ্কপাতন কী সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে।
গ. পরিচিত জগতের বিভিন্ন বস্তুর সংখ্যা দিয়ে স্থানীয় মানের ধারণা যাচাই করা যেতে পারে।
পাঠদান কার্যক্রম
এরপর ‘অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি ও আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি’ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে এবং অঙ্কপাতন কী, কীভাবে এটি কাজ করে, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি কী তা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক গণনার ক্ষেত্রে উল্লেখ্য ধারণার সাথে সম্পৃক্ত ও সংযুক্ত করে আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতির ধারণা প্রদান করা যেতে পারে।
এখানে লক্ষণীয় পাঠদানে শিক্ষণ – শিখন পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বিষয় অনুযায়ী কোন পদ্ধতি বা কী কী উপায়ে বিষয়টি উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থীদের শিখনকে সহজ এবং স্থায়ী করবে সেটি অবশ্যই শিক্ষককে বিবেচনা করতে হবে।
বিষয়ভিত্তিক আলোচনার ক্ষেত্রে শিক্ষক সম্পূর্ণ পাঠ নিজে আলোচনা করতে পারেন, কোনো ভিডিও প্রদর্শন করতে পারেন, ভিডিওর কোনো অংশ ব্যাখ্যা করে আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু সমগ্র পাঠে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে পাঠদান নিশ্চিত করতে হবে। যেমন-
ক. শিক্ষক বোর্ডে কিছু সংখ্যা লিখে দিয়ে এর স্থানীয় মান নির্ণয় করতে বলতে পারেন।
খ. বোর্ডে কিছু সংখ্যা লিখে দিয়ে সেগুলো কমা ব্যবহার করে কথায় লেখতে বলতে পারেন।
গ. দলীয় কাজের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দলে ভাগ করে প্রতি দলকে একটি করে সংখ্যা দিয়ে সেটির স্থানীয় মান আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে লেখতে বলতে পারেন।
এখানে লক্ষণীয়, পূর্বজ্ঞান যাচাই, উদাহরণ, মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সবসময় বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কিত উদাহরণ, ঘটনা, উপকরণ নিয়ে আলোচনা করতে হবে, যেন শিক্ষার্থীরা সহজেই গণিতের সাথে তাদের প্রাত্যহিক জীবনের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
যেমন, এই আলোচ্য বিষয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত, বড় অঙ্কের টাকার হিসাব বোঝানোর সূত্র ধরে এই ধারণার অবতারণা করা যেতে পারে। মিলিয়ন/বিলিয়ন অর্থের হিসাব বোঝাতে সংবাদপত্রে উল্লেখ্য এ সম্পর্কিত সংবাদ কাজে লাগানো যেতে পারে কিংবা সাম্প্রতিক কোন অর্থনৈতিক ঘটনা/ উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যেতে পারে।
শিক্ষা উপকরণ
কয়েক ধরনের শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করে পাঠ উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রমে সংযুক্ত করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ-
১। ছক ব্যবহার করে গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে শিক্ষক ছক এঁকে নিয়ে আসতে পারেন কিংবা বোর্ডে আঁকতে পারেন।
২। শ্রেণিকক্ষে কিংবা আশেপাশে আছে এমন কোন উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারে, যা থেকে সহজেই শিক্ষার্থী গণনার কাজটি করতে পারে।
যেমন- গণনার ক্ষেত্রে কাঠি, শীমের বিচি, টুথপিক বা ম্যাচের কাঠি ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। টাকা ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন- ১০০০, ১০০, ১০ এবং ১ টাকার একটি করে নোট নিয়ে হয় মোট ১১১১ টাকা, এই সংখ্যাটি অর্থাৎ ১১১১ এর স্থানীয় মানের ধারণা দেওয়া যেতে পারে। (সংখ্যা পাতন কাকে বলে)
৩। বোর্ড, খাতা কলমের ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪। পাঠসংশ্লিষ্ট কোন ভিডিও প্রদর্শন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে, শিক্ষক সম্পূর্ণ ভিডিও বা বিশেষ কোন অংশ ব্যাখ্যা করে আলোচনা করতে পারেন।
এভাবে ধাপে ধাপে শিক্ষক আলোচ্য তিনটি ধারণার সাথে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করাতে পারেন এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে শিখনফল অর্জিত হয়েছে কি না তা মূল্যায়নের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
মুল্যায়ন
একজন শিক্ষক কী কী উপায়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ফল অর্জিত হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করতে পারেন, সে সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো।
আমাদের শিক্ষাক্রমে এই বিষয়ে “মূল্যায়ন নির্দেশনা”- লক্ষ্য করলে দেখবো সেখানে অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি এবং আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতিতে সংখ্যা গণনা করে পড়তে পারার মাধ্যমে শিখন ফল অর্জনের কথা বলা হয়েছে।
এক্ষেত্রে শিক্ষক কী কী করতে পারেন তার তালিকায় আছে-
১. শিক্ষক বোর্ডে অঙ্কপাতন করতে দিয়ে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মূল্যায়ন করবেন।
২. শিক্ষক বাড়ির কাজ ও শ্রেণির কাজের মাধ্যমে মূল্যায়ন করবেন।
৩. ছক উপস্থাপন করার সময় শিক্ষার্থীদের উপস্থাপন কৌশল মূল্যায়ন করবেন।
৪. শ্রেণি অভিক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করবেন।
৫. নির্ধারিত মানদণ্ডের সাহায্যে দলগত কাজ মূল্যায়ন করবেন।
তাহলে এই মূল্যায়ন নির্দেশনা থেকে পাওয়া যাচ্ছে, একজন শিক্ষক নানাভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে পারেন। যেমন- (সার্থক অংক কাকে বলে)
১। শ্রেণিকক্ষে মূল্যায়ন-
শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে মূল্যায়ন করতে পারেন। যেমন –
ক. প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
খ. বোর্ডে কিংবা খাতায় লেখার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
গ. শিক্ষার্থীদের দলগত/ একক কাজের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
২। বাড়ির কাজের মাধ্যমে মূল্যায়ন-
বাড়ির কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, বাড়ির কাজ এমন কিছু দিতে হবে যেন তা শিক্ষার্থীর চিন্তাকে সক্রিয় করে।
অর্থাৎ, বাড়ির কাজ এমন হবে যাতে তা করার সময় শিক্ষার্থীকে চিন্তা করে উত্তর লিখতে হয়। এ ধরনের কাজ দিলে শ্রেণিতে উপস্থাপিত পাঠ আরো বেশি স্থায়ী হবে এবং শিক্ষার্থীর বিষয়ভিত্তিক ধারণা পাকাপোক্ত হবে।
৩। শ্রেণি অভিক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন-
শিক্ষক কোন বিষয়/অধ্যায় আলোচনা শেষে পরীক্ষা নিতে পারেন। যেমন- আজকের বিষয়ে আলোচনা শেষে অঙ্কপাতন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণনা রীতি নিয়ে বিভিন্ন ছোট ছোট কুইজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন যাচাই করা যেতে পারে। (সহমৌলিক কাকে বলে)
প্রিয় পাঠক, অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি ও আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি আর্টিকেলটি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের জন্য প্রণীত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মুক্তপাঠ প্লাটফর্মে রিচ টু টিচ: গণিত শিখন-শেখানো (ষষ্ঠ শ্রেণি) অনলাইন কোর্স থেকে সংগৃহিত। এটি শুধুমাত্র আপনাদের এই কোর্সটি সহজে বোঝার জন্য প্রকাশ করা হয়েছে।
এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার কোনো আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনি চাইলে আমাদের ফেসবুক পেইজে মেসেজ এর মাধ্যমে আপনার সমস্যাটি জানাতে পারেন। (সার্থক অংক কয়টি)
নিচের ভিডিওতে অঙ্কপাতন, দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতি ও আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি আরও তথ্য জানুন
প্রশ্ন-১: আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতি অনুযায়ী ৩,১৫৬,৪৮৯,০৮৩ সংখ্যাটি পড়া হবে-
ক. তিন হাজার একশত ছাপ্পান্ন মিলিয়ন চারশত ঊননব্বই হাজার তিরাশি,
খ. তিন বিলিয়ন একশত ছাপ্পান মিলিয়ন চারশত ঊননব্বই হাজার তিরাশি,
গ. তিনশত পনেরো বিলিয়ন চৌষট্টি মিলিয়ন ঊননব্বই হাজার তিরাশি,
ঘ. তিনশত পনেরো বিলিয়ন ছয়শত আটচল্লিশ মিলিয়ন নয় হাজার তিরাশি;
প্রশ্ন-২: দেশীয় সংখ্যাপঠন রীতিতে দশ লক্ষ চৌত্রিশ হাজার দুইশত বারো কে অঙ্কে লিখলে কত হবে?
ক. ১,০৩,৪০,২১২
খ. ১০,০৩,৪২,০১২
গ. ১,০০,৩৪,২১২
ঘ. ১০,৩৪,২১২
প্রশ্ন-৩: ১২৪০ সংখ্যাটিতে ৪ এর স্বকীয় মান কত?
ক. ৪০০
খ. ৪
গ. ৪০
ঘ. ৪০০০


3 Comments
Pingback: দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণনা রীতির পারস্পরিক সম্পর্ক - iBankHub
Pingback: একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে - iBankHub
Pingback: স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Wellbeing Online Training NCF 23 - iBankHub