Close Menu
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

What's Hot

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023
Facebook X (Twitter) Instagram
Sunday, September 28
Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest Vimeo
Subscribe Button Button
iBankHubiBankHub
  • Home
  • Solution
  • Education
  • Privacy Policy
  • Terms of Service
  • Disclaimer
  • About Us
  • Contact Us
iBankHubiBankHub
Home » দারিদ্র্য বিমোচন : ইসলামের কৌশল
Education

দারিদ্র্য বিমোচন : ইসলামের কৌশল

iBankHub EditorBy iBankHub EditorDecember 11, 2022Updated:February 15, 20231 Comment13 Mins Read
Share Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Reddit Telegram Email
দারিদ্র্য বিমোচন : ইসলামের কৌশল ইসলামী অর্থনীতির Update
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

ইসলাম দারিদ্র্য বিমোচনে সক্ষম কি-না? এই প্রশ্নের উত্তর ভাবতে গেলে একদিকে মনে হয় এই প্রশ্নটি সঠিক নয়। কেননা, ঐতিহাসিক বিচারে যদি আমরা দেখি তাহলে দেখবো ইসলাম যখন বিস্তার লাভ করে, তার খিলাফতের যখন বিস্তার হয় তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণভাবে দারিদ্র্য উৎখাত হয়ে গিয়েছিল।

ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে, এমন সময় পার হয়েছে যখন যাকাত নেয়ার লোক ছিল না । যাকাত নেয়ার লোক কখন থাকে না, যখন কোনো সমাজে দারিদ্র্য থাকে না।(দারিদ্র্য বিমোচন)

কিন্তু আজকের আধুনিক পাশ্চাত্য সমাজ কি এই দাবি করতে পারবে যে, সাহায্য নেবার কেউ নেই? আমেরিকা কি দাবি করতে পারবে, তাদের সাহায্য নেবার কেউ নেই? এর থেকে বোঝা যায় ইসলামের ইতিহাস অনেক গৌরবোজ্জ্বল আর এই অর্থে সুপিরিয়র, শ্রেষ্ঠ যে সে দারিদ্র্য দূর করতে সক্ষম হয়েছিল।

কিন্তু এই দাবি পুরোপুরিভাবে পশ্চিমা বিশ্ব এখনো করতে পারবে না। এইদিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে ইসলাম দারিদ্র্য বিমোচন করতে সক্ষম কি না – এই প্রশ্নটি অযৌক্তিক মনে হয় । কিন্তু এই প্রশ্নটিই মাঝেমধ্যে শুনতে হয়।

আবার একদিক থেকে এই প্রশ্নটি সাধারণ মানুষের মধ্যে আসতে পারে। কেননা, তারা বলে ইসলামে আখিরাতের কথা বলা হয়, এবাদত-ঈমানের কথা বলা হয়, নামাজ, রোজা, হজ্জের কথা বলা হয়, কিছুটা যাকাতের কথা বলা হয়।

তাহলে এখানে দারিদ্র্য বিমোচন করার ওপর কিংবা অর্থনীতির ওপর তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে মনে হয় না। এর থেকে তাদের ধারণা হয়, ইসলামে প্রকৃতপক্ষে দারিদ্র্য বিমোচনের কোনো কথা বলা হয়নি। কিংবা ইসলামের আলোকে হয়তো বা দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে না।

কিন্তু ঐতিহাসিক যে বিচারের কথা প্রথমেই উল্লেখ করেছি সেটা ছাড়াও তারা এটা ভুলে যায় যে, ইসলাম দুনিয়ার কথা বলেছে। ইসলাম বলেছে, “রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা’ – এই কথা তারা ভুলে যায় যে, কুরআনে সূরাতুল বাকারার ২০১ আয়াতে প্রথমত দুনিয়ার কল্যাণের কথা বলা হয়েছে – আখিরাতের কল্যাণের পূর্বে।

আবার ইসলামে কাজের কথা বলা হয়েছে । বলা হয়েছে, তোমরা কাজ কর। আমল কর। কিন্তু তোমরা বসে থাকো – এইকথা ইসলাম বলেনি। আবার ইসলাম ব্যবসার কথা বলেছে। বলেছে সম্পদের ব্যাপক বিতরণের কথা, মানুষের অধিকারের কথা।(দারিদ্র্য বিমোচন)

ইসলামে হকের কথা বলা হয়েছে। ইসলামে হাক্কুল ইবাদ’ অর্থাৎ বান্দার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এগুলোকে যদি আমরা সামনে রাখি তাহলে একথা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, ইসলাম শুধু আখিরাতের কথা বলেছে। শুধু ঈমানের কথা বলেছে।

তবে আমি একথাও বলব যে, সাধারণ মানুষ বা যারা জানে না তাদের পুরো দোষও দেয়া যাবে না। কেননা, তারা জুমার খুতবায়, ঈদের খুতবায়, আলেমদের ওয়াজ মাহফিলের আলোচনায় সাধারণভাবে ইসলামের অর্থনীতির কথা শোনেনি। তারা ‘মুদারাবা’ নামে যে এক ধরনের বিনিয়োগ পদ্ধতি আছে সেই ‘মুদারাবা’র কথা শোনেনি।

মুদারাবা হলো এক পক্ষ কাজ করবে আরেক পক্ষ অর্থ দেবে। আবার তারা মুশারাকা’র কথাও শোনেনি । এটা হলো এক ধরনের শরীকদারী ব্যবসা-বাণিজ্য বা শিল্প যাতে শরীকদের পুঁজি একত্র হয়। আবার ইসতিসনা’ বা ম্যানুফ্যাকচারিং কন্ট্রাক্ট (Manufacturing contract)-এর কথাও শোনেনি।

যদি বলি, আজকের বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের মধ্যে কতজন ‘ইসতিসনা’র কথা শুনেছে তা চিন্তার বিষয় হবে। কিন্তু এইসব কথা তারা খুতবায়, ওয়াজে শোনেনি। ফলে তাদের কি করে দোষ দেয়া যায় যে, কেন তারা এই প্রশ্ন করে, ইসলাম দারিদ্র্য বিমোচন করতে সক্ষম কিনা।

এই প্রসঙ্গে এখানে একথা বলতে হয় যে, ইসলামের লক্ষ্য হলো জনকল্যাণ । ইসলামের শ্রেষ্ঠ আলেমগণও তাঁদের পুস্তকাদিতে এই কল্যাণের কথা বলেছেন। এঁদের মধ্যে ইমাম গাযালী, ইমাম শাতিবি, ইবনুল কাইয়্যেম-এর কথা উল্লেখ করা যায়।

‘মাকাসিদ আল-শরিয়াহ’ বা শরিয়াহর লক্ষ্য হচ্ছে জনকল্যাণ । জনকল্যাণ কি? জনকল্যাণ হচ্ছে যা কিছু ঈমান বা বিশ্বাসের, বুদ্ধিবৃত্তি, প্রাণ বা জীবন, মাল বা অর্থনীতি, ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য কল্যাণকর সেগুলোকে তারা বলেছেন, প্রকৃত জনকল্যাণ।(দারিদ্র্য বিমোচন)

আর যা কিছু এসবকে নষ্ট করে অর্থাৎ জীবনের কল্যাণ, অর্থ বা অর্থনীতি কিংবা মালের কল্যাণের বিরোধী হবে, যা কিছু ঈমানের বিরোধী হবে, যা কিছু মানুষের বুদ্ধি-বিবেক নষ্ট করে সেগুলোকে ‘মাফাসিদ’ বা অকল্যাণ বলে গণ্য করা হবে। (দ্রষ্টব্য: ইমাম গাযালী, আল-মুসতাসফা, ১ম খণ্ড; ইবনুল কাইয়্যেম, ই’লাম আল-মুয়াক্কিয়িন, তৃতীয় খণ্ড)।

আবার সহজ করে বলতে গেলে ইসলামের লক্ষ্য হচ্ছে জনকল্যাণ। আমরা লক্ষ্য করেছি, আধুনিক যুগে যারা ইসলামী অর্থনীতি নিয়ে লিখেছেন, যেমন ড. ওমর চাপরা, ড. ফাহিম খান, ড. মনওয়ার ইকবাল, প্রফেসর খুরশীদ আহমদ, ড. তরিকুল্লাহ খান, ড. নাজাতুল্লাহ সিদ্দিকী, ড. মনজের কাহাফসহ অন্যান্য বড় বড় ইসলামী অর্থনীতিবিদের কথা যদি বলি তাহলে দেখবো তারা যে ইসলামী অর্থনীতির দার্শনিক ভিত্তি খাড়া করেছেন তার মধ্যে একটি হচ্ছে আদল বা জাস্টিস।

তারা কুরআন বিশ্লেষণ করে বলেছেন, কুরআনে প্রায় একশ’ আয়াত আছে যেখানে আদল, জাস্টিস, ইনসাফ বা ন্যায়বিচারের কথা বলা হয়েছে । আবার একশ’ আয়াত আছে যেখানে জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ তারা বোঝাতে চাচ্ছেন মোটামুটি প্রায় দু’শ’ আয়াতে ইনসাফ করার কথা বলা হয়েছে।

তারা বলেছেন, ইনসাফ করার মূল তাৎপর্য হচ্ছে মানুষের প্রয়োজনকে মেটাতে হবে। ইংরেজিতে তারা বলেছেন Need fulfillment করতে হবে। তার মানে এই দাঁড়ায় যে, ইসলামী শরীয়তের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের কল্যাণ (Welfare)।

আবার ইসলামী শরীয়তের যে দর্শন, অর্থনীতির যে দর্শন সেখানেও রয়েছে জাস্টিস। আর জাস্টিসের অন্যতম তাৎপর্য হচ্ছে প্রয়োজন মেটানো।

জাস্টিসের এছাড়াও অনেক তাৎপর্য আছে। কাজেই যেই অর্থনীতির দর্শনে রয়েছে নিড ফুলফিলমেন্ট বা প্রয়োজন পূরণ করা, তাহলে এটা কি করে বিশ্বাস করা যায় যে, সেই অর্থনীতি দারিদ্র্য বিমোচন করতে চায় না, তা দূর করার কর্মকৌশল দেবে না?

এখন প্রশ্ন হলো, ইসলামী অর্থনীতি দারিদ্র্যতা দূর করার জন্য কি পদ্ধতি গ্রহণ করেছে? কি কৌশল (Strategy) গ্রহণ করেছে? অর্থনীতিতে এভাবেই ইসলাম তার কৌশল ও কর্মপদ্ধতিকে সাজিয়েছে যে, মানুষ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ভোগ করবে – এটা হবে শরীয়তের সীমার মধ্যে।

সে রোজগার করবে। তার সম্পত্তির ওপর তার অধিকার রয়েছে এবং থাকবে। ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক যে মালিকানা হয় তা তার থাকবে। সে স্বাধীনভাবেই ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্প গড়তে পারবে।

এমনভাবে যদি অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন করা যায় বা সাজানো যায় তাহলে দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা হবে। তবে কিছুটা সময় অবশ্য লাগবেই । এর সবকিছু নির্ভর করে যদি সরকার ইসলামী সরকার হয় কিংবা কমিটেড হয় এবং জনগণ তা চায় কি-না।(দারিদ্র্য বিমোচন)

আর সরকার যদি ইসলামিক না হয় কিংবা ইসলামের প্রতি কমিটেড বা আগ্রহী না হয় বা তার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বা অঙ্গীকারাবদ্ধ না হয় অথবা জনগণ যদি এ ব্যাপারে আগ্রহী না হয় তাহলে তো ইসলামের যে কর্মসূচি তা কার্যকর হবে না।

এক ব্যক্তি যদি পরাধীন হয়, স্বাধীন না হয় তাহলে তার মধ্যে প্রতিভার স্ফূরণ হয় না। সুতরাং যে অর্থনীতি মৌলিকভাবে স্বাধীন নয় সেখানে অর্থনৈতিক উদ্যোগ বেশি হবে না, প্রবৃদ্ধি (Growth) বেশি হবে না।

কিন্তু যেহেতু ইসলাম ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শরিয়াহর সীমার মধ্যে মানুষকে স্বাধীনতা দিয়েছে ফলে তা যদি কার্যকর করা যায় তাহলে এখানে ব্যক্তির বিকাশ বা স্ফূরণ পূরণ হবে।

অর্থনীতির বিকাশ হবে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই অধিকাংশ লোক নিজেদের রোজগারের ব্যবস্থা নিজেরা করে নেবে। আর এটাও স্বাভাবিক, যে কোনো অর্থনীতিতে মানুষ নিজেরা নিজেদের আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করে থাকে।

একথা সত্যি যে, ইসলামী অর্থনীতিতে এমনভাবে স্ট্রাকচার করা হবে যাতে মানুষ নিজেরাই তাদের আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করতে পারে। এই প্রসঙ্গটি আমরা একটু পরেই আলোচনা করব।

তারপরও যারা কোনো কারণে রোজগার কিংবা প্রয়োজনীয় আয় করতে পারবে না তাদের দায়িত্ব ইসলামী ব্যবস্থায় পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনদের ওপর বর্তাবে। আবার তারাও যদি সে দায়িত্ব পালন করতে না পারে তাহলে সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির দায়িত্ব পড়বে রাষ্ট্রের ওপর।

এখানে একটা পার্থক্য রয়েছে – ইসলাম যেটাকে ওয়েলফেয়ার স্টেট বা কল্যাণ রাষ্ট্র বলেছে, এর সাথে পাশ্চাত্যের কল্যাণ রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পাশ্চাত্যে ওয়েলফেয়ার রাষ্ট্রে (যেমন সুইডেন) যদি কোনো লোক নিজে তার ব্যবস্থা করতে না পারে তাহলে তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপর চলে যায়।

এরফলে সেখানে একটা খারাপ দিক দেখা দেয় – তা হলো রাষ্ট্রের ওপর অনেক বেশি বোঝা বাড়ে। আর রাষ্ট্রের ওপর যদি বোঝা বেড়ে যায় তাহলে রাষ্ট্রকে সেটা মোকাবিলা করার জন্য জনগণের ওপর বেশি ট্যাক্স বসাতে হয়।

দারিদ্র্য বিমোচন : ইসলামের কৌশল

দারিদ্র্য বিমোচন : ইসলামের কৌশল
দারিদ্র্য বিমোচন : ইসলামের কৌশল

রাষ্ট্রকে অনেক বেশি ঋণ (Borrow) করতে হয়। আর ঋণ নিলে পাশ্চাত্যের সিস্টেমে সুদ দিতে হয় । কাজেই দেখা যায়, বাধ্য হয়ে ঋণ নিতে হয়, তার ওপর সুদও দিতে হয়। অথবা ট্যাক্স করতে হয়।(দারিদ্র্য বিমোচন)

না হলে দু’টোই করতে হয় । যার ফলে কিছুদিন এভাবে চলে । কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে (long-term ) একটা পর্যায়ে যাওয়ার পর এটা আর চলে না, স্থবির হয়ে যায়। এটা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।

এ জন্য পাশ্চাত্যের ওয়েলফেয়ার ইকোনমি বা জনকল্যাণ রাষ্ট্রগুলো ক্রমেই রিট্রিট করছে। ক্রমেই তারা পিছিয়ে আসছে জনকল্যাণমূলক প্রোগ্রাম থেকে। এগুলোকে তারা কাট-ছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে।

কিন্তু ইসলাম এই বিষয়টিকে এভাবে মোকাবিলা করছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি নিজে আয়- রোজগার করতে না পারে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবেই তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপর পড়বে না; বরং তা তার পরিবারের ওপর পড়বে। তার ছেলের, পিতা বা ভাইয়ের ওপর পড়বে।(দারিদ্র্য বিমোচন)

কিংবা অন্য কোনো আত্মীয়ের ওপর পড়বে। আর রাষ্ট্র এটা দেখবে যে, তারা এ দায়িত্ব পালন করছে। এখানে যদি কেউ বেআইনি কাজ করে তাহলে তার জন্য রাষ্ট্র তাকে শাস্তি দিতে পারে, তাকে বাধ্য করতে পারবে।

এর জন্য তার ওপর আইনগত বাধ্যবাধকতা (Obligation) হবে। কিন্তু এ সবকিছু করার মতো তার যদি কেউ না থাকে তা হলে কেবলমাত্র তখনই তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপরে পড়বে।

কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, পাশ্চাত্যের ওয়েলফেয়ার সিস্টেমে রাষ্ট্রের ওপর যে বিরাট দায়িত্ব চলে আসে তার তুলনায় ইসলামের ওয়েলফেয়ার রাষ্ট্রে দায়িত্ব কম আসে। যার ফলে ইসলামের ওয়েলফেয়ার রাষ্ট্র More sustain- able, এটা বেশি কার্যকর।

এটাকে কার্যকর করাও সম্ভব। যেটা পাশ্চাত্য দীর্ঘমেয়াদে সম্ভব হয় না বলেই সেখানে ওয়েলফেয়ার সিস্টেম ধসে (Collapse) পড়ছে । নর্থ ইউরোপ, বৃটেন, আমেরিকাসহ বিভিন্ন জায়গায় এই ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। যার ফলে তারা আবার পুরোনো ক্যাপিটালিজম সিস্টেমে ফিরে যাচ্ছে কিংবা যেতে বাধ্য হচ্ছে।

এই ওয়েলফেয়ার সিস্টেম যেটার কথা ইসলাম বলছে তার মধ্যে যাকাত একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইসলামে দারিদ্র্য বিমোচনের যে কর্মসূচি তার মধ্য যাকাত একটা ভূমিকা পালন করবে। সেখানে রাষ্ট্র যাকাত আদায় করবে।

কি পরিমাণ যাকাত আমাদের দেশে আদায় হতে পারে তার একটা হিসাব কিছুদিন আগে আমরা করে দেখেছি। প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা যাকাত আদায় করা সম্ভব (২০০২ সালের হিসাব)। এটা এক বছরের কথা বলা হয়েছে। এখানে খুব কমই হিসাব করা হয়েছে।

এর পরিমাণ আরো বেশি এমনকি পাঁচ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আমরা কম করে ২৪০০ কোটি টাকা হিসাব করলেও যদি এই টাকা সত্যিই রাষ্ট্র আদায় করে এবং এটা যদি শুধুমাত্র দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যবহার করা হয় তাহলে এটা দারিদ্র্য বিমোচনে বিরাট ভূমিকা রাখবে।

কিন্তু যদি ধরি তা রাষ্ট্র আদায় করবে না, ব্যক্তি বা সমাজ করবে আর সেটাও যদি আমরা মেনে নেই তাহলে যে ২৪০০ কোটি টাকা আদায় হবে তা গরীবদের মাঝে বণ্টন (Transfer) হবে, ধনীদের কাছ থেকে।

এটা যদি সিস্টেমেটিক্যালি করা যায়, সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে করা যায় এবং এমনভাবে করা যায় যেটা ইসলামের লক্ষ্য, এমনভাবে দেয়া হবে যে গ্রহীতা ব্যক্তি জীবনের মতো স্বাবলম্বী হয়ে যায়। হযরত ওমর (রা.)-এর বিখ্যাত বক্তব্য হলোঃ তুমি এমনভাবে দাও যাতে সে ধনী হয়ে যায়।

অর্থাৎ তাকে যেন আর কোনদিন যাকাত না নিতে হয়। যাতে তার কোনো না কোনো কাজের ব্যবস্থা হয়ে যায়। একটা Self-employment হয়। তার যেন একটা ব্যক্তিগত আয়- রোজগারের ব্যবস্থা হয়ে যায়। কাজেই যাকাতের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র করুক বা সমাজ করুক এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।

যাকাত ব্যবস্থার সাথে সাথে ‘ওয়াকফ’ তার ভূমিকা পালন করবে। আমাদের ওয়াকফ সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গেছে । আমরা এটাকে নষ্ট করে ফেলেছি। কিন্তু আমরা জানি যে, ইসলামের ইতিহাসে ওয়াকফ’র বিরাট ভূমিকা ছিল, যেটা বর্তমানে নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা তা অস্বীকার করতে পারি না ৷ সেটাকে আমাদের পুনরুদ্ধার (revive) করতে হবে।

এক সময় ইসলামে যে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে তা মূলত একদিকে যাকাত আর একদিকে ওয়াকফ’র কারণ । এমন সময় গেছে যখন সবাই চাইত কিছু না কিছু সম্পত্তি আল্লাহর পথে দিতে । সেটা দিতো বলেই সেই সময় সকল স্কুল ফ্রি চালানো সম্ভব হতো।

ওয়াকফ’র কারণে সকল ইউনিভার্সিটি ফ্রি চালানো হতো। অর্থাৎ গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাই । ওয়াকফ’র কারণেই সকল চিকিৎসা ফ্রি চালানো হতো। পথিক কিংবা আগন্তুকদের জন্য যে সরাইখানার ব্যবস্থা ছিল তাও ওয়াকফ সম্পত্তির মাধ্যমেই ফ্রি চালানো সম্ভব হতো।(দারিদ্র্য বিমোচন)

তেমনিভাবে ওয়াকফকে একটি লম্বা সময় ধরে পুনর্গঠন করার কথা জনগণকে বোঝানো দরকার। জনগণ যদি এটা বুঝতে পারে এবং যদি সত্যিই আগের দিনের লোকদের মতো যেভাবে তারা আল্লাহর পথে দান করত, সেভাবে প্রত্যেক ধনীই যদি ওয়াকফ করে যান তাহলে ব্যাপকভাবে সমাজে দারিদ্র্য দূরীকরণে, উন্নয়নে এই ব্যবস্থা একটা ভূমিকা রাখতে পারে।

ড. ওমর চাপরা তার বইতে উল্লেখ করেছেন, একসময় গেছে যখন দশ থেকে পনের ভাগ পর্যন্ত মানুষের সম্পত্তি ওয়াকফতে চলে গিয়েছিল যেগুলোর মাধ্যমে অর্জিত আয় সম্পূর্ণ জনকল্যাণে, মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যবহার করা হতো।

আমরা জানি, সোভিয়েত ইউনিয়নে ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য ক্ষমতায় যাবার পরপরই সমস্ত ওয়াকফ প্রপার্টি বাতিল করে দেয়া হয়। এর একটা অন্যতম কারণ হলো যাতে করে সোভিয়েত ইউনিয়নে ইসলামী শিক্ষা বন্ধ হতে পারে। সেখানে স্কুলগুলো চলতো এসব ওয়াকফ প্রপার্টির মাধ্যমে।

(দ্রষ্টব্য: Islam in the Soviet Union, Alexander Bennigsen )।

যা-ই হোক, দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে যাকাতের ভূমিকা থাকৰে যা আগেই উল্লেখ করেছি। সেই সাথে ওয়াকফ তার ভূমিকা পালন করবে। নতুনভাবে, নতুন করে আমাদের ওয়াকফ চালু করার ব্যবস্থা করতে হবে।

সেই সাথে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকেও তার যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা জানি, ইসলাম ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে নতুনভাবে সংগঠিত করার কথা বলে । এটা সুদভিত্তিক হবে না। এটা মুদারাবাভিত্তিক, মুশারাকাভিত্তিক হবে। মুরাবাহাভিত্তিক হবে।

ব্যবসাভিত্তিক হবে। এখানে শোষণের সুযোগ কম থাকবে। যদিও একথা এখনো পুরোপুরি বলা সম্ভব নয় যে, ইসলামী ব্যাংকিং তার যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারছে। আর একথা দাবি এখন করাও সম্ভব নয়। ইসলামের সামাজিক অর্থনৈতিক লক্ষ্য পূরণে ইসলামী ব্যাংকিংকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

ইসলামী অর্থনীতিবিদগণ বলেন, ইসলাম যে সামাজিক বিপ্লব চায়, অর্থনৈতিক বিপ্লব বা পরিবর্তন চায়, সেই পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে।

কেননা, এই কাজের জন্য অর্থ লাগবে এবং অর্থ আদান-প্রদান হবে ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে । সুতরাং ব্যাংককেই এই ভূমিকা পালন করতে হবে।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে গেলে আমাদেরকে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ওপর যেসব থিওরিটিক্যাল কাজ হয়েছে, তাত্ত্বিক কাজ হয়েছে এবং তার লক্ষ্য সম্পর্কে যেসব কাজ হয়েছে, তার পলিসি সম্পর্কে যে সমস্ত কাজ হয়েছে সেগুলোকে আমাদের পড়তে হবে এবং জানতে হবে।

তেমনিভাবে, ইসলামী রাষ্ট্র তার রাজস্ব নীতিকে (Fiscal Policy) কাজে লাগাবে। রাজস্ব নীতিতে আয় ও ব্যয়ের নীতিগুলোকে পুরোপুরি কাজে লাগাবে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী রাষ্ট্রে ব্যয়ের নীতির ব্যাপক পরিবর্তন হবে।

যেমন – ঢাকা শহরে যারা রাস্তা-ঘাটে থাকে (এর মধ্যে নারীর সংখ্যা অর্ধেক) তাদের জন্য কি আমাদের বাজেট থেকে এক-দুই বছর ৫০০ কোটি টাকা করে বের করতে পারি না? (দারিদ্র্য বিমোচন)

আমরা কি বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে এদেরকে আবার শহর থেকে যার যার গ্রামে নিয়ে গিয়ে পুনর্বাসন করে দিতে পারি না? কিন্তু এর জন্য দরকার আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে Determind Policy।

এখানে ইসলামের যে ব্যয়নীতি (Expenditure Policy) তার একটা বিরাট ভূমিকা আছে। কিন্তু আমরা সেগুলো করতে ব্যর্থ হচ্ছি, সেগুলো আমাদের করতে হবে। তেমনিভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে মনিটরিং পলিসি এটাতে ইসলামের আলোকে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ।

কারণ, সেন্ট্রাল ব্যাংক প্রতিবছরই নতুন অর্থ বাজারে ছাড়ে ৫-১০ ভাগ, এটা একটা ক্রিয়েটেড মানি। এতে নুতন অর্থের সৃষ্টি হয়। এই অর্থ যদি জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা যায়। সেন্ট্রাল ব্যাংকের এই নতুন অর্থের জন্য যেহেতু কোনো খরচ করতে হচ্ছে না, এর জন্য তাকে কোনো জিনিস বেচতে হচ্ছে না।

এটা একদমই আকাশ থেকে পাওয়া অর্থই বলা যায়। যেটা নোট প্রিন্টের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ব্যাংক প্রতিবছর বাজারে ছাড়ে। সেই টাকা যদি সরকারকে দেয়ার সময় বলে এটা শুধুমাত্র জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করতে হবে, দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যয় করতে হবে তাহলে এর মাধ্যমে সামগ্রিক পরিবর্তন সম্ভব।

এ টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে কর্জ বা বিনা সুদে দিতে পারে। এ ব্যাপারে ড. ওমর চাপরা তার Towards a just Monetary System গ্রন্থে আলোচনা করেছেন। এর থেকে বোঝা যায়, ইসলামী অর্থনীতিতে ব্যয়নীতি, মুদ্রানীতির একটা বিরাট ভূমিকা থাকবে।

এসব পলিসি ব্যবহার করে আমাদের সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে, যা দারিদ্র্য নিরসনে সাহায্য করবে। এরপর যে কথা আমি আগেই বলেছিলাম যে, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখা যায় ইসলামী সমাজে কঠিন দারিদ্র্য কম ছিল। যাকে আমরা Hardcore poverty বলি তা কম ছিল বা ছিল না।

দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ তারা গড়তে পেরেছিল। একেবারেই শুরু থেকে ইসলাম সিস্টেমটিকে আস্তে আস্তে গড়ে তোলে যদিও শুরুতে কিছু দারিদ্র্য ছিলই। কিন্তু উমাইয়া, আব্বাসীয়দের সময় থেকে তা কার্যত সম্পূর্ণ দূর হয়ে যায়।

আর একথাও আগেই উল্লেখ করেছি যে, ইসলামে এমন এক সময় গেছে যখন যাকাত নেয়ার লোক পাওয়া যায়নি। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো আজকেও এ দাবি করতে পারবে না যে, সাহায্য নেবার লোক তাদের সমাজে নেই।

যেই সরকারই থাকুক সেই সরকার যদি ইসলামকে অগ্রাধিকার দেয় এবং কমিটেড হয় আর সেই সাথে জনগণ যদি তা গ্রহণ করতে রাজি হয় তাহলে আমার মতে, ইসলামের চেয়ে দারিদ্র্য বিমোচনের আর কোনো ভালো আদর্শ হতে পারে না।

আরো পড়ুন: ওশরের বিধান

Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
Previous Articleওশরের বিধান
Next Article ওয়াকফ: প্রয়োজন নতুন আন্দোলন
iBankHub Editor
  • Website

Related Posts

Education

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023
Education

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023
Education

মাধ্যমিক শিক্ষকগণ বিষয় ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করবেন যেভাবে

October 25, 2023
View 1 Comment

1 Comment

  1. Pingback: এসএসসি পরীক্ষা ফরম ফিলাপ ২০২৩ বিজ্ঞপ্তি - iBankHub

Leave A Reply Cancel Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Top Posts

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Categories
  • AB Bank Bangladesh (105)
  • Apps (11)
  • Banking Solution (12)
  • Education (28)
  • Palli Sanchay Bank (490)
  • Savings (9)
  • Update (16)
Stay In Touch
  • Facebook
  • YouTube
  • TikTok
  • WhatsApp
  • Twitter
  • Instagram
Most Popular

এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপ AB Direct Internet Banking Easy to Use

January 30, 2023

গণিত বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা 2021 Free Math Training

October 21, 2023

ইংরেজি বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ Free English Training 2023 NCF

October 24, 2023
Our Picks

ইসলামী অর্থনৈতিক চিন্তার ক’জন দিশারী সম্পর্কে জানুন

October 29, 2023

ইসলামী অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে ইসলামী ব্যাংক

October 29, 2023

একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় নির্বাচনী পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যাবে

October 27, 2023

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
© 2025 iBankHub. Designed by Creative IT.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.