অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ এখন উল্লেখ করার মতো আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করছে। এ সংকট ১৯৩০-এর দশকের মতো ব্যাংকগুলোকে অচল অথবা ব্যাংকিং খাতের ব্যর্থতাকে নিয়ন্ত্রণের অযোগ্য করে না তুললেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন অর্থ সংকটে ভুগছে। এ ধরনের সংকট গত ৫০ বছরে কখনও দেখা যায়নি।

আইএমএফ-এর সমীক্ষা অনুযায়ী আইএমএফ-এর সদস্য দেশসমূহের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি রাষ্ট্র উল্লেখ করার মতো আর্থিক সংকটের সম্মুখীন। ব্যাংকিং খাতের সংকটের কারণে সৃষ্ট উচ্চমূল্য ও সামষ্টিক অর্থনীতির নানা প্রতিবন্ধকতা আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাসমূহের বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে।

সাম্প্রতিককালে এশিয়ার কিছু কিছু দেশ মারাত্মক মুদ্রা ও আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়। কয়েক দশকের সময়কার ।অর্থনৈতিক অগ্রগতির পর এশীয় দেশগুলো এ ধরনের সংকটের মুখোমুখি হয়। অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান

সর্বশেষ ২০০৮ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক ক্রাইসিস দেখা দেয়। শেয়ার মার্কেটের পতন হয়, অসংখ্য ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়, শিল্প বন্ধ হয় এবং লোকজন বেকার হয়। এটা চলছে।

বর্তমান সংকটের পূর্ব পর্যন্ত উন্নয়নশীল বিশ্বের মূলধন প্রবাহের অর্ধেকই এসেছে এশিয়ায়। বিগত দশকে বিশ্ববাজারে এশিয়ার বিকাশমান ও উন্নয়নশীল বাজার অর্থনীতির দেশসমূহের রপ্তানির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণে উন্নীত হয়ে বিশ্ব রপ্তানির এক-পঞ্চমাংশে পৌঁছে। অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

এ ধরনের প্রবৃদ্ধির রেকর্ড ও শক্তিশালী বাণিজ্য সাফল্যের নজীর অভূতপূর্ব এবং ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য অর্জন হিসেবে চিহ্নিত হয় । প্রশ্ন হলো, বহু বছরের অসাধারণ সাফল্যের পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এসব ঘটনা কিভাবে ঘটল? ভুলটি হয়েছিল কোথায়?

বহু দিক থেকে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও কোরিয়া প্রায় একই ধরনের সংকটের মোকাবিলা করছে। এসব দেশ আস্থার সংকটে ভুগছে এবং তাদের মুদ্রা ব্যাপক অবমূল্যায়নের শিকার। অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

অধিকন্তু প্রতিটি দেশের দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ বেসরকারি খাতের অতিমাত্রায় বিদেশী ঋণগ্রহণ এবং স্বচ্ছতার অভাব সংকটের সৃষ্টি করেছে এবং তা নিরসনের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে (আইএমএফ সমীক্ষা, বিভিন্ন সংখ্যা)।

১৯৯০-এর দশকে ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ আর্থিক খাতের সংকটের সম্মুখীন হয়। এ সংকটের বৈশিষ্ট্য ছিল অব্যাহতভাবে আমানত প্রত্যাহার, পুঁজি নিয়ে সরে পড়া এবং ব্যাংকিং খাতের ব্যর্থতা। ল্যাটিন আমেরিকার মধ্যে ভেনিজুয়েলার সংকট মুদ্রাস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধির ওপর সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

বস্তুত সামষ্টিক ব্যবস্থাপনার ভারসাম্যহীনতা, অসম্পূর্ণ আর্থিক উদারীকরণ, ব্যাপক হারে আভ্যন্তরীণ ঋণগ্রহণ, জালিয়াতিকে গোপন করে রাখার সুযোগ না পাবার মতো প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং তত্ত্বাবধানের অভাব ইত্যাদির সম্মিলিত ফল হিসেবে আলোচ্য সংকটের সৃষ্টি হয়।

১৯৯৫ সালের গোড়ার দিকে সূচিত আর্জেন্টিনার আর্থিক খাতের সংকটের সময় ব্যাপক আকারে পুঁজির বহির্গমন লক্ষ্য করা যায় । মেক্সিকান অবমূল্যায়নের প্রভাব, চলতি হিসেবের ঘাটতি, নিম্নপর্যায়ের অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় ও অবনতিশীল রাজস্ব ব্যবস্থা থেকে সৃষ্ট সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যহীনতার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

১৯৯৫ সালে শুরু হওয়া প্যারাগুয়ের ব্যাংকিং সংকটের সৃষ্টি হয় প্রধানত পর্যাপ্ত ব্যাংক সম্পর্কিত বিধি-বিধান ও তত্ত্বাবধান ছাড়াই আর্থিক উদারীকরণের পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে। এতে অপর্যাপ্ত পুঁজিসর্বস্ব একটি আর্থিক ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক মুদ্রা বিপর্যয়, পুঁজির প্রবাহ বর্ধিত এবং আর্থিক বাজারের ক্রমাগত বিশ্বায়নে উন্নয়নশীল দেশের বিশেষত বিকাশমান অর্থনীতির দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছে উদারভাবে মুদ্রা ব্যবস্থাপনা সাজানোর উদ্যোগ প্রশ্নসাপেক্ষ হয়ে পড়েছে। অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

আর্থিক সংকটের বিশ্লেষণ এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের দিক নির্দেশনা পূর্ব এশিয়ার সাম্প্রতিক আর্থিক সংকটের কারণসমূহের বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ সংকটের সমাধানের জন্য আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন। প্রশ্ন হলো, সংকট নিরসনের জন্য দেয়া এসব পরামর্শ কতটুকু যথার্থ এবং তা কতটা ইসলামী নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ?

বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অর্থনীতিবিদের প্রস্তাবিত সমাধান কতটা আমরা গ্রহণ করতে পারি? এসব সমাধান কি ইসলামী ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য এবং অর্থনীতির তত্ত্ব ও ধারণাসমূহ কি অপরিহার্যভাবে মূল্য নিরপেক্ষ? আর্থিক সংকট দূর করা বা তা প্রতিহত করার ব্যাপারে কি বিশেষ ইসলামী কৌশল ও কর্মসূচি রয়েছে?

১৯৯৭-৯৮ এর এশীয় আর্থিক সংকটকে সংক্ষিপ্তভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় অর্থনীতিবিদ, আইএমএফ কর্মকর্তা ও অন্যরা প্রধানত নিম্নে উল্লেখিত কারণগুলোর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন।

এর মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে, এসব দেশের অধিকাংশতেই কৃত্রিম বিনিময় হার বজায় রাখার মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রাকে অতিমূল্যায়িত করে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সময়মত ও যথাযথভাবে মুদ্রার অবমূল্যায়ন অনুমোদন করেনি।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

এর ফলে অধিকাংশ দেশেই চলতি হিসাবের ঘাটতি স্ফীত হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত বিনিময় হারের পতন ঘটেছে। একই সময়ে মুদ্রার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের আন্দাজ-অনুমান এবং ভবিষ্যত বাণীও আস্থায় চিড় ধরিয়েছে। এটি মুদ্রার বিনিময় হারকে দ্রুত নিচে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

দ্বিতীয়ত, এসব দেশ বিপুল অংকের বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করেছে, যার অধিকাংশ নেয়া হয়েছে বেসরকারি খাত থেকে। এসব ঋণের সিংহভাগ স্বল্প মেয়াদের জন্য গ্রহণ করে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করা হয়। আর্থিক সংকটের সামান্য আভাস পাবার পর বিদেশী পুঁজির ব্যাপক বহির্গমন শুরু হয় ।

যা থেকে বড় আকারের তারল্য সংকটের সূত্রপাত ঘটে। সংকট কবলিত দেশগুলোর মধ্যে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও কয়েকটি আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার উদ্ধার প্যাকেজ সহায়তা ছাড়া উক্ত ঋণ ফেরত দানেও অসমর্থ হয়ে পড়ে।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

বিদেশী পুঁজির আকস্মিক নির্গমনের ফলে স্থানীয় মুদ্রার মূল্যমান দ্রুত পড়ে যায়, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়, প্রবৃদ্ধির হার হ্রাস পায়, বেকারত্ব বাড়তে থাকে, আয় কমে যায়, সামাজিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, এমনকি কোথাও কোথাও দাঙ্গা-হাঙ্গামা বেধে যায়।

তৃতীয়ত, এসব দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও ব্যাংকিং তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রেও মারাত্মক সমস্যা ছিল। বিদেশ থেকে নেয়া তহবিলসহ বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয় মন্দ খাতে। এ কারণে এসব দেশ ১৯৯৭-৯৮ সালের সংকট দেখা দেয়ার আগে থেকেও মন্দ ঋণের সমস্যার সম্মুখীন হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকও তত্ত্বাবধান এবং বিধিগত অনুশাসনমূলক দায়-দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। ফলে সংকটের সৃষ্টি হবার পর অধিকাংশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা অথবা বিদেশ থেকে কোনো উদ্ধার প্যাকেজ ব্যতিরেকে তাদের বৈদেশিক দায় মেটাতে ব্যর্থ হয়।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে আর্থিক সংকটের সমাধানের জন্য যে প্রস্তাব করেছেন তার মূল বক্তব্য নিচে দেয়া হলোঃ

এক. যেসব দেশ মুক্তভাবে অথবা নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে নমনীয় বিনিময় হার অনুসরণ করেছিল তা তাদের বজায় রাখা উচিত। আমার বিবেচনায়, এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি যুক্তিসঙ্গত কার্যক্রম হবে। তা না হলে অতিমূল্যায়িত মুদ্রার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া সামনেও অব্যাহত থাকবে।

দুই. বেসরকারি বিনিয়োগ প্রবাহকে অধিকতর ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন । স্বল্পমেয়াদী বেসরকারি পুঁজি অত্যন্ত সতর্কভাবে ব্যবহার করা উচি।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

প্রকৃত খাতে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা দরকার প্রয়োজনবোধে দেশে স্বল্পমেয়াদী পুঁজি প্রবাহের পর্যায় ও শর্তাবলী কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারণ করতে পারে।

অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান

অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান
অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান

আমার বিবেচনায় বেসরকারি পুঁজিপ্রবাহ, বিশেষভাবে স্বল্পমেয়াদী বেসরকারি পুঁজিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। স্বল্পমেয়াদী বাজারে নানা সমস্যা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে দায়-দায়িত্ব সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক উপেক্ষা করতে পারে না।

তিন. আর্থিক ব্যবস্থার সব ত্রুটি-বিচ্যুতির সংশোধন করা প্রয়োজন । কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমনভাবে ব্যাংকগুলোকে পরিচালনা করা উচিত যাতে মন্দ ঋণ সমস্যা ও তারল্য সংকটের কারণে কোনো বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে – এমন মন্দ বিনিয়োগ কোনোভাবেই এসব ব্যাংক করতে না পারে।

আর্থিক সংকটে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, একটি শক্তিশালী ও কার্যকর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং গতিশীল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন কত বেশি।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

ভবিষ্যতে যে কোনো দেশ যাতে আর্থিক সংকট থেকে রক্ষা পেতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পর্কে উপরে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।

এসব সমাধানকে ইসলামী অর্থনীতিবিদ ও ইসলামী সরকারও অন্যদের সাথে অনুসরণ করতে পারেন। বিশেষ কোনো অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে এসব কর্মসূচিকে সংযুক্ত করার কোনো যুক্তি থাকতে পারে বলে মনে হয় না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধান, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম, বিনিময়নীতি, হার প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি ইসলামী বা অ-ইসলামী শাসনে একই রকম থাকতে পারে।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

একই সাথে এটাও বলা যায় যে, অর্থনীতির অধিকাংশ তত্ত্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বোঝা, ব্যাখ্যা করা ও ভবিষ্যৎ‍ কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য উপকরণ ছাড়া আর কিছু নয় (কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে), অবশ্য ইসলামী অবকাঠামোতে ন্যায়বিচার ও নৈতিক মানদন্ডসহ আরো কিছু বিষয় বিবেচনায় আনা হয়।

অনেক কারণে উপরে সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখিত আর্থিক সংকট থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অধিকতর কল্যাণকর প্রতীয়মান হয়।

ভালো ব্যবস্থাপনা ও যুক্তিযুক্ত তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে একটি শ্রেষ্ঠ নমুনা হিসেবে চিহ্নিত করে ‘ইকোনমিস্ট’ (লন্ডন) বলেছেঃ ‘পাশ্চাত্য আধুনিক যুগেও ইসলামের কাছ থেকে ইকুইটি ব্যাংকিং বা অংশীদারিত্বের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা নিতে পারে’ (দি ইকোনমিস্ট, আগস্ট ১৯৯৪, ৬ষ্ঠ সংখ্যা)।

ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মন্দ বিনিয়োগের সম্ভাবনা অনেক হ্রাস পায়। এ ব্যবস্থায় বিনিয়োগের ব্যাপারে অনেক বেশি তত্ত্বাবধান করা হয় বলে যে কোনো ইকুইটি স্কিমে মন্দ ঋণের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। মুশারাকা’ ব্যবস্থায় বিদেশী তহবিল নেয়া হলে এ ধরনের পুঁজির অসময়ে পালিয়ে যাওয়া বা প্রত্যাহার করে নেয়ার সম্ভাবনা থাকে না ৷

দ্বিতীয়ত, ইসলামী ব্যবস্থায় ধারণা-অনুমানের আচরণ (Speculation) অত্যন্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইসলাম জুয়াকে নিষিদ্ধ করেছে।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

ইসলামে অনুমাননির্ভর ব্যবস্থাকে দারুণভাবে অপছন্দ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এটি সত্য যে, অনেকসময় স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও অনুমানের মধ্যে পার্থক্য করে অনুমানকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

তবুও ইসলামী ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক কৰ্তৃপক্ষ অনুমানভিত্তিক তৎপরতার (শেয়ার বাজার অথবা মুদ্রা বাজার অথবা অন্য যে কোনো ক্ষেত্রেই হোক না কেন) উপর ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ গ্রহণ অথবা দিকনির্দেশনা জারি করতে পারে।

যদি সবকিছুকে মুক্ত রাখার পক্ষপাতি একশ্রেণীর অর্থনীতিবিদের বিরোধিতা সত্ত্বেও অর্থনীতির স্বার্থে প্রয়োজন হয় অথবা জনগণ চায় তাহলে এ পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থনীতির আকস্মিক পরিবর্তনশীলতা ইসলামী অর্থনীতিতে কম দেখা যায়।

এটা স্বীকৃত যে, ভালো ব্যবস্থাপনার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আর্থিক সংকট থেকে রেহাই পাবার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যবস্থার যে সুবিধা তা অন্য কোনোভাবে পাওয়ার সুযোগ নেই।অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান।

আরো পড়ুন: ইসলামী ব্যাংকিং: সমস্যা ও সম্ভাবনা

2 thoughts on “অংশীদারিত্ব ব্যাংকিংই একমাত্র সমাধান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.